আমিরের চোখে ‘লাপাতা লেডিস’–এর সেরা কে
‘লাপাতা লেডিস’ দিয়ে প্রায় এক যুগ পর সিনেমা পরিচালনায় ফিরেছেন কিরণ রাও। আর ফিরেই বাজিমাত করলেন তিনি। মুক্তির পর বক্স অফিসে যত না সাড়া ফেলেছিল, তার থেকে বহুগুণে সফল ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্সে। ‘লাপাতা লেডিসে’নেই শহুরে জাঁকজমক। চড়া মেকআপের আস্তরণে ঢেকে থাকা বিগ বাজেটের নায়িকাও নয়। দু-একজন ছাড়া সবাই অচেনা, নতুন। হ্যাঁ, তাঁদের নিয়েই কাজ করেছেন কিরণ রাও।
সেই বিশ্বাসের মর্যাদাও রেখেছেন অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। এই সিনেমার আরও একটি চমক আমির খান। যিনি ছবিটির অন্যতম প্রযোজক। সিনেমাটির সাফল্য উদ্যাপনে নেটফ্লিক্সের এক আয়োজনে আমির খান বলেন ‘লাপাতা লেডিস’ নিয়ে তাঁর ভাবনার কথা।
এই আয়োজনে আমির খান ছাড়াও ছিলেন কিরণ রাও ও সিনেমার অভিনয়শিল্পীরা। নিলেশ মিশ্রার সঞ্চালনায় হাসি-আড্ডায় জমজমাট হয়ে ওঠে তাঁদের এই উদ্যাপন বৈঠক। যেখানে অভিনেতা-অভিনেত্রীদের অভিনয়ের প্রশংসায় কোনো কার্পণ্য করেননি প্রযোজক আমির খান।
রবি কৃষাণ, অর্থাৎ আলোচিত সেই পুলিশ কর্মকর্তাকে দিয়েই শুরু হয়েছিল বৈঠকের সূচনা। তিনি বলেন, ‘আমাকে দেখে নারীরা উৎসাহিত হন। বলেন, আমরাও কিছু করতে চাই। নারীদের মনে বিপ্লব ঘটিয়ে দিয়েছে এই সিনেমা। আমির খানের প্রযোজনা মানেই তো বিশেষ কিছু। যা দিয়ে মানুষকে ধাক্কা দেওয়া যায়, জাগিয়ে তোলা যায়। সবাই বড় এক দায়িত্ব আমিরকে দিয়ে রেখেছে, এটা আমির খানের প্রোডাকশন, মানে ভালো কিছু।’
আমির সিনেমাটি নিয়ে বলেন, ‘যখন কিরণ আমাকে প্রথম সিনেমাটি দেখায়, তখন মনে হয়েছে সব অভিনেতা-অভিনেত্রীই দারুণ অভিনয় করেছে। এই তিনজন খুব ভালো কাজ করেন। সব সাজানো-গোছানো ছিল। কিন্তু যে চরিত্রটি দেখে আমি আশ্চর্য হয়েছি, সেটা হচ্ছে স্পর্শ (স্পর্শ শ্রীবাস্তব)। ওর অভিনয় আমাকে অবাক করেছে।
আপনাদের অভিনয় সম্পর্কে আমার ধারণা আছে। কিন্তু স্পর্শর চরিত্রটি পরিষ্কারভাবে চিত্রনাট্যেও লেখা ছিল না। যখন তাঁকে এমন অভিনয় করতে দেখেছি, আমি বলেছি, বাহ্। একজন মানুষ হিসেবে আমি যখন সিনেমাটা দেখি, তখন তুমি ভালো করেছ, তুমি করেছ। কিন্তু সে আমাকে অবাক করেছে।’
আমিরের কথা টেনে পরিচালক কিরণ রাও একমত হয়ে বলেন, ‘কিন্তু আপনি ওর চরিত্রটি যখন চিত্রনাট্য দেখতে যাবেন, ওর কিন্তু বিশেষ কোনো কাজই ছিল না। এখান থেকে ওখানে দৌড়ানো ছাড়া। টেনশন করছে। ওর খুব মেধা।’
আমিরের কথার জের ধরে কথা বলতে শুরু করেন স্পর্শও। কীভাবে ‘লাপাতা লেডিস’-এর সঙ্গে যুক্ত হলেন, জানান সেই অভিজ্ঞতার কথাও। বলেন, ‘আমির স্যার আমাকে খুদে বার্তা পাঠিয়েছেন। লিখেছিলেন, “জামার্তায় আপনার কাজ আমার পছন্দ হয়েছে। আমি আপনার সঙ্গে কথা বলতে চাই।” তখন আমার বিশ্বাস হয়নি। ভেবেছি ভুয়া হবে। কারণ “জামার্তা” একটি স্ক্যাম শো। তো আমি বললাম, ভয়েস নোট পাঠান। তখন আমির স্যার বললেন, “দুই মিনিট সময় হলে আমি ভিডিও কলই দিচ্ছি।” ভিডিওতে সত্যি সত্যি আমিরকে দেখে আমি অভিভূত হয়েছি।’
পাশাপাশি সিনেমায় নিজেদের অভিজ্ঞতার বর্ণনা করেন নিতানশী গোয়েল, প্রতিভা রাংটা। নিজের মধ্যে ফুলকে কতটা খুঁজে পান প্রশ্নের জবাবে নিতানশী বলেন, ‘আমি কোথাও না কোথাও তাঁকে নিজের মধ্যে খুঁজে পাই। শুধু তা-ই নয়, আমার পরিবারের দাদি বা নানির মধ্যেও দেখেছি। আশপাশের নারীদের মধ্যে দেখেছি। সবার মাঝেই অল্প অল্প ভয় কাজ করে, মনে হয় আমরা যোগ্য নই। কিন্তু পরিস্থিতিতে পড়ে আমরা আবার করেও দেখাই। তখন নিজেরা শক্তি খুঁজে পাই।’