বলিউড অভিনেতা সতীশ কৌশিক মারা গেছেন
বলিউডের সুপরিচিত পরিচালক ও অভিনেতা সতীশ কৌশিক আর নেই। মাত্র ৬৬ বছর বয়সেই হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এই তারকা। আজ বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর মৃত্যুসংবাদ ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। টুইটারে এ খবর জানান প্রবীণ বলিউড অভিনেতা অনুপম খের।
আজ সকালে অনুপম খেরের টুইটার পোস্ট দেখে কেউ যেন নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। অনুপম খের লিখেছেন, ‘জানি, জীবনের সবচেয়ে বড় সত্য মৃত্যু। কিন্তু আমি কখনো ভাবিনি, আমার প্রিয় বন্ধুর জন্য কোনো দিন আমাকে এটা লিখতে হবে। ৪৫ বছরের বন্ধুত্বে হঠাৎ বিচ্ছেদ। তোমার মতো বন্ধুর অনুপস্থিতিতে জীবন বদলে যাবে।’ এমনিতে সুস্থই ছিলেন সতীশ কৌশিক। এক দিন আগেও বলিউডের হোলি পার্টিতে আনন্দ করেছিলেন, হুল্লোড় করেছিলেন। ফেসবুকে রঙিন আনন্দের সেই মুহূর্তকে সবার সঙ্গে শেয়ার করেছিলেন অভিনেতা। জাভেদ আখতারের বাড়িতে হোলি পার্টিতে রং মেখে ছবি পোস্ট করেন সতীশ।
হোলি পার্টিতে জাভেদ আখতার, শাবানা আজমি, মহিমা চৌধুরীসহ ছিলেন নবদম্পতি বলিউড তারকা আলী ফজল ও রিচা চাড্ডা। রঙের উৎসবে সতীশ কৌশিকের প্রাণবন্ত উপস্থিতি ছিল।
৭ মার্চ ফেসবুক পেজে এটাই ছিল সতীশ কৌশিকের শেষ পোস্ট। সতীশ তাঁর ফেসবুক পেজে লিখেছিলেন, ‘রঙিন আনন্দ। জুহুর জানকী কুটিরে ছিল এই হোলি পার্টি। নববিবাহিত দম্পতি আলী ফজল ও রিচা চাড্ডার সঙ্গে দেখা হলো। সবাইকে হোলির আন্তরিক শুভেচ্ছা। হ্যাপি হোলি ২০২৩। রঙের সমন্বয়। বন্ধুত্ব।’ রিচা চাড্ডা, আলী ফজল, মহিমা আর জাভেদ আখতারদের সঙ্গে ক্যামেরার সামনে একের পর এক পোজ দিয়েছিলেন সতীশ কৌশিক। সে ছবিগুলো শুধু ‘ছবি’ হয়ে থাকবে শুধুই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এমন আনন্দ মুহূর্তে বন্ধুদের সঙ্গে রং খেলার রঙিন মুহূর্তটা আর কোনো দিন ফিরবে না অভিনেতার জীবনে।
এখন পর্যন্ত সতীশের মৃত্যুর কোনো কারণ নির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি। তবে সতীশের সহ–অভিনেতা অনুপম খের টুইটে জানান, গাড়ির মধ্যেই হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন এই বর্ষীয়ান অভিনেতা। জানা গেছে, আজই তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। এ মুহূর্তে গুরুগ্রামের ফর্টিস হাসপাতালে রয়েছে তাঁর মরদেহ। সেখানেই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে ময়নাতদন্ত করা হবে। এরপর মুম্বাইয়ে অভিনেতার বাসভবনে দেহ নিয়ে যাওয়া হবে।
১৯৫৬ সালের ১৩ এপ্রিল, হরিয়ানার মহেন্দ্রগড়ে জন্ম সতীশ কৌশিকের। হরিয়ানাতেই প্রাথমিক স্তরের পড়াশোনা শেষ করে সতীশ চলে যান দিল্লিতে। ১৯৭২ সালে দিল্লির কিরোরি মাল কলেজ থেকে স্নাতক পাস করেন তিনি। এরপর ভর্তি হন ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা এবং ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটে। ১৯৮০ সালের শুরুতে থিয়েটার অভিনেতা হিসেবে কাজ শুরু করেন সতীশ কৌশিক।
১৯৯৩ সালে ‘রূপ কি রানি চোরো কা রাজা’ পরিচালনার মাধ্যমে যাত্রা শুরু পরিচালক সতীশ কৌশিকের। পরবর্তীকালে ‘হাম আপকে দিল মে রেহতে হ্যায়’, ‘মুঝে কুছ কেহনা হ্যায়’-এর মতো ছবি পরিচালনা করেন তিনি। সালমন খানের ‘তেরে নাম’ ছবির হাত ধরে পরিচিতি বাড়ে পরিচালক সতীশ কৌশিকের। শুধু পরিচালক হিসেবে নয়, অভিনেতা হিসেবেও আলাদা পরিচিতি ছিল তাঁর।
‘মিস্টার ইন্ডিয়া’ ছবিতে ‘ক্যালেন্ডার’ চরিত্রে তাঁর অভিনয় বেশ সাড়া ফেলেছিল। আশি ও নব্বইয়ের দশকের একাধিক ছবির পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে ‘বাগি ৩’, ‘ছত্রিওয়ালি’র মতো ছবিতেও অভিনয় করেছেন সতীশ কৌশিক। পর্দায় কৌতুকাভিনয় জন্যই খ্যাতি ছিল তাঁর। ১৯৮৫ সালে শশী কৌশিকের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন সতীশ কৌশিক।