১৮ কেজি ওজন ঝরিয়ে ভিন্নরূপে

কার্তিক আরিয়ান

হালের ‘হার্টথ্রব’ কার্তিক আরিয়ানকে সচরাচর রোমান্টিক-কমেডি ঘরানার ছবিতে বেশি দেখা যায়। চেনা খোলস ছেড়ে ভিন্নরূপে হাজির হলেন তিনি। কবির খান পরিচালিত ‘চান্দু চ্যাম্পিয়ন’ ছবিতে এক অন্য কার্তিককে দেখা গেছে।
প্যারা অলিম্পিকে ভারতের প্রথম স্বর্ণপদকজয়ী খেলোয়াড় মুরলীকান্ত পেটকরের জীবন নিয়ে ছবিটি নির্মিত হয়েছে। সাজিদ নাদিয়াদওয়ালা প্রযোজিত এ ছবিতে মুরলীকান্তের ভূমিকায় দেখা গেছে কার্তিককে। বক্স অফিসে ছবিটি মোটামুটি ব্যবসা করলেও কার্তিকের অভিনয় দারুণ প্রশংসিত হয়েছে। সাজিদ নাদিয়াদওয়ালার অফিসে কার্তিক আরিয়ানের সঙ্গে প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধির মুখোমুখি আড্ডার সময় উঠে আসে বক্স অফিসের চাপের কথা। হালকা হেসে অভিনেতা বলেন, ‘একটু চাপ তো অনুভব করি নিশ্চয়। কিন্তু ধীরে ধীরে এসবে এখন অভ্যস্ত হয়ে উঠছি। দর্শকের প্রত্যাশা পূরণ করা এখন আমার কাছে সবচেয়ে বড় চাপ। দর্শকের প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারলে হতাশ লাগবে। কিন্তু এ ছবিতে দর্শকের প্রত্যাশা পূরণ করতে পেরেছি। এটাই আমার কাছে অনেক বড় সাফল্য।’

কার্তিক আরিয়ান

রুপালি পর্দায় ‘মুরলীকান্ত পেটকর’ হয়ে উঠতে নিজেকে কড়া অনুশাসনের মধ্যে বেঁধে রেখেছিলেন কার্তিক। নিজের পছন্দের সব খাবার থেকে দূরে ছিলেন তিনি। ১৮ কেজি ওজন ঝরিয়েছিলেন এ তারকা। চরিত্রের প্রস্তুতির প্রসঙ্গে আরও খোলাসা করে কার্তিক বলেন, ‘কবির স্যার আমাকে শুরুতেই বলেছিলেন যে সাঁতার, কুস্তি, বক্সিং—সবকিছুতে আমাকে পারদর্শী হতে হবে। দুই বছর ধরে আমি শুধু এসবই করে গেছি। জিম, প্রশিক্ষণ, রিডিং সেশন—এসবের বাইরে আমার কোনো জীবন ছিল না। বাইরের জগতের সঙ্গে আমি সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন ছিলাম। এ ছবির মাধ্যমে এক নতুন জীবনযাত্রার সঙ্গে আমার পরিচয় হয়েছিল। সত্যি বলতে এখন এতেই অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি।’

এই বলিউড সুপারস্টার বলেন, ‘চান্দু’ চ্যাম্পিয়ন ছবিটি তাঁর জীবনদর্শন, চিন্তাভাবনা বদলে দিয়েছে। এমনকি ব্যক্তি কার্তিককেও অনেকটা বদলে দিয়েছে বলে জানান তিনি। ছবির নাম ‘চান্দু চ্যাম্পিয়ন’। তাই কার্তিকের থেকে জানতে চাওয়া তাঁর কাছে প্রকৃত চ্যাম্পিয়নের সংজ্ঞা কী। অভিনেতা বলেন, ‘শুধু বিজয়ী হলে আমার কাছে তিনি প্রকৃত চ্যাম্পিয়ন নন। সব ঝড়ঝাপটা অতিক্রম করে যিনি তাঁর লক্ষ্যে পৌঁছে যান, তিনিই আমার কাছে প্রকৃত চ্যাম্পিয়ন। জীবনের কোনো প্রতিকূলতার কাছে যিনি হার মানেন না,  তিনিই আমার চোখে চ্যাম্পিয়ন।’

কার্তিক আরিয়ান

কথায় কথায় কার্তিক জানান, আগে জলে ভয় পেতেন। কোনোক্রমে সাঁতার কাটতেন বলে জানান তিনি। কার্তিক বলেন যে এ ছবির পর পেশাদার সাঁতারুর মতো সাঁতার কাটেন। তবে এখনো বিমান ওড়ার সময় বুক তাঁর দুরুদুরু করে বলে জানান অভিনেতা।
‘চান্দু চ্যাম্পিয়ন’ ছবির পর অভিনেতা কার্তিকের মধ্যে অনেক বদল এসেছে বলে জানান তিনি। এ প্রসঙ্গে এ বলিউড অভিনেতা বলেন, ‘আগে আমাকে সবাই রোমান্টিক-কমেডি নায়ক হিসেবে বেশি চিনতেন। কিন্তু এই ছবির পর আমার প্রতি দর্শকের চিন্তাভাবনায় বদল এসেছে। মুরলীকান্ত পেটকরের চরিত্রে আমি সবাইকে চমকে দিয়েছি। নতুন কিছু করার মধ্যে এক আলাদা মজা আছে। এখন ছবির প্রতি আমার দৃষ্টিভঙ্গি বদলেছে। এখন আমি দেখি যে দর্শক হিসেবে ছবিটি দেখব কি না।’

বলিউডে কার্তিকের তথাকথিত কোনো গডফাদার নেই। ইন্ডাস্ট্রির বাইরে থেকে এসে নিজের দমে আজ তিনি প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন। বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে এতগুলো বছর পার করার পর এখন কি কার্তিক নিজেকে ‘ইনসাইডার’ মনে করেন? স্মিত হেসে তিনি বলেন, ‘না, আমি নিজেকে এখনো “ইনসাইডার” মনে করি না। আমি একাই যুদ্ধ করে চলেছি।’

‘চান্দু চ্যাম্পিয়ন’ সিনেমায় বাস্তব জীবনের মতোই একজন ‘চ্যাম্পিয়ন’ হয়ে উঠেছেন কার্তিক আরিয়ান
ফেসবুক

ভিন্ন সময়ে ভিন্ন নায়িকার সঙ্গে কার্তিকের রোমান্সের খবর উঠে এসেছে। এখন কি একা? লাজুক হেসে তিনি বলেন, ‘দুই বছর ধরে আমি ‘চান্দু চ্যাম্পিয়ন’ নিয়ে ব্যস্ত। অন্যদিকে দেখার সুযোগ পাইনি। এখন শুধু মন দিয়ে কাজ করে যেতে চাই।’