আরিয়ান–কাণ্ডের সেই স্যাম ডিসুজা ‘ভুয়া’!

শাহরুখ খান ও আরিয়ান খান
কোলাজ

বলিউড তারকা শাহরুখ খানের ছেলে আরিয়ান খানের মাদক মামলায় প্রায়ই শোনা যায় স্যাম ডিসুজার নাম। এই লোকের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরোকে (এনসিবি) অর্থ দেওয়ার অভিযোগ আছে। মামলার একজনের সাক্ষ্যে তাঁর যে ঠিকানা ও ফোন নম্বর দেওয়া হয়েছিল, সেটির প্রকৃত অধিকারী আসলে মহরাষ্ট্রের পালঘরের হানিক বাফনা নামের এক ব্যক্তি। এবার জানা গেল, স্যাম ডিসুজার ‘ভুয়া’ পরিচয় তৈরি করার কাজে হানিকের প্রোফাইল ব্যবহার করা হয়েছে।

হানিক বাফনা নিজেই সম্প্রতি বিষয়টি পুলিশের নজরে আনেন। মাদক মামলায় তাঁর সম্পৃক্ততা আছে, এমন তথ্য দিয়ে হানিক বাফনাকে কল করা হয়। এরপরই তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ করে সহায়তা চান। তাঁর বক্তব্য, মামলার সাক্ষী প্রভাকর সেইল এনসিবিকে অর্থ দেওয়া প্রসঙ্গে স্যাম ডিসুজা নামের এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করেন আর তাঁর পরিচিতিতে বাফনার ছবি ও ফোন নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে। অন্য আরেক সাক্ষী কে পি গোসাভি আরিয়ানকে ছাড়িয়ে আনার জন্য ৩ অক্টোবর জেলের বাইরে এই স্যাম ডিসুজার সঙ্গে ২৫ কোটি রুপি নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। বাফনা জানান, তাঁর হোয়াটসঅ্যাপে থাকা ছবি আর এক দশক আগের পুরোনো ফোন নম্বর ডিসুজার হিসেবে সব জায়গায় ছড়িয়ে গেছে।

আরিয়ান খান ও সমীর বানখেড়ে
কোলাজ

এর আগে শিবসেনার সঞ্জয় রাউত অভিযোগ করেছিলেন, ডিসুজা হিসেবে যাঁকে দেখানো হয়েছে, তিনি মানি লন্ডারিংয়ের রাঘব বোয়াল। শুধু তা–ই নয়, তাঁর সঙ্গে রাজনীতিবিদদের বেশ সম্পর্ক আছে। মুম্বাইয়ের সাহার পুলিশের কাছে একটি অভিযোগে বলা হয়েছে, জামিনের জন্য আরিয়ানকে ১৮ কোটি রুপি সংগ্রহ করার কথা বলেছেন সেইল। এর মধ্যে আট কোটি রুপি এনসিবি আঞ্চলিক পরিচালক বানখেড়েকে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ডিসুজার কাছে গোসাভি ৩৮ লাখ রুপি ভরা ব্যাগ দিয়েছেন।
বাফনা তাঁর অভিযোগে বলেন, ২০১৯ সালে সেইলের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। একটা ব্যবসায়িক কাজে সেইলের সঙ্গে দেখা করেছিলেন তিনি। কিন্তু কাজটি এগোয়নি। তাঁরা তখন পরস্পরের ফোন নম্বর বিনিময় করেন। এরপর আর তাঁদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক ছিল না। ৩ অক্টোবরের যে ঘটনা সেইল উল্লেখ করেছেন, সেদিন তিনি পালঘরে ছিলেন। পুলিশকে সিসিটিভি ফুটেজ যাচাই করে বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে নিতে বলেন বাফনা। ৩৮ লাখ টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন বাফনা।

আরিয়ান খানের বিরুদ্ধে মাদক মামলার তদন্ত করছেন এনসিবির কর্মকর্তা সমীর বানখেড়ে। তাঁর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করেছেন ঘটনার সাক্ষী প্রভাকর সেইল। প্রভাকর জানিয়েছেন, তিনি কিরণ গোসাভির দেহরক্ষী। গোসাভি এখন পলাতক। প্রভাকরের অভিযোগ, এনসিবি তাঁকে সাদা পঞ্চনামায় সই করিয়েছে। আরিয়ানের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য গোসাভিকে ১৮ কোটি টাকা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছিল বলেও তাঁর অভিযোগ।

আরিয়ান খান
ইনস্টাগ্রাম

প্রভাকর হলফনামায় বলেছেন, গোসাভির সঙ্গে স্যাম ডিসুজার ফোনালাপেই তিনি ১৮ কোটি টাকার কথা শোনেন। গোসাভির নির্দেশে তিনি টাকাভর্তি দুটি ব্যাগ নিয়ে স্যাম ডিসুজার হাতে তুলে দেন। সেই ব্যাগে ৩৮ লাখ টাকা ছিল। তা ছাড়া ঘটনার দিন গোসাভি, স্যাম ডিসুজা ও শাহরুখের ম্যানেজার পূজা দাদলানির একটি গাড়িতে ১৫ মিনিটের বৈঠক হয়েছিল। প্রভাকরকে এদিন ক্রাইম ব্রাঞ্চ ডেকে পাঠিয়ে জেরা করেছে।
কিরণ গোসাভিই আরিয়ানের সঙ্গে সেলফি তুলে বিতর্কের ঝড় তুলেছিলেন। বিতর্কের পর থেকে তিনি পলাতক। তবে অনলাইনে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়, সেখানে দেখা গেছে, এনসিবির হেফাজতে আরিয়ানকে কারও সঙ্গে ফোনে কথা বলাচ্ছেন গোসাভি।