শ্রীদেবী হতে চান না 'জুনিয়র শ্রীদেবী'
১৯৮৯ সালে ‘চালবাজ’ ছবিতে ‘মম’ শ্রীদেবীকে প্রথম দ্বৈত চরিত্রে অভিনয় করেন। বড় পর্দায় শ্রীদেবীর সেই অভিনয় ৩০ বছর পরও চোখে লেগে আছে সিনেমাপ্রেমীদের। দুই চরিত্রের একজন ভদ্র-নম্র অঞ্জু আর অন্যজন খুব দুরন্ত মঞ্জু। একেবারে বিপরীতধর্মী এই দুই চরিত্রে অভিনয় করে শ্রীদেবী ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডে সেরা নায়িকার পুরস্কার পান। এর দুই বছর পর ১৯৯১ সালের ‘লামহে’ ছবিতেও দ্বৈত চরিত্রে দেখা যায় শ্রীদেবীকে। এবার এই ছবিতে একই সঙ্গে মা আর মেয়ের চরিত্র। পরের বছর ‘খুদা গাওয়া’ ছবিতে শ্রীদেবী আবারও এক আফগান মা আর মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। এবার শ্রীদেবীর মেয়ে জাহ্নবী কাপুরও হাঁটবেন মায়ের পথে।
দ্বিতীয় ছবিতেই প্রথম দ্বৈত চরিত্রে দেখা যাবে জাহ্নবী কাপুরকে। এই তরুণ তারকার দর্শকদের জন্য এটা একটা বড় খবর। পরবর্তী ছবি ‘রুহ-আফজা’তেই জাহ্নবী কাপুরকে দর্শক দেখতে পাবেন একটি নয়, দুটি চরিত্রে। এ যেন একের ভেতর দুই!
জাহ্নবী কাপুরের বাবা, বলিউডের বরেণ্য চলচ্চিত্র প্রযোজক বনি কাপুরকে নাকি তাঁর বন্ধুরা পরামর্শ দিয়েছেন, এত অল্প বয়সেই জাহ্নবীকে যেন দ্বৈত চরিত্র অভিনয় করতে দেওয়া না হয়। কেননা, রেফারেন্স হিসেবে সবাই টানবে বলিউডের ইতিহাসের অন্যতম সফল ছবি ‘চালবাজ’কে। চুলচেরা বিশ্লেষণ চলবে ‘চালবাজ’ আর ‘রুহ-আফজা’ ছবি দুটিকে নিয়ে। আর আতশি কাচে কোথাও যদি একটু এদিক-ওদিক ধরা পড়ে, তাহলেই জাহ্নবীর ক্যারিয়ার নিয়ে টানাটানি শুরু হয়ে যাবে। কিংবদন্তি মায়ের সন্তান হওয়া যে শুধু দারুণ ব্যাপার, তা-ই না। মুদ্রার অপর পিঠে প্রতিটা মুহূর্তে নিজেকে প্রমাণ করার চ্যালেঞ্জও থাকে।
এর আগে ২০১৮ সালে শহীদ কাপুরের ছোট ভাই ঈশান খাট্টারের সঙ্গে ‘ধড়ক’ ছবি দিয়ে অভিনয়ে পা রেখেছেন ‘জুনিয়র শ্রীদেবী’। সেখানে দারুণ অভিনয় করে জয় করে নিয়েছেন ভক্ত, সমালোচক আর সহকর্মীদের মন। সেই সঙ্গে বছরজুড়ে ছিল ঈশান খাট্টারের সঙ্গে তাঁর প্রেমের গুঞ্জন। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ‘হ্যাঁ’ বলেননি, আবার পুরোটা মিথ্যা বলে উড়িয়েও দেননি জাহ্নবী কাপুর। বুদ্ধিমতীর মতো দুষ্টুমিষ্টি হাসি দিয়ে পাশ কাটিয়ে গেছেন। যে হাসির অর্থ হতে পারে ‘হ্যাঁ’, আবার ‘না’!
জাহ্নবী কাপুর তাঁর এই নতুন প্রজেক্ট নিয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত। এই ছবির দুটি চরিত্রের একটা ভূত। আর সেই ভূত হওয়ার জন্য যেন তর সইছে না বলিউডপাড়ায় বেড়ে ওঠা এই নবীন তারকার। জাহ্নবী কাপুরের এক কাছের বন্ধু সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, কাপুর পরিবারে নতুন প্রজন্মে জাহ্নবীই প্রথম, যিনি দ্বৈত চরিত্রে অভিনয় করবেন। এর আগে তাঁর মা শ্রীদেবী ‘চালবাজ’ (১৯৮৯) ও চাচা অনিল কাপুর ‘কিষান কানাইয়া’ (১৯৯০) ছবিতে দ্বৈত চরিত্রে অভিনয় করেছেন। কিন্তু জাহ্নবী তাঁর মাকে মডেল মেনে অনুসরণ করতে রাজি নন। এই চলচ্চিত্রে তিনি নিজের মতো করে অভিনয় করবেন।
যেহেতু মাকে অভিনয়ের মডেল মানছেন না জাহ্নবী, বরং নিজের মতো অভিনয় করেই পর্দায় ছাপ ফেলতে চান; তাই অভিনয়ের ক্ষেত্রে মাকে উদাহরণ হিসেবে টানা ঠিক হবে বলেও জানান ওই মুখপাত্র। জাহ্নবী কাপুর চান নিজস্ব দক্ষতা, ঢং আর আঙ্গিকে নিজের মতো করে পর্দায় হাজির হতে। নিজের স্বাভাবিক ধরন দিয়েই দর্শকদের হৃদয়ের মণিকোঠায় স্থান করে নিতে চান তিনি।
বলিউডের ১৯৬৪ সালের আইকনিক চলচ্চিত্র ‘ভো কুন থি’তে সাধনা শিবদাসানি যেমন দ্বৈত চরিত্র করেছেন এবং একটিতে ভূত হয়েছেন, জাহ্নবীর এই চরিত্রটা অনেকটা সে রকম আর দারুণ মজার। বিনোদ খান্না ও ডিম্পল কাপাডিয়া অভিনীত ‘লেকিন’ (১৯৯১) ছবিতে ডিম্পল হয়েছিলেন ভূত। পুরো চলচ্চিত্রে পর্দায় একবারের জন্যও চোখের পাতা ফেলেননি ডিম্পল কাপাডিয়া। সাংবাদিকদের তখন ডেকে ‘ভূত শিক্ষার প্রথম পাঠ’ দিয়েছিলেন, ‘ভূতেরা কখনো চোখের পাতা ফেলে না!’ এবার নিশ্চয়ই ভূতের সম্পর্কে সেসব জ্ঞান নিয়েই এগিয়ে যাবেন জাহ্নবী কাপুর।