ভূমিও যৌন হয়রানির শিকার, সেই কষ্ট পুষে রেখেছেন দিনের পর দিন
২০১৪ সালে ‘দম লাগাকে হ্যায়সা’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য ওজন বাড়িয়েছিলেন তখনকার নবাগত নায়িকা ভূমি পেড়নেকর। সেই সিনেমার পর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। তিনি যে পরিশ্রমী, সেটি যেমন পর্দায় প্রমাণ করেছিলেন, তেমনি স্বাস্থ্য সুরক্ষাতেও। পরবর্তী সময় খুব দ্রুতই কমিয়ে ফেলেছেন ওজন। এরপর একের পর এক সিনেমায় বাজিমাত করেছেন তিনি। বর্তমানে আর জি করের ঘটনা নিয়ে ক্ষোভে উত্তাল পুরো ভারত। একে একে নিজেদের সঙ্গে যৌন হেনস্তা নিয়ে মুখ খুলছেন টলিউড থেকে বলিউড তারকারা। এই তালিকা থেকে বাদ পড়েননি ভূমি পেড়নেকরও। আর জি করের ঘটনার পর নতুন করে নারী সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন সব মহলে। এবার সেই প্রশ্নের জবাব দিলেন অভিনেত্রী ভূমি।
সোমবার কলকাতায় গিয়ে লিঙ্গবৈষম্য ও নারী নির্যাতনের মতো প্রসঙ্গ নিয়ে বিনয়ের সঙ্গে কথা বলেন ভূমি। যুগ যুগ ধরে চলে আসা অত্যাচারে জর্জরিত নারীর কষ্ট নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
ভূমির ভাষ্য, এককথায় সেই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। কিন্তু মেয়েদের এবার মুখ খোলার তাগিদ দিলেন অভিনেত্রী। নারীদের সঙ্গে হওয়া প্রতি মুহূর্তে ঘটে যাওয়া অত্যাচারের কথা সমাজকে জানানোর আহ্বান জানান অভিনেত্রী।
নিজের জীবনে ঘটে যাওয়া অন্যায়ের উদাহরণ টেনে ভূমি বলেন, দেশের প্রতিটি পরিবারের মেয়েরা কোনো না কোনোভাবে হেনস্তার শিকার। আমিও আক্রান্ত হয়েছি, যৌন হয়রানির শিকার হয়েছিলাম। দিনের পর দিন সেই ঘটনা মনের মধ্যে পুষে রেখেছি। যার ছাপ পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায়। তাঁর মতে, একে তো হেনস্তার শিকার, তার ওপর লোকলজ্জার ভয়ে নীরব থাকা। মেয়েদের ওপর এ যেন সাঁড়াশি আক্রমণ! যার ভারে মেয়েরা জর্জরিত ও ক্লান্ত। তবু তার সমাধান নেই।
ভূমি বলেন, সমস্যা যেমন আছে, তার সমাধানও রয়েছে। ঘর থেকেই দিনবদল ঘটাতে চান তিনি। বলেন, নারী যেমন পুরুষকে সম্মান করবে, তেমনি নারীকে সম্মান করা শিখতে হবে পুরুষকেও। এতেই লিঙ্গবৈষম্য দূর হবে। তাঁর দ্বিতীয় পরামর্শ, কর্মক্ষেত্রেও লিঙ্গসমতা ফেরাতে হবে। টেকনিশিয়ানদের থেকে শুরু করতে হবে, শেষ হবে পরিচালনার স্তরে। মেয়েরা যেমন বলবেন, তাঁদের বক্তব্যও শুনতে হবে। পোশাক থেকে আচরণ—মেয়েদের সবকিছু নিয়ে সারাক্ষণ সমালোচনা চলে। ভূমির মতে, এটাও নারী হেনস্তার অন্যতম কারণ।
পাশাপাশি শিশুদের মানবিক বিকাশের ওপরও জোর দেন ভূমি পেড়নেকর। কারণ, এখনকার শিশুরা আগের তুলনায় অনেক বেশি অমানবিক। আফসোস করে অভিনেত্রী বলেন, তারা কুকুরের লেজে বাজি বেঁধে জ্বালায়! শিশুদের মধ্যে মানবিকতার শিক্ষা থাকলে ভবিষ্যতে তারা মান ও হুঁশ সম্পন্ন মানুষ হবে।