ভারত ছাড়লেন তনুশ্রী
এর আগে আরও একবার ভারত ছেড়েছিলেন ২০০৪ সালের ‘ফেমিনা মিস ইন্ডিয়া ইউনিভার্স’ ও সাবেক বলিউড তারকা তনুশ্রী দত্ত। সেদিন তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছিলেন নিজের নিরাপত্তা আর ভবিষ্যতের কথা ভেবে। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার রাতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে গেলেন বিপ্লবের মুকুট মাথায় নিয়ে, ভারতে ‘হ্যাশট্যাগ মি টু’ আন্দোলনের মশাল জ্বালিয়ে দিয়ে। মুম্বাই ছত্রপতি শিবাজি বিমানবন্দরে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে তোলা ছবি দিয়ে ইনস্টাগ্রামে তনুশ্রী দত্ত লিখেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছি। প্রায় ছয় মাস পরে ফিরছি। পরিবারকে সবচেয়ে বেশি মিস করব।’ কয়েক বছর ধরে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে স্থায়ীভাবে বাস করছেন।
বার্তা সংস্থা আইএএনএসকে তনুশ্রী দত্ত বললেন, ‘আমি এখন ওখানেই থাকি। ছুটিতে মুম্বাই এসেছিলাম। সুতরাং আমাকে ফিরতেই হতো। নানা কারণে এবার ছুটিটা একটু লম্বা হলো। ছয় মাস আগে নিউ জার্সিতে আমার জীবন কেমন ছিল, এখন তা মনেই করতে পারছি না। তবে সবাইকে খুব মিস করব। আমার পুরো পরিবার কিন্তু ভারতেই থাকে।’
প্রায় ছয় মাস আগে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতের মুম্বাইতে তনুশ্রী দত্ত যখন এসেছিলেন, তখন ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি, তাঁর এবারের ভারত সফর এতটা ঘটনাবহুল হবে। এরই মধ্যে বলিউডের শক্তিমান অভিনেতা নানা পাটেকারের ব্যক্তিগত ইমেজের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছেন তনুশ্রী দত্ত। তিনি নানা পাটেকারের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছেন। ভারতের টিভি চ্যানেল নিউজ এইটিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তনুশ্রী দত্ত অভিযোগ করেন, ২০০৯ সালে মুক্তি পাওয়া ‘হর্ন ওকে প্লিজ’ ছবি করতে গিয়ে নানা পাটেকার তাঁকে যৌন হেনস্তা করেন।
নানা পাটেকারের বিরুদ্ধে তাঁর আনা যৌন হয়রানির অভিযোগের মামলাটি এখনো চলমান। তিনি চলে গেলে সেই মামলার কী হবে? তনুশ্রী দত্ত বলেছেন, ‘অনেক বছর আমি ওই ক্ষত নিয়ে কাটিয়েছি। মামলা চলার জন্য আমার শারীরিক উপস্থিতির আর প্রয়োজন নেই। আইনগত ব্যবস্থা যদি নেওয়া হয়, আমি অনুপস্থিত থাকলেও হবে। আমাকেই যদি থাকতে হয়, তাহলে আইনের কাজ কী?’
তাঁর উসকে দেওয়া এ আন্দোলনের ভবিষ্যৎ কী? তিনি বলেন, ‘আজ এটা গরম খবর। হয়তো কয়েক দিন পর এটা হয়ে যাবে বাসি। তবে এটাকে আমি দেখতে চাই একটি বিপ্লব হিসেবে। এটি এমন এক পরিবেশ তৈরি করেছে যে নিপীড়কেরা সচেতন হয়েছে। একজন নারী তাঁদের নিপীড়কের নাম প্রকাশ করতে শিখেছে। এটাই ওই পুরুষদের জন্য একটি বড় শিক্ষা। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা খুব বেশি ঘটবে না, এটাই আমার প্রত্যাশা। সমাজ থেকে এই ধরনের ঘটনাকে মুছে ফেলতে হবে।’
ভারতে হ্যাশট্যাগ মি টু আন্দোলনের সূচনার শতভাগ কৃতিত্ব দেওয়া হয় তনুশ্রী দত্তকে। তবে আইএএনএসকে তিনি বলেন, ‘একজন সাধারণ মানুষের জার্নিকে মিডিয়া হিরোইন বানিয়ে দিয়েছে। আমি মোটেও তেমন কিছু না, বরং আমি একটা মাধ্যম, যার মধ্য দিয়ে সমাজে পরিবর্তন ও সচেতনতার প্রসার হয়েছে।’
এদিকে নানা পাটেকারকে এখন অপ্রত্যাশিত নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এ সময়ের তুমুল জনপ্রিয় কয়েকজন বলিউড তারকা তাঁর সঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছেন। প্রখ্যাত এই অভিনেতার অভিনয়জীবনের ভবিষ্যৎ এখন প্রশ্নের মুখে পড়েছে। চুক্তি হয়েছে, এমন কয়েকটি ছবি থেকে তাঁকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এদিকে তিনি খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হন না। সাংবাদিক, টিভি ক্যামেরা ও সংবাদমাধ্যমকে এড়িয়ে চলছেন।