২৫ বছর পর ভারতে ফিরলেন মমতা
নব্বই দশকের সাড়াজাগানো বলিউড অভিনেত্রী তিনি। পর্দায় তাঁর আবেদনময়ী উপস্থিতি হিন্দি সিনেমায় নতুন মাত্রা যোগ করেছিল। তবে নানা কারণে পরে আড়ালে চলে যান অভিনেত্রী। দীর্ঘ দুই যুগের বেশি সময় পর গত বুধবার ভারতে ফিরেছেন তিনি। কেনই–বা এত দিন নিজের দেশে ফিরতে পারেননি? জেনে নেওয়া যাক হিন্দুস্তান টাইমস অবলম্বনে।
মুম্বাইয়ে এসে আজ ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও শেয়ার করে বাড়ি ফেরার আনন্দ প্রকাশ করেছেন। ২০০০ সালে দেশ ছেড়ে যাওয়ার পর এটাই তাঁর প্রথম ভারত ফেরা। তবে কি আবার বলিউডে দেখা যাবে অভিনেত্রীকে—এ নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে ভক্ত-অনুরাগীদের।
ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘বন্ধুরা, আমি মমতা কুলকার্নি, মাত্র ভারতে ফিরেছি, ২৫ বছর পর। আমি নস্টালজিক হয়ে পড়েছি, কারণ আমি ২০০০ সালে ভারত ছেড়ে গিয়েছিলাম এবং ঠিক ২০২৪ সালে ফিরেছি। আমি আপ্লুত ও আবেগঘন, জানি না সেটা কী করে প্রকাশ করব। ফ্লাইট ল্যান্ড করার আগে আমি বাঁ-ডান দিক দেখছিলাম। ওপর থেকে আমি দেশকে প্রায় ২৫ বছর পর দেখলাম। চোখে জল এসে গিয়েছিল। মুম্বাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এক পা বাইরে রাখতেই আমি ভীষণ আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ি।’
গত বুধবার মমতা কুলকার্নি দেশে ফিরেছেন। তবে হঠাৎ দেশে ফেরায় আলোচনায় এসেছে তাঁর জীবনের এক বিতর্কিত অধ্যায়। ২০১৬ সালে থানে পুলিশ ২ হাজার কোটি রুপির একটি মাদক পাচার চক্রের তদন্ত শুরু করে। যেখানে মমতার নাম জড়িয়ে পড়ে।
থানে পুলিশের তদন্ত অনুযায়ী, মহারাষ্ট্রের সোলাপুরে অবস্থিত অ্যাভন লাইফ সায়েন্সেস লিমিটেড নামের একটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির মাধ্যমে এফিড্রিন নামের একটি নিয়ন্ত্রিত পদার্থ পাচার করা হতো। পুলিশের দাবি, এই এফিড্রিন কেনিয়ায় পাঠানো হতো এবং সেখানে এটি মেথঅ্যামফেটামিনে রূপান্তরিত হয়ে মার্কিন বাজারে বিক্রি হতো।
মমতা কুলকার্নি ও তাঁর সঙ্গী কথিত মাদক সম্রাট ভিকি গোস্বামীকে এই মামলায় অভিযুক্ত করা হয়। অভিযোগ ছিল, তাঁরা ২০১৬ সালের ৮ জানুয়ারি কেনিয়ার ব্লিস হোটেলে এক বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন, যেখানে এই মাদক পাচারের পরিকল্পনা করা হয়।
মামলার তদন্তে পুলিশের দেওয়া প্রমাণ শক্তিশালী না হওয়ায় মুম্বাই হাইকোর্ট সম্প্রতি মমতার বিরুদ্ধে থাকা এফআইআর খারিজ করেন। আদালত জানান, অভিযোগ ছাড়া মমতার বিরুদ্ধে অন্য কোনো প্রমাণ মেলেনি। এ ছাড়া সহ-অভিযুক্ত জয় মুখি, যিনি মমতার জড়িত থাকার কথা বলেছিলেন, পরে জানান চাপের মুখে তিনি ওই বক্তব্য দিয়েছিলেন।
মমতা কুলকার্নি শুরু থেকেই দাবি করেছিলেন তাঁকে এই মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। আদালতের এই রায় তাঁর জন্য একটি বড় স্বস্তি, যা তাঁকে বিতর্কের অধ্যায় পেছনে ফেলে নতুন করে জীবনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
১৯৯২ সালে রাজ কুমার ও নানা পাটেকরের ছবি ‘তিরঙ্গা’-র মাধ্যমে অভিনয়জীবন শুরু করেন মমতা কুলকার্নি। নব্বইয়ের দশকে ‘করণ অর্জুন’, ‘ওয়াক্ত হামারা হ্যায়’, ‘ক্রান্তিবীর’, ‘সাবছে বড় খিলাড়ি’-র মতো হিট ছবির নায়িকা ছিলেন তিনি।