রাবিনা মানেই কি কেবল ‘টিপ টিপ বরসা পানি’
বাবা রবি ট্যান্ডন ছিলেন নির্মাতা। অন্য আত্মীয়দেরও চলচ্চিত্রযোগ ছিল। পরে চলচ্চিত্র পরিবারে বড় হওয়া রাবিনা ট্যান্ডনের অভিনেত্রী হওয়াটা আশ্চর্য নয়। তবে এই অভিনেত্রীর নাম বললেই যে অনেকের শুধু ‘টিপ টিপ বরসা পানি’ গানের কথা মনে পড়ে, সেটাই বরং কিছুটা বিস্ময়ের। কারণ, ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী এই অভিনেত্রী মনে রাখার মতো আরও অনেক কাজই করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার রাবিনাকে নিয়ে এত আলাপের কারণ তাঁর জন্মদিন। ১৯৭২ সালের ২৬ অক্টোবর তখনকার বোম্বতে জন্ম হয় তাঁর। ১৯৯১ সালে ‘পাথর কে ফুল’ দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক রাবিনার। প্রথম সিনেমাতেই জেতেন ফিল্মফেয়ারে সেরা নবাগত অভিনেত্রীর পুরস্কার। ছবিও হিট হয়। ব্যস, এগিয়ে চলতে আর কী চাই। সেই থেকে তিন দশকের বেশি সময় ধরে হিন্দি সিনেমায় কাজ করে যাচ্ছেন রাবিনা।
অভিনেত্রীর ক্যারিয়ারকে মোটা দাগে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। ক্যারিয়ারের প্রথম এক দশক শুধু বাণিজ্যিক ঘরানার সিনেমাতেই অভিনয় করেছেন তিনি।
সিনেমাগুলোও হয় সুপারহিট। এরপর মধ্যে ‘দিলওয়ালে’, ‘খিলাড়িও কা খিলাড়ি’, ‘জিদ্দি’ ইত্যাদি সিনেমার কথা বলা যায়। এই তালিকায় অতি অবশ্যই থাকবে ‘মহড়া’। ১৯৯৪ সালে মুক্তি পাওয়া এই সিনেমার গান ‘টিপ টিপ বরসা পানি’ এতটাই যে জনপ্রিয়তা পায় যে এটা যেন রাবিনা ট্যান্ডনের ক্যারিয়ারেরই ট্যাগ লাইন হয়ে যায়।
চলতি শতকের শুরুর দিকে শৈল্পিক ধারার সিনেমায় দেখা যায় অভিনেত্রীকে। অভিনয় করেন ‘দামান’, ‘আকস’ ইত্যাদি সিনেমায়। এসব সিনেমা যেমন সমালোচকদের প্রশংসা পায়, তেমনি রাবিনা পান জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
২০১০ সালের পর থেকে অভিনয়ে অনিয়মিত হয়ে পড়েন রাবিনা। মাঝে দু-একটা সিনেমা করলেও সেগুলো বলার মতো কিছু ছিল না। ২০২১ সালে তাঁর ওটিটিতে অভিষেক হয় নেটফ্লিক্সের সিরিজ ‘আরণ্যক’ দিয়ে। এরপর গত বছর তাঁকে দেখা যায় আলোচিত দক্ষিণি সিনেমা ‘কেজিএফ’-এর সিকুয়েলে। সামনে হিন্দি সিনেমা, সিরিজসহ বেশ কয়েকটি কাজে দেখা যাবে রাবিনাকে।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অনেক নায়কের সঙ্গেই রাবিনার প্রেমের গুঞ্জন শোনা গেছে। সবচেয়ে বেশি শোনা গেছে অক্ষয় কুমারের সঙ্গে। তাঁদের প্রেম বিয়ে পর্যন্ত গড়িয়েছিল এমন গুজবও শোনা যায়। তবে ২০০৪ সালে চলচ্চিত্র পরিবেশক অনিল থাদানিকে বিয়ে করেন রাবিনা। তাঁদের সংসারে চার ছেলেমেয়ে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাবিনা জানান, সন্তানদের কাছে নিজের অতীত সম্পর্ক নিয়ে কোনো কিছুই লুকাননি তিনি। রাবিনা বলেন, ‘আমার জীবন খোলা বইয়ের মতো।’
এই সাক্ষাৎকারে নিজের ক্যারিয়ার, হিন্দি সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে কথা বলেছেন রাবিনা। অভিনেত্রী মনে করেন, হিন্দি সিনেমা পাশ্চাত্যের অনুকরণ করতে গিয়ে নিজস্বতা হারিয়েছে। অন্যদিকে দক্ষিণি সিনেমাগুলো শেকড়কে আঁকড়ে ধরে সাফল্য পেয়েছে।