বাবা সিদ্দিকের মৃত্যু, আবার আলোচনায় বলিউড ও আন্ডারওয়ার্ল্ডের সম্পর্ক
বাবা সিদ্দিকের শোকে মুহ্যমান এখন বলিউডের তারকারা। বাবা সিদ্দিকের খুনের সূত্র ধরে আবার আলোচনায় বলিউডের সঙ্গে আন্ডারওয়ার্ল্ডের পুরোনো কোন্দলের কথা।
গত শনিবার রাতে ছেলের বান্দ্রার অফিসের সামনে তিন আততায়ী এসে গুলি করে হত্যা করে বাবা সিদ্দিককে। তা–ও একবার গুলি নয়, একাধিকবার গুলি করা হয় তাঁকে। তড়িঘড়ি করে মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়; কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।
বলিউড ও আন্ডারওয়ার্ল্ডের সম্পর্ক বহু বছরের পুরোনো, সে ভালো হোক বা খারাপ। কিন্তু কীভাবে বলিউড ও অপরাধজগতের মধ্যে যোগসূত্র তৈরি হলো? সেটা জানতে হলে আপনাকে জানতে হবে করিম লালার কথা। এই লালার মূল ব্যবসা ছিল অপহরণ, কনট্রাক্ট নিয়ে হত্যা করা, মাদকদ্রব্য পাচার করা।
বলা হয়, কোনো বিচার চাইলে তার সহজ সমাধান পাওয়ার একমাত্র ব্যক্তিও ছিলেন তিনি। করিম লালা ঈদের সময় তাঁর বাড়িতে বলিউড তারকাদের ডাকতেন। দিলীপ কুমার হেলেনকে নিয়ে গিয়েছিলেন করিম লালার কাছে একটা সমস্যার সমাধান করতে। লালা সেই সময় তাঁর সমস্যা মিটিয়েও দেন বলে শোনা যায়। এর পর থেকেই বলিউডে তাঁর প্রভাব বাড়তে থাকে।
কিন্তু কীভাবে বলিউডে মাস্তানরা ঢুকেছিল? জানা যায়, যখন অভিনেতারা ইচ্ছা করে শুটিং পিছিয়ে দিতেন, শুটিং করতেন না, তখন তাঁদের সাহায্যে প্রযোজকেরা অভিনেতাদের ভয় দেখাতেন। কেউ কেউ আবার অভিনেত্রীদের ঘনিষ্ঠ হতে চাইতেন। হাজী মাস্তান যেমন সুন্দরী অভিনেত্রীদের প্রতি দুর্বল ছিলেন। তাঁর মধুবালাকে এতই পছন্দ হয় যে তিনি তাঁর মতো একজনকেই বিয়ে করেন, সিনেমায় পয়সা বিনিয়োগ করেন। কিন্তু দাউদ ইব্রাহিম যখন বলিউডের সঙ্গে যুক্ত হন, তখন তিনি আন্ডারওয়ার্ল্ডকে প্রথম বাণিজ্যিকীকরণ করেন। অভিনেতাদের দুবাই নিয়ে যান শো করতে।
চাপ দিয়ে যে টাকা আদায় করত এই আন্ডারওয়ার্ল্ডের দুষ্কৃতকারীরা, সেটার বিরুদ্ধে প্রথম সরব হন প্রীতি জিনতা। তবে আলোচিত তারকাদের কেউ তখন মুখ খোলেননি। পরবর্তী সময় মুম্বাই পুলিশের দক্ষতায় দাউদ ও ছোট রাজন ধীরে ধীর বলিউডকে চাপ দিয়ে টাকা আদায় করা বন্ধ করে দেন। কিন্তু তাঁরা সরলেও উত্থান হয় রবি পূজারির মতো অপরাধীদের।
মনে করা হয়, এখন বলিউড ও আন্ডারওয়ার্ল্ডের যোগ নিয়ে প্রকাশ্যে কথা না হলেও ভেতরে-ভেতরে ঠিকই হিন্দি সিনেমায় তাঁদের প্রভাব আছে।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস