সংসার ভাঙতে চেয়েছিলেন তাহিরা!
‘সবার ওপরে মানুষ সত্য, তাহার ওপরে নাই।’ মধ্যযুগের কবি বড়ু চণ্ডীদাসের এই বাণী সবার জানা। কিন্তু বলিউড তারকা আয়ুষ্মান খুরানার জন্য এই বাক্য একটু অন্য রকম, ‘সবার ওপরে পরিবার সত্য, তাহার ওপরে নাই।’ বলিউডের সূত্রে এক আর এক দুই হয় না, মাঝেমধ্যে একই থেকে যায়; আবার মাঝেমধ্যে হয় শূন্য। শুধু বলিউডপাড়ায়ই নয়, বিনোদনজগতের অলিখিত নিয়ম, প্রেমের পর আসে ব্রেকআপ আর বিয়ের পর ডিভোর্স। কিন্তু সেসব নিয়ম ভেঙে দুই সন্তান নিয়ে দীর্ঘদিন একসঙ্গে সুখের সংসার করছেন আয়ুষ্মান খুরানা আর তাহিরা কাশ্যপ।
অবশ্য গত বছর কোনো ঘোষণা ছাড়াই সুখের সংসারে ‘তৃতীয় ব্যক্তি’র মতো হাজির হয়েছিল তাহিরার ক্যানসার। সেই কঠিন সময়ে আয়ুষ্মানের ভালোবাসাই জিতেছে, ক্যানসারকে হারিয়ে জয়ী সেনাপতির মতো ফিরে এসেছেন তাহিরা।
বলিউড জানে, আয়ুষ্মান খুরানা তাঁর স্ত্রী আর পরিবারের প্রতি কতটা মনোযোগী। স্ত্রী, পরিবারের চেয়ে আর কিছুই বড় হতে পারে না—এটা আর কার জন্য সত্যি জানা নেই। তবে সত্যি আয়ুষ্মান খুরানার জন্য। তিনিই বোধ হয় বলিউডের খুব অল্প নায়কদের মধ্যে একজন, যাঁর সঙ্গে কোনো নারীকে জড়িয়ে গুজব বা ‘ভুয়া খবর’ পর্যন্ত রটেনি। কিন্তু ই টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্ত্রী তাহিরা কাশ্যপ যা জানালেন, তা শুনে যে কারও চোখ কপালে উঠতে পারে। আয়ুষ্মান খুরানার সঙ্গে নাকি সংসার ভাঙতে চেয়েছিলেন তাহিরা!
সাধারণ মানুষের মতো সেলিব্রিটিদের সংসারে কত গল্পই থাকে। যার বেশির ভাগই দরজা–জানলার ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে পড়ে, জেনে যায় পুরো বিশ্ব। কিন্তু তাহিরা যা জানালেন, তা জানত না কেউ। তাঁদের সংসারে নাকি এমন সময় এসেছিল, যখন তাহিরা এই সুন্দর সম্পর্ক চিরতরে শেষ করতে চেয়েছিলেন।
হ্যাঁ, ঠিকই পড়ছেন। তাহিরা সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে এই তথ্য নিজেই নিশ্চিত করেছেন। সে অনেক আগের কথা। ২০১২ সাল। বিয়ের মাত্র এক বছর হয়েছে। অন্তঃসত্ত্বা তাহিরা কাশ্যপ ঘরে বসে টিভিতে দেখতেন, স্বামী আয়ুষ্মান খুরানা সুন্দরী নারীদের চুমু খান। অন্তঃসত্ত্বাকালে এমনিতেই হরমোনের অনেক রকম ওঠানামা হয়। তাঁর ওপর ঘরে বসে বসে মোটা হয়ে নাকি ‘তিমি মাছের’ মতো হয়ে গিয়েছিলেন। সব মিলিয়ে আয়ুষ্মানের নায়িকাকে চুমু খাওয়া শুধু তাঁকে বিরক্তই করেনি, তাঁর মনে ভয়াবহ জটিলতা তৈরি করেছিল। তবে তাহিরা স্বীকার করেছেন, তখন তাঁদের বয়স কম ছিল। তাই পেশাদারির এই বিষয়গুলোর সঙ্গে মানিয়ে নিতে অসুবিধা হচ্ছিল। একসময় তাহিরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, বিয়েটা আর রাখবেন না।
তবে এটা ঠিক ধৈর্য ধরলে দেখা যায়, সময় সর্বরোগের মহৌষধের মতো অনেক সমস্যার সমাধান করছে। কিন্তু সেই ধৈর্য আর সময় কার থাকে? তবে অন্য কারও না থাকলেও আয়ুষ্মান খুরানা আর তাহিরা কাশ্যপ সময়কে সময় নিয়েছেন। এখন তাঁরা বোঝেন, সেই সময়ের জন্য কেউ দায়ী ছিল না। সেই সময়টাকে ধন্যবাদ জানাতেও ভোলেননি তাহিরা। এ জন্যই নাকি তাঁদের নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া বেড়েছে।
তাহিরা এ সময় আয়ুষ্মানকে ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি। বলেছেন, ‘শুধু তখন নয়, আরও অনেকবার আমি হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু একবারের জন্যও আয়ুষ্মান আমাকে ছেড়ে যাওয়ার কথা কল্পনা করেনি। ওর জন্যই সংসারটা এত সুন্দরভাবে টিকে আছে। আর আমরা আমাদের সব থেকে সুন্দর সময় পার করতে পারছি।’
তাহিরা কাশ্যপ একজন নির্মাতা। শিগগিরই তানুজ গার্গ আর অতুল কাশবেকারের সঙ্গে যৌথভাবে পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবেন। পাঁচজন নারীর সংগ্রামকে নিয়ে নির্মিত হবে এই চলচ্চিত্র। ভালো কিছুই হবে বলে আশা করছে বলিউড।