সিনেমা হলে ‘গাঙ্গু’ ঝড়

সবকিছু সামাল দিয়ে বক্স অফিসে রীতিমতো ঝড় তুলেছে বানসালির এই ছবিটিকোলাজ: আমিনুল ইসলাম

সঞ্জয় লীলা বানসালির ‘গাঙ্গুবাঈ কাঠিয়াবাড়ি’ ছবিটিকে ঘিরে প্রত্যাশা ছিল তুঙ্গে। সেই প্রত্যাশা অনেকটাই মেটাতে পেরেছেন এই পরিচালক। এই মুহূর্তে ‘গাঙ্গু’ ঝড়ে কুপোকাত সিনেমাপ্রেমীরা।

‘গাঙ্গুবাঈ কাঠিয়াবাড়ি’ ছবিটিকে ঘিরে শুরু থেকেই নানান বিতর্ক রয়েছে। কখনো এই ছবির কাস্টিং নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষত ‘গাঙ্গুবাঈ’-র ভূমিকায় আলিয়া কতটা যোগ্য, তা নিয়ে অনেকের সন্দেহ ছিল। আবার কখনো ‘গাঙ্গুবাঈ কাঠিয়াবাড়ি’ জড়িয়েছে আইনি ঝামেলায়। তবে সবকিছু সামাল দিয়ে বক্স অফিসে রীতিমতো ঝড় তুলেছে বানসালির এই ছবিটি। ‘গাঙ্গুবাঈ কাঠিয়াবাড়ি’ ছবিটির পরিচালনগত ত্রুটি নিয়ে কিছু প্রশ্ন থাকলেও আলিয়ার অভিনয় সবাইকে মুগ্ধ করেছে। বিটাউন তারকারাও মুক্ত কণ্ঠে তাঁর প্রশংসা করছেন।

‘গাঙ্গুবাঈ কাঠিয়াবাড়ি’ ছবির সবচেয়ে বড় সম্পদ অভিনয়

গত সপ্তাহান্তে এই ছবিটি নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। নারীকেন্দ্রিক ছবি হিসেবে আলিয়ার এই ছবিটি প্রথম সপ্তাহান্তে দ্বিতীয় সেরা আয়কারী ছবির স্থান পেয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রথম স্থানে আছে কঙ্গনা রনৌতের ‘মণিকর্ণিকা : দ্য কুইন অব ঝাঁসি’ ছবিটি। এই ছবি প্রথম সপ্তাহান্তে ব্যবসা করেছিল ৪১ দশমিক ৩৫ কোটি রুপি, আর ‘গাঙ্গুবাঈ কাঠিয়াবাড়ি’-র আয় ৩৯ দশমিক ১২ কোটি। এদিকে ৩৮ দশমিক ১৫ কোটি রুপি আয় করে তৃতীয় স্থানে আছে আবার কঙ্গনার ছবি ‘তনু ওয়েডস মনু রিটার্নস’। আর চতুর্থ স্থানের জন্য জোর টক্কর হয়েছে আলিয়া আর বিদ্যা বালানের মধ্যে। আলিয়া অভিনীত ‘রাজি’ ছবিটি ব্যবসা করেছিল ৩২ দশমিক ৯৪ কোটি রুপি। আর ঠিক তার পেছনে ছিল বিদ্যার ‘দ্য ডার্টি পিকচার’ ছবিটি।

চলচ্চিত্র ব্যবসা বিশ্লেষণকারীদের মতে আলিয়ার ‘গাঙ্গুবাঈ কাঠিয়াবাড়ি’ ছবিটি বক্স অফিসে আরও বড় ঝড় তুলতে পারত।

এই ছবিটি প্রথম সপ্তাহান্তে ব্যবসা করেছিল ৩২ দশমিক ৭ কোটি রুপি। উল্লেখ্য অন্য সব ছবিই করোনাকালের আগে। সে সময় হিসাব–নিকাশ অন্য রকম ছিল।

‘গাঙ্গুবাঈ কাঠিয়াবাড়ি’ গত শুক্রবার অর্থাৎ মুক্তির প্রথম দিন ১০ দশমিক ৫ কোটি রুপি ব্যবসা করেছিল। গত শনিবার বক্স অফিস থেকে আয় করেছিল ১৩ দশমিক ৩২ কোটি রুপি, আর রোববারের আয় ১৫ দশমিক ৩ কোটি।

গাঙ্গুবাঈকে ঘিরে এ ছবির কাহিনি

চলচ্চিত্র ব্যবসা বিশ্লেষণকারীদের মতে আলিয়ার ‘গাঙ্গুবাঈ কাঠিয়াবাড়ি’ ছবিটি বক্স অফিসে আরও বড় ঝড় তুলতে পারত। এ ক্ষেত্রে করোনা বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, করোনার পর সবে প্রেক্ষাগৃহ খুলেছে। আর প্রেক্ষাগৃহে এখনো কোভিড–সংক্রান্ত অনেক বিধিনিষেধ জারি রয়েছে। অনেকে এখনো প্রেক্ষাগৃহে পা রাখতে খুব একটা সাহস পাচ্ছেন না। কারণ, করোনার উৎপাত এখনো দেশ থেকে পুরোপুরি নির্মূল হয়নি।

মুম্বাই, দিল্লির মতো কিছু বড় শহরে এখনো ৫০ শতাংশ আসনক্ষমতায় হল খুলেছে। এমনকি দিল্লিতে এখনো রাতের শো শুরু হয়নি। তাই আগের মতো স্বাভাবিক জীবনযাত্রা থাকলে আলিয়ার ‘গাঙ্গুবাঈ কাঠিয়াবাড়ি’ বক্স অফিসে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করত, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

শুটিং সমাপ্তির দিনে আলিয়া ভাট ও সঞ্জয় লিলা বানসালি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

সঞ্জয় লীলা বানসালি পরিচালিত ‘গাঙ্গুবাঈ কাঠিয়াবাড়ি’ ছবিটি মাফিয়া কুইন গাঙ্গুবাঈয়ের জীবনের আধারে নির্মিত। গাঙ্গুবাঈ একসময় মুম্বাইয়ের যৌনপল্লি কামাতিপুরার যৌনকর্মী ছিলেন। যৌনকর্মীদের অধিকার বোধের জন্য তিনি সমাজের সঙ্গে লড়াই করেছিলেন। বানসালির এই ছবিতে আলিয়া ছাড়া আছেন অজয় দেবগন, সীমা পাহওয়া, শান্তনু মহেশ্বরী, জিম সরাভসহ অনেকে।