এ রকম চরিত্রে অভিনয়ে আমার কোনো আপত্তি নেই: সানি লিওনি
বলিউডে সানি লিওনির যাত্রা শুরু হয়েছে অনেক দিন। এর মধ্যে তাঁকে কিন্তু ভিন্ন রকমের চরিত্রে খুব একটা দেখা যায়নি। কখনো আইটেম গার্ল, নয়তো যৌনতানির্ভর কোনো চরিত্রেই তিনি বারবার পর্দায় এসেছেন। এ ব্যাপারে এখন বেশ সচেতন হয়ে উঠেছেন তিনি। নিজেকে ঘরানাবদ্ধ করে ফেলেছিলেন, যেটা থেকে তিনি এখন বের হওয়ার চেষ্টা করছেন।
নিজের জীবনীচিত্র ‘করনজিৎ কৌর: দ্য আনটোল্ড স্টোরি অব সানি লিওনি’—এর পর দ্বিতীয় ওয়েব সিরিজ ‘অনামিকা’ শেষ করেছেন সানি লিওনি। এখানে তাঁকে পাওয়া যাবে অ্যাকশন–কন্যা হিসেবে। ছবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘“অনামিকা”র সেটে কাটানো প্রতিটি সেকেন্ড, প্রতিটি দিন আমি উপভোগ করেছি। কারণ, অ্যাকশন আমি সত্যিই খুব পছন্দ করি। এটা যেন আমার আরেকটা সত্তা। বাস্তবে যদিও কখনো মারপিট করব না কিন্তু এসব শিখতে আমার খুব মজা লেগেছে।’
সানি লিওনির আসল নাম করনজিৎ কৌর। ২০১১ সালে রিয়েলিটি শো ‘বিগ বস’-এ যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে তাঁর কর্মজীবনে শুরু হয় এক নতুন অধ্যায়। পর্ণতারকা থেকে হিন্দি সিনেমার অভিনেত্রী হিসেবে তাঁর জায়গা করে নেওয়া বিস্ময় ছাড়া কিছুই নয়। এসব সম্ভব হয়েছিল তাঁর নিজেকে বদলে ফেলার ইচ্ছা, দৃঢ়তা, আবেগ এবং কঠোর পরিশ্রমের কারণে। নতুন ওয়েব সিরিজের মাধ্যমে এবার নতুন এক ঘরানার শিল্পী হিসেবে পর্দায় আসছেন তিনি। সানি বলেন, ‘“অনামিকা” নিয়ে আমি খুব খুশি। বিক্রম স্যারের কাছ থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি। অভিনয় বা অ্যাকশন যা–ই হোক, তিনি আমাকে শিখিয়েছেন এবং আমাকে এমন এক চরিত্রে অভিনয় করিয়েছেন, যা আগে কখনো করব ভাবিনি। বিষয়টা আমার জন্য ভীষণ আবেগের কারণ, কেউ তো আমার ওপর বিশ্বাস রেখেছে! সব সময় যে ভালো কাজ হাতে পাব এমনটা না–ও হতে পারে।’
মহামারির কদিন আগেই ‘অনামিকা’সহ বেশ কয়েকটি কাজে যুক্ত হন সানি লিওনি। জানান, দর্শক যেসব চরিত্রে তাঁকে সব সময় দেখে, নতুন এই কাজ সেগুলো থেকে একদম আলাদা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এখানে আমাকে দেখে লোকের প্রতিক্রিয়া কী হয়, সেটা দেখার জন্য আমি উতলা হয়ে আছি। কারণ, তারা আমার কাছ থেকে যে রকম কাজ আশা করে, এটা একদমই সে রকম নয়। হয়তো আমি নিজেকে একটা ঘরানাবদ্ধ করে ফেলেছি কিংবা বলা চলে এই কাজটা এমন যে আমি এ রকম কাজ কখনো করিনি।’ নিজেকে ঘরানাবদ্ধ করে ফেলা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সানি বলেন, ‘মানুষ আশা করে আমি গ্ল্যামারাস একটি চরিত্রে অভিনয় করব, যেখানে একটু যৌনতানির্ভর চরিত্রে একজনকে দেখা যাবে। যদিও এ রকম চরিত্রে অভিনয়ে আমার কোনো আপত্তি নেই। এখনো যদি কেউ বলে যে সানিকে দেখালে যৌনতার দৃশ্য দেখাতে হবে, আমি বিরক্ত হই না।’
ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার মানুষ সানিকে গ্রহণ করেছে বলে ভীষণ আনন্দিত সানি। তিনি বলেন, ‘আমি আমার ভক্তদের ভালোবাসি, তারা আমাকে আন্তরিকভাবে গ্রহণ করেছে। আমি মনে করি, প্রথম বা দ্বিতীয় ছবি থেকে যারা আমাকে দেখছে, তারা আমার সঙ্গেই আছে। আমি মনে করি, আমি এগিয়ে যাচ্ছি, বিকশিত হচ্ছি, আমার সঙ্গে তারাও। তারা আমাকে দেখছে, গ্রহণ করছে, যখন আমি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিবর্তিত হচ্ছি। আমি মনে করি, প্রতিটি চলচ্চিত্র আলাদা হওয়া উচিত। কেন একই ধরনের কাজ বারবার তৈরি করতে হবে। কখনো মানুষ আমার কাজ পছন্দ করবে, কখনো করবে না। একজন অভিনয়শিল্পী হিসেবে আমি নানা রকম কাজ করতে চাই, নিজে যা পারি তাই দিয়ে নিজেকে প্রমাণ করতে চাই।’
ভারতে আসার পর জীবন বদলে গেছে সানি লিওনির। শাহরুখ খানের সঙ্গে ‘রইস’ ছবির আইটেম গানে কাজ করা ছিল তাঁর জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্জন। নিজের জীবনীচিত্রও ক্যারিয়ারকে আরেকটু এগিয়ে নিয়েছে সামনে। মুম্বাইতে বাড়ি কিনেছেন, ভারতের একটি মেয়েশিশুকে দত্তক নিয়েছেন, নিজের যমজ ছেলেদের বড় করছেন। নিজের মেক–আপ ব্র্যান্ড, পোশাক ব্র্যান্ড, অফিস করেছেন। সানি বলেন, ‘আজ আমি একটি দুর্দান্ত সময়ের মধ্যদিয়ে যাচ্ছি। এভাবে জীবন যাপন করতে পারব, কখনো ভাবিনি।’