এবার নানার বিরুদ্ধে তনুশ্রীর মামলা
তনুশ্রী দত্ত গত বৃহস্পতিবার অভিনেতা নানা পাটেকার আর পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রীর আইনজীবীদের পাঠানো আইনি নোটিশ পেয়েছেন। সম্প্রতি এই দুজনের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ এনেছেন তিনি। আইনি নোটিশ পেয়ে তনুশ্রী একটি বিবৃতিতে বলেছেন, ‘দুটি আইনি নোটিশ পেয়েছি আজ (বৃহস্পতিবার)। একটি নানা পাটেকারের কাছ থেকে, অন্যটি বিবেক অগ্নিহোত্রীর কাছ থেকে। এটা হলো ভারতে যৌন হেনস্তা, অপমান ও অবিচারের বিরুদ্ধে কথা বলার পুরস্কার।’
এবার বলিউডের শক্তিমান অভিনেতা নানা পাটেকারের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন ২০০৪ সালের ‘মিস ইন্ডিয়া’ ও একসময়ের বলিউড তারকা তনুশ্রী দত্ত। মুম্বাইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (পশ্চিম) মনোজ কুমার শর্মা পিটিআইকে জানিয়েছেন, নানা পাটেকারের বিরুদ্ধে তনুশ্রী দত্ত অভিযোগ করেছেন। তাঁর অভিযোগ মামলা হিসেবে নথিবদ্ধ করা হয়েছে।
জানা গেছে, গতকাল শনিবার তনুশ্রী দত্ত মুম্বাইয়ের ওশিওয়ারা পুলিশ স্টেশনে এই অভিযোগ করেছেন। এখানে তিনি জনপ্রিয় কোরিওগ্রাফার গণেশ আচার্যের নামও উল্লেখ করেছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেছেন, ২০০৮ সালে ‘হর্ন ওকে প্লিজ’ ছবির শুটিংয়ের সময় নানা পাটেকার তাঁকে যৌন হেনস্তা করেছেন।
তনুশ্রী আগেই বলেছেন, ২০০৮ সালে ‘হর্ন ওকে প্লিজ’ ছবির একটি আইটেম গানের শুটিংয়ের সময় বাজেভাবে তাঁর শরীরে হাত দেন নানা পাটেকার। ঘটনার প্রতিবাদ করায় ছবির প্রযোজক ও পরিচালক কেউই তখন পাত্তা দেননি। এমনকি আনুষ্ঠানিকভাবে সিনে অ্যান্ড টিভি আর্টিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের (সিনটা) কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি। বরং তাঁর ওপর হামলা চালিয়েছিল একদল লোক।
এদিকে ‘হাউসফুল ফোর’ ছবির শুটিং শেষ করে জয়সলমির থেকে মুম্বাই ফিরেছেন নানা পাটেকার। মুম্বাই বিমানবন্দরে তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি ১০ বছর আগেই কথা বলেছি। যেটা মিথ্যা সেটা মিথ্যাই।’ আরও জানা গেছে, আগামীকাল সোমবার সংবাদ সম্মেলন করবেন নানা পাটেকার।
গত সপ্তাহে সিনটা একটি বিবৃতি দিয়েছে। এই বিবৃতিতে সংগঠনটি বলেছে, ‘কোনো ব্যক্তির সম্মান হরণ বা যৌন হেনস্তার ঘটনা কাম্য নয়। সিনটা এর তীব্র নিন্দা করছে।’
এর আগে তনুশ্রী দত্ত জানিয়েছেন, ২০০৮ সালে তিনি নানা পাটেকারের বিরুদ্ধে সিনটায় যৌন হেনস্তার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। কিন্তু তখন তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এ ব্যাপারে বিবৃতিতে সিনটা লিখেছে, ‘২০০৮ সালে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তনুশ্রী দত্ত। তখন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জয়েন্ট ডিসপুট সেটেলমেন্ট কমিটি এবং ইন্ডিয়ান ফিল্ম অ্যান্ড টিভি প্রডিউসারস কাউন্সিল (তখন নাম ছিল অ্যাসোসিয়েশন অব মোশন পিকচার্স অ্যান্ড টিভি প্রোগ্রাম প্রডিউসারস)। ওই সিদ্ধান্ত যথাযথ ছিল না। যৌন হেনস্তার অভিযোগ তখন খতিয়ে দেখা হয়নি।’
‘হর্ন ওকে প্লিজ’ ছবির সহকারী পরিচালক শাইনি শেঠি নিশ্চিত করেছেন, তনুশ্রীর অভিযোগ সত্য। তিনি জানিয়েছেন, ‘ঘটনার পর অস্বস্তি বোধ করেছিলেন তনুশ্রী, সেটা আমি টের পেয়েছিলাম। একজন মেয়ে হিসেবে আমার সেটা বোঝারই কথা। সেটা আমার প্রথম ছবি ছিল, আমি ছিলাম সহকারী পরিচালক। ফলে ওই সময় আমার কিছু করার ছিল না। তনুশ্রী যা করেছেন, সেটার জন্য আজ আমি গর্বিত।’