নগ্নতা, সহিংসতা আরও যেসব কারণে নিষিদ্ধ হয় এই ৭ সিনেমা

যেসব কারণে নিষিদ্ধ হয় এই ৭ সিনেমা। কোলাজ
অন্তরঙ্গ দৃশ্য, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতসহ নানা কারণে বিভিন্ন সময়ে অনেক হিন্দি সিনেমাকে প্রদর্শনের অনুপযোগী ঘোষণা করা হয়েছে। কোনো সিনেমা অনেক পরে বিভিন্ন বিতর্কিত দৃশ্য ছেঁটে মুক্তি পেয়েছে, কোনো সিনেমা আবার আজও আলোর মুখ দেখেনি। মুক্তির পর নানা বিতর্কে আটকে থাকা এমন সাত সিনেমা নিয়ে এই প্রতিবেদন। কেবল এই শতকের সিনেমাগুলোই বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।

‘পাঁচ’
ভারতের সার্টিফিকেশন বোর্ডের সঙ্গে অনুরাগ কশ্যপের লড়াইটা শুরু থেকেই। কারণ, তিনি ‘জন্ম থেকেই জ্বলছেন’। অনুরাগের সব সিনেমা নিয়েই অল্পবিস্তর বিতর্ক হয়েছে। তবে প্রথম সিনেমা ‘পাঁচ’ যেন সবকিছুকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল। ২০০৩ সালে নির্মিত হয় ক্রাইম থ্রিলার ঘরানার সিনেমাটি। ১৯৬৬-৭৭ সালের পুনের একটি ক্রমিক খুনের ঘটনার ছায়া অবলম্বনে নির্মিত হয়েছিল সিনেমাটি।

‘পাঁচ’ সিনেমার পোস্টার। আইএমডিবি

তবে নির্মাণের পর ২২ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও মুক্তি পায়নি সিনেমাটি। অতিরিক্ত সহিংসতা, মাদকের ব্যবহারসহ নানা কারণে সিনেমাটি আটকে দেয় সার্টিফিকেশন বোর্ড। এ সিনেমায় অভিনয় করেন কে কে মেনন, আদিত্য শ্রীবাস্তব, বিজয় রাজ। ছবির একটি বিশেষ চরিত্রে দেখা যায় অনুরাগের ভাই অভিনব কশ্যপকেও।

‘ফাইনাল সলিউশন’
রাকেশ শর্মার এ তথ্যচিত্রটি নির্মিত হয় ২০২২ সালে গুজরাটের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাকে কেন্দ্র করে। হিন্দু, মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের মানুষের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে নির্মিত হয় তথ্যচিত্রটি। তবে ২০০৪ সালে সিনেমাটি ভারতে নিষিদ্ধ হয়। ধর্মীয় সহিংসতা উসকে দিতে পারে, এই আশঙ্কায় সিনেমাটি শেষ পর্যন্ত ভারতে প্রদর্শন করা যায়নি। তবে বিবিসিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রচারের পর প্রশংসিত হয় তথ্যচিত্রটি, জেতে বেশ কয়েকটি পুরস্কারও।

‘গান্ডু’
২০১০ সালের এই বাংলা সিনেমাটি নিয়ে প্রবল বিতর্ক হয়। কৌশিক মুখার্জির এই সাদা-কালো সিনেমায় অভিনয় করেন অনুব্রত বসু, কমলিকা ব্যানার্জি, শিলাজিৎ মজুমদার ও ঋ সেন। মাত্রাতিরিক্ত নগ্নতা থাকায় এ সিনেমাটি মুক্তির অনুমতি পায়নি। তবে বার্লিন, সানড্যান্সের মতো বড় আন্তর্জাতিক উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছিল সিনেমাটি।

‘ম্যায় হু পার্ট-টাইম কিলার’ সিনেমার পোস্টার। আইএমডিবি

‘ম্যায় হু পার্ট-টাইম কিলার’
শুরুতে এই সিনেমার নাম ছিল ‘ম্যায় হু রজনীকান্ত’। ২০১৪ সালের এ ছবির নির্মাতা ফয়সাল সাইফ। এ ছবি দিয়েই বলিউডে অভিষেক হয় দক্ষিণি তারকা আদিত্য মেননের। তবে ২০১৪ সালে মুক্তির কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত মুক্তি পায়নি। কারণ, রজনীকান্ত। অনুমতি না নিয়েই তাঁর নাম ব্যবহার করা হয়েছে—এই মর্মে সিনেমাটির মুক্তি স্থগিত করতে মাদ্রাজ হাইকোর্টে মামলা করেন রজনীকান্ত। পরে নাম বদল করে উত্তর ভারতের কিছু এলাকায় মুক্তি পেলেও দক্ষিণ ভারতে মুক্তি দেওয়া যায়নি সিনেমাটি।

‘দ্য পেইনটেড হাউস’
২০১৫ সালের স্বাধীন ঘরানার মালয়ালম সিনেমা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়। সন্তোষ ও সতীশ ভ্রাতৃদ্বয়ের এই সিনেমায় অভিনয় করেন নেহা মাহাজন, কালাধারণ নায়ার ও আকরাম মোহাম্মদ।

‘দ্য পেইনটেড হাউস’ সিনেমার দৃশ্য। আইএমডিবি

মূলত মালয়ালম ও ইংরেজিতে নির্মিত হয় সিনেমাটি, পরে হিন্দি ও তামিলে ডাব করা হয়। নগ্নতার কারণে সিনেমাটি নিষিদ্ধ হয়।

‘মহল্লা অ্যাসি’
এই বিদ্রূপাত্মক সিনেমাটিতে অভিনয় করেন সানি দেওল ও সাক্ষী তানওয়ার। চন্দ্রপ্রকাশ দ্বিবেদী পরিচালিত এ সিনেমাটি নিয়ে বিতর্কের কারণ বিষয়বস্তু। এখানে পবিত্র বেনারস শহরের বাণিজীকিকরণ তুলে ধরেছিলেন নির্মাতা। আদালতের রায়ে অনেক পরে সিনেমাটির একটি পরিমার্জিত সংস্করণ মুক্তি পায়।

আরও পড়ুন

‘নীলম’
তামিল সিনেমাটি নির্মিত হয়েছিল শ্রীলঙ্কার গৃহযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে। ভারত ও শ্রীলঙ্কার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে প্রভাব ফেলতে পারে, এমন আশঙ্কায় সিনেমাটির মুক্তি আটকে দেয় ভারতের সার্টিফিকেশন বোর্ড। এ সিনেমাটির পরিচালক ছিলেন ভেঙ্কটেশ কুমার।