সালমানের বাড়ির বাইরে গোলাগুলি: সিসিটিভির ফুটেজে যা দেখা গেল
চার দশক ধরে মুম্বাইয়ের বান্দ্রায় গ্যালাক্সি অ্যাপার্টমেন্টে থাকেন বলিউড তারকা সালমান খান। এই অ্যাপার্টমেন্টের বাইরে গতকাল ভোরে গুলি চালিয়েছে দুষ্কৃতকারীরা। সালমানের বাড়ির দেয়ালে গুলি লেগেছে।
বাসার বাইরে সিটিটিভিতে ধারণকৃত দুটি ভিডিও পুলিশের হাতে এসেছে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, গতকাল ভোরে দুই দুষ্কৃতকারী বাইকে চেপে সালমানের বাসার বাইরে গুলি চালিয়ে পালিয়ে গেছে। দুজনের মধ্যে একজনের গায়ে সাদা টি–শার্টের ওপর কালো শার্ট, আর একজনকে লাল টি–শার্টে দেখা গেছে। দুজনের মধ্যে একজনের মাথায় কালো টুপি, অপরজনের মাথায় সাদা টুপি রয়েছে।
সালমানের বাসার বাইরে থাকা কয়েকটি সিসিটিভির ডিভিআর পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে। পাশাপাশি হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। পুলিশের ধারণা, হামলাকারীরা মহারাষ্ট্রের বাইরে থেকে আসতে পারেন। তাঁদের উচ্চতা আনুমানিক ৫ দশমিক ৮ ইঞ্চি হতে পারে বলে পুলিশের আন্দাজ। ইতিমধ্যে দুজনের ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
সালমান খানের সঙ্গে গাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের বিবাদ পুরোনো। সালমান খানকে একাধিকবার প্রাণনাশে হুমকি দিয়েছে বিষ্ণোইর দল। এই হামলার দায়ভারও লরেন্স বিষ্ণোইর দল নিয়েছে। গ্রুপের এক সদস্য আনমোল লরেন্স এক পোস্টে সালমানের বাসার বাইরে হামলার দায়ভার স্বীকার করেছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই পোস্টে আনমোল বিষ্ণোই লিখেছেন, ‘জয় শ্রীরাম, আমরা শান্তি চাই। অন্যায়ের বিরুদ্ধে কোনো সিদ্ধান্ত যদি যুদ্ধ হয়, তাহলে যুদ্ধ-ই ঠিক আছে। সালমান খান, এই ঘটনা শুধু একটা ট্রেলার, তোমাকে যা আমরা দেখাতে চেয়েছিলাম। তুমি যাতে আমাদের শক্তি বুঝতে পারো, আর আমাদের পরীক্ষা নিয়ো না। এটা প্রথম এবং শেষ হুমকি। এরপর গুলি শুধু বাড়িতে চলবে না। তুমি দাউদ ইব্রাহিম ও ছোটা সাকিলকে ভগবান মেনে এসেছ। এর চেয়ে বেশি বলার অভ্যাস আমার নেই। লরেন্স বিষ্ণোই গ্রুপ, গোল্ডি বরাড় গ্রুপ, কালা জেঠরি গ্রুপ।’
তবে পুলিশের পক্ষ থেকে এই পোস্টের বিষয় কিছু বলা হয়নি এখনো।
গুলিবর্ষণের ঘটনার পর ঘটনাস্থল এখন মুম্বাই পুলিশ, অপরাধ দমন শাখা এবং ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা তদন্ত করছেন। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা সালমানের ফ্ল্যাটে এখন পর্যন্ত দুটি গুলির দাগ চিহ্নিত করেছেন। এর মধ্যে একটি সালমানের বারান্দার দেয়ালে এবং অপরটি তাঁর বাসার বাইরের দেয়ালে। মুম্বাই পুলিশ গ্যালাক্সি অ্যাপার্টমেন্টের চারজন নিরাপত্তারক্ষীর জবানবন্দি নিয়েছেন। গুলিবর্ষণের ঘটনার সময় এই চারজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
সালমান ৪০ বছর ধরে নিজের পরিবারের সঙ্গে ‘গ্যালাক্সি অ্যাপার্টমেন্টে’ থাকেন। আটতলার এই আবাসনের নিচের তলায় ভাইজান একা থাকেন। আর তাঁর পরিবার এই আবাসনের প্রথম তলায় থাকে।
গত বছর এক ই–মেইলের মাধ্যমে সালমানকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এর আগে তাঁর বাবা সেলিম খান এক উড়ো চিঠি পেয়েছিলেন। এই চিঠিতেও ভাইজানকে প্রাণে মেরে ফেলার কথা বলা হয়েছিল। এর পর থেকে মুম্বাই পুলিশের পক্ষ থেকে সালমানের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছিল। আর এই বিটাউন তারকাকে বুলেটপ্রুফ গাড়ি দেওয়া হয়েছিল। গত রোববার হামলার পর মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে সালমানের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন।
শিন্ডে মুম্বাই পুলিশ কমিশনারকে সালমানের নিরাপত্তাব্যবস্থা আরও জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন। এই অভিনেতার আবাসনের বাইরে এখন জোর নিরাপত্তাব্যবস্থা। সালমানের বোন অর্পিতা খান, ভাই আরবাজ তাঁর স্ত্রী শুরা খানসহ একে একে অনেকে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন।