মেয়ের বিয়েতে আমিরের পিকে নৃত্য, আজ রাতে ‘পাজামা পার্টি’
কয়েক দিন ধরে ইরা খান ও নূপুর শিখারের বিয়ে নিয়ে নানা আলোচনা বলিপাড়ায়। ৩ জানুয়ারি আমির-কন্যা ইরা তাঁর দীর্ঘদিনের প্রেমিক নূপুরকে আইনিভাবে বিয়ে করেন। এবার আনুষ্ঠানিকভাবে অগ্নিসাক্ষী রেখে বিয়ে করতে চলেছেন তাঁরা। ১০ জানুয়ারি তাঁরা সাত পাকে বাঁধা পড়বেন।
রাজস্থানের উদয়পুরে এখন পুরোপুরি উৎসবের মেজাজ। উদয়পুরের বিলাসবহুল তাজ আরাবল্লি রিসোর্টে ইরা ও নূপুরের বিয়ের আসর বসেছে। ৬ জানুয়ারি থেকে খান পরিবার ছাড়াও তাদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধব এই বিয়েতে শামিল হয়েছেন। ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত ইরা-নূপুরের ডেস্টিনেশন বিয়ে চলবে। আমির তাঁর মেয়ে ইরার বিয়েকে ঘিরে যে দারুণ উৎফুল্ল, তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানান পোস্টে ধরা পড়েছে।
গতকাল রোববার আমিরকে দেখা গেছে, স্থানীয় লোকশিল্পীদের সঙ্গে তাঁর নিজের ছবি ‘পিকে’-র গানের তালে নাচছেন। আর এই বলিউড তারকাকে সঙ্গ দিয়েছেন তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী কিরণ রাও ও মেয়ে ইরা। এদিকে ইরা তাঁর ইনস্টা অ্যাকাউন্টে এক স্টোরির মাধ্যমে তাঁর বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পর্কে সব তথ্য ফাঁস করেছেন। ইনস্টাগ্রামের স্টোরিতে আমির-কন্যা এক ভিডিওতে নিজের বিয়ের কার্ড শেয়ার করেছেন। বিয়ের কার্ডে অনুষ্ঠান সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আছে।
বিয়ের কার্ড অনুযায়ী, ৮ জানুয়ারি সকাল ৭টা থেকে ১০টার মধ্যে প্রাতরাশ পর্ব রাখা হয়েছে। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ ইরার বিয়ের মেহেদি অনুষ্ঠান শুরু হয়ে যাবে। স্থানীয় মেহেদিশিল্পীরা ইরার হাতে নূপুরের নামের মেহেদি লাগাবেন। রাত ৮টার সময় নৈশভোজের আয়োজন রাখা হয়েছে। রাত ১০টা নাগাদ শুরু হবে ইরা-নূপুরের পাজামা পার্টি (রাতের পোশাকে পার্টি)। আর ৯ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে ঝলমলে সংগীত অনুষ্ঠান। সন্ধ্যা ৭টা থেকে সংগীতের আসর বসবে। ১০ জানুয়ারি আসছে ইরা-নূপুরের জীবনের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত দিনটি। এদিন রাতে তাঁরা মারাঠি মতে গাঁটছড়া বাঁধবেন। বিকেল ৪টা থেকে তাজ আরাবল্লি রিসোর্টের ময়ূরবাগে তাঁদের বিয়ের আচার-অনুষ্ঠান শুরু হয়ে যাবে।
ইরা ও নূপুর তাঁদের বিয়েকে ঘিরে শুরু থেকেই মারাঠি রীতিনীতি মেনে আসছেন। কারণ, পাত্র পুরোপুরি মারাঠি। জানা গেছে, এই দম্পতি শুধু মারাঠি নিয়ম মেনে বিয়ে করবেন না, বিয়ের দিন তাঁদের পরনে নাকি মারাঠি বিয়ের পোশাক-আশাক থাকবে।
