‘ক্যাটরিনা কাজ করবে, আমি বাচ্চা সামলাব’
এবার পুরোদস্তুর কমেডি ছবি ‘ব্যাড নিউজ’-এ দুরন্ত অভিনয় করে আলোচনায় ভিকি কৌশল। আনন্দ তিওয়ারি পরিচালিত ছবিটি বক্স অফিসে মোটামুটি ব্যবসা করেছে। তবে ভিকির অভিনয় প্রশংসিত হয়েছে সবচেয়ে বেশি। ছবিতে তাঁকে ‘অখিল চাড্ডা’ নামে এক পাঞ্জাবি তরুণের ভূমিকায় দেখা গেছে। প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধির সঙ্গে আড্ডার শুরুতে উঠে আসে তাঁর অভিনীত চরিত্রের কথা।
পরিবার পাশে থাকলে কোনো “ব্যাড নিউজ” আমাকে প্রভাবিত করতে পারে না। সবাই মিলে এটা মোকাবিলা করি। আমরা পরিবারের কেউ কারও কাছ থেকে কিছু লুকাই না। সবকিছু একে অপরের সঙ্গে ভাগ করে নিই।
ভিকির সঙ্গে চরিত্রটির কতটা মিল? জানতে চাইলে অভিনেতা হেসে জবাব দেন, ‘অখিলের সঙ্গে বেশ কিছু মিল আছে। দুজনেই পাঞ্জাবি গান শুনতে আর নাচতে ভালোবাসি। দুজনেই প্রথমে প্রেমে পড়েছি, পরে বিয়ে করেছি। তবে “অখিল”-এর তুলনায় আমি অনেক বেশি পরিণত।’
ছবিতে তৃপ্তি দিমরির সঙ্গে ভিকির রসায়ন নিয়ে অন্তর্জালে চর্চা হয়েছে। তৃপ্তি প্রসঙ্গে এই অভিনেতা বলেন, ‘সে উত্তরাখন্ডের মেয়ে। তৃপ্তি খুব মিষ্টি স্বভাবের মেয়ে। আমি, এমি (ভির্ক), তৃপ্তি সবাই শুটিংয়ের সময় একটা পরিবারের মতো হয়ে উঠেছিলাম। মনে হতো, আমরা পিকনিক করছি।’ বাস্তব জীবনের ‘ব্যাড নিউজ’ ভিকি কীভাবে সামলান? ভিকি বলেন, ‘পরিবার পাশে থাকলে কোনো “ব্যাড নিউজ” আমাকে প্রভাবিত করতে পারে না। সবাই মিলে এটা মোকাবিলা করি। আমরা পরিবারের কেউ কারও কাছ থেকে কিছু লুকাই না। সবকিছু একে অপরের সঙ্গে ভাগ করে নিই।’
ভিকি ও ক্যাটরিনা দাম্পত্য জীবন দুই বছর পার করে ফেলেছেন। বেশ কিছু দিন আগে খবর ছিল যে ক্যাটরিনা কাইফ মা হতে চলেছেন। এ খবরের সত্যতা জানতে চাইলে ভিকি হেসে জানান, ‘এসব রটনা। সত্যি হলে আমি কি এভাবে চুপ করে বসে থাকতাম। আমিই সবচেয়ে বেশি লাফালাফি করতাম। সবাইকে এই খবর জানানোর জন্য আমি উতলা হয়ে উঠতাম।’
কথায় কথায় ভিকি জানান, তিনি শিশুদের খুব ভালোবাসেন। ভিকি বলেন, ‘আমি সারা দিন বাচ্চাদের সঙ্গে কাটাতে পারি। ক্যাটরিনাকে বলেই দিয়েছি, ও কাজ করবে; আমি বাচ্চার সঙ্গে সারা দিন হইহুল্লোড় করব। বাবা হিসেবে আমি ভালো হব বলেই বিশ্বাস।’ বিটাউনের জনপ্রিয় তারকা দম্পতিদের মধ্যে একজন হলেন ভিকি-ক্যাট। হামেশাই তাঁদের রোমান্টিক ছবি নেট দুনিয়ায় রীতিমতো উষ্ণতা ছড়ায়। দুজনের মধ্যে কে বেশি রোমান্টিক? জানতে চাইলে হালকা
হেসে ভিকি বলেন, ‘আমরা দুজনেই রোমান্টিক। তবে ক্যাট বেশি সারপ্রাইজ দেয়। ওর সামনে কিছু প্রকাশ করার সময় আমি নার্ভাস হয়ে যাই।’ ক্যাটরিনা ভিকির জীবনে আসার পর তাঁর জীবনদর্শন কিছুটা বদলে গেছে বলে জানান অভিনেতা। ক্যাটেরও জীবন সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি বদলেছে। এ প্রসঙ্গে এই বলিউড তারকা বলেন, ‘আমি বরাবরই বাস্তববাদী। আমার মধ্যে আবেগ কম ছিল; কিন্তু ক্যাটরিনা খুবই আবেগপ্রবণ ও সংবেদনশীল। ক্যাট আমাকে এখন আবেগময় করে তুলেছে। আর আমার কারণে ক্যাট এখন নানা বিষয়কে বাস্তব দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখতে শুরু করেছে।’
দাম্পত্য জীবন সম্পর্কে অভিনেতা আরও বলেন, ‘আমরা একে অপরের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ কমই পাই। শুটিংয়ের ব্যস্ততার কারণে অনেক সময় টানা এক মাস আমাদের দেখা পর্যন্ত হয় না। তবে যেটুকু সময় পাই, খুব আনন্দ করি। একসঙ্গে বসে সিনেমা দেখি, কফি খাই, খাবার খাই। ছোট ছোট জিনিসের মধ্যে আমরা আনন্দ খুঁজে নিই।’
প্রকৌশলীর ক্যারিয়ার ছেড়ে অভিনয়ে এসেছিলেন ভিকি। ইঞ্জিনিয়ারিং ছাড়ার সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল না—এমন ভাবনা কি ভিকির মনে কখনো এসেছে? অভিনেতা জানান, ‘জীবনের প্রথম অডিশন খুব বাজে দিয়েছিলাম। সারা রাত আমি ঘুমাতে পারিনি। তখন মনে হয়েছিল, ইঞ্জিনিয়ারিং ছাড়ার সিদ্ধান্ত বোধহয় ভুল ছিল। এরপর আর কখনো মাথায় আসেনি।’ তবে ব্যর্থতা ভিকিকে সেভাবে প্রভাবিত করে না বলে জানান তিনি।
তাঁর কথায়, ‘আমি সব সময় নিজের সেরাটা দিতে চেষ্টা করি। পড়াশোনা করার পরেও ফেল করে হতাশ হতাম না। কারণ আমি জানতাম, আমার সেরাটা দিয়েছি। এর চেয়ে বেশি দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই।’