গতকাল থেকেই বিয়ের আসরের সাজসজ্জা শুরু হয়ে গেছে। ডিজে সাউন্ড লাগানোর প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গেছে। সমগ্র হোটেল এখন থেকেই আলোয় ঝলমল করে উঠেছে। নানা ধরনের বাহারি ফুলে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে তাজ আরাবল্লিকে। ২৫০ জনের বেশি অতিথি নাকি আমন্ত্রিত। আর এই অভিজাত রিসোর্টের ১৭৬টা ঘর অতিথিদের জন্য রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে আমিরের বড় ছেলে জুনেইদ, মা জিনাত হুসেন, ভাগনে ইমরান খান আর তাঁর প্রেমিকা লেখা ওয়াশিংটন উদয়পুরে পৌঁছে গেছেন।
উদয়পুর থেকে ইরা-নূপুরের বিয়েকে ঘিরে নানা ধরনের ভিডিও নেট দুনিয়ায় ছেয়ে গেছে। এসব ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে সংগীতশিল্পী আশু শর্মার গানে সাবেক স্ত্রী রিনাকে সঙ্গে নিয়ে আমির নাচছেন। আর তাঁদের সঙ্গে খান পরিবারের অনেক সদস্যকে দেখা যাচ্ছে। কোনো ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে আমিরের দুই সাবেক স্ত্রী রিনা আর কিরণ একসঙ্গে নাচছেন। তাঁদের সঙ্গে আছে আমিরের ছোট ছেলে আজাদ। গত শনিবার ইরা একটি পোস্ট করেছিলেন। এই পোস্টে দেখা গেছে, ইরা ও নূপুর বিয়েতে উপস্থিত সবাইকে শরীরচর্চা করাচ্ছেন। আর এভাবেই অতিথিদের স্বাগত জানিয়েছেন এই নবদম্পতি। ইরা তাঁর এই পোস্টে নূপুরকে ট্যাগ করে লিখেছেন, ‘প্রচুর ওয়ার্কআউট ছাড়া কি আমাদের বিয়ে হতে পারে?’
ইরা ও নূপুরের বিয়ের অনুষ্ঠান উদয়পুরেই শেষ নয়; ১৩ জানুয়ারি এক গ্র্যান্ড রিসেপশনের আয়োজন করেছে খান পরিবার।
জিও ওয়ার্ল্ড সেন্টারে আয়োজিত এই রিসেপশনে শাহরুখ খান, সালমান খান, অমিতাভ বচ্চনসহ আরও অনেক তারকার দেখা মিলতে পারে।
৩ জানুয়ারি মুম্বাইয়ের তাজ ল্যান্ডস এন্ডে ইরা আর ফিটনেস ট্রেনার নূপুরের রেজিস্ট্রি করে বিয়ে হয়। তাঁদের বিয়েতে শুরু থেকেই ছিল অভিনবত্বের ছোঁয়া। এদিন নূপুর কালো স্যান্ডো গেঞ্জি আর সাদা শর্টস পরে বিয়ের আসরে হাজির হয়েছিলেন। গাড়িতে চেপে নয়, প্রায় আট কিলোমিটার দৌড়ে গলদঘর্ম হয়ে নূপুর তাজ ল্যান্ডস এন্ডে বিয়ের আসরে পৌঁছেছিলেন। এই রাতে ইরার পরনে ছিল সাধারণ লেহেঙ্গা-চোলি, আর পায়ে সাদামাটা চপ্পল। অনেকে তাঁদের এই ছাপোষা বিয়েকে ঘিরে প্রশংসায় পঞ্চমুখ। আবার অনেকে এ নিয়ে নানান তির্যক মন্তব্য করেছেন। তবে আমির-কন্যা ইরা চিরকালই অন্য পথে হাঁটতে ভালোবাসেন। তাই নিন্দুকদের কোনো কথা তিনি গায়ে মাখেন না।