বলিউডে বিদেশিদের দাপটে কাজ হারাচ্ছেন ভারতীয়রা
হিন্দি সিনেমায় আজকাল প্রায়ই দেখা যায় বিদেশি অভিনয়শিল্পীদের। তবে কেবল অভিনয়শিল্পীই নন, অনেক বিদেশিই বলিউডের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করছেন। ধারণা করা হয়, বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে বিদেশি অভিনয়শিল্পীর চেয়ে পর্দার পেছনে কাজ করা বিদেশি পেশাদারদের সংখ্যা আরও বেশি। তবে ভারতীয় চলচ্চিত্র কলাকুশলীদের ইউনিয়নের দাবি, দেশটির সিনেমা দুনিয়ায় কাজ করা বেশির ভাগ বিদেশিই অবৈধভাবে কাজ করছেন।
সম্প্রতি বিদেশি পেশাদারদের ওপর অনেকটা নির্ভর হয়ে পড়ছে ভারতীয় বিনোদনজগৎ। সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, সিনেমাটোগ্রাফার, পরিচালক, প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার, জুনিয়র শিল্পী, নৃত্যশিল্পী, মেকআপশিল্পী, হেয়ার স্টাইলিস্ট, অ্যাকশন ডিরেক্টর, স্টান্টম্যান, কস্টিউম ডিজাইনার থেকে শিল্পনির্দেশক—সব ক্ষেত্রেই বিদেশি পেশাদার নিয়োগের প্রবণতা বেড়েছে।
ভারত প্রতিবছর নির্মিত চলচ্চিত্রের সংখ্যার হিসাবে বিশ্বের প্রথম স্থানে রয়েছে। এই ইন্ডাস্ট্রিতে বার্ষিক টার্নওভার প্রায় ২৭০ কোটি মার্কিন ডলার। হিন্দি ছাড়াও দক্ষিণ ভারতে বেশ কয়েকটি বড় চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি আছে। যেখানে বিপুলসংখ্যক শিল্পী, কলাকুশলী কাজ করেন। এসব নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদেশি পেশাদারেরা প্রাধান্য পাচ্ছেন। এতে করে অনেক ভারতীয় কাজ হারাচ্ছেন।
মূলত দুই কারণে বলিউড যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, উজবেকিস্তানসহ অন্যান্য দেশ থেকে পেশাদারদের নিয়ে এসে কাজ করাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দাবি, বিদেশ থেকে সেই কাজের জন্য যোগ্যতম ব্যক্তিদেরই নিয়ে আসা হচ্ছে, দ্বিতীয়ত, তাঁদের অবদানে উপকৃত হয় ভারতীয় চলচ্চিত্রশিল্প। যদিও এসব দাবি মানতে নারাজ ইউনিয়নগুলো। ‘ফেডারেশন অব ওয়েস্টার্ন ইন্ডিয়া সিনে এমপ্লয়িজ’-এর চেয়ারম্যান অশোক দুবে বলেছেন, ‘প্রযোজকেরা ঠিক করেন ছবি নির্মাণের সঙ্গে কারা যুক্ত থাকবেন। এ ক্ষেত্রে বিদেশিদের প্রাধান্য দেওয়ায় আমাদের দেশের লোক কাজ পাচ্ছেন না।’
অশোকের দাবি, প্রায় ৯০ শতাংশ বিদেশি পেশাদার বেআইনিভাবে ভারতে কাজ করছেন। তাঁদের কাছে যথাযথ কাগজপত্রও নেই। এ নিয়ে তিনি মুম্বাই পুলিশেরও দ্বারস্থ হয়েছেন বলে জানান অশোক। তিনি বলেন, ‘পুরো বিষয়টি একাধিকবার মুম্বাই পুলিশের নজরে এনেছি। কিন্তু আমাদের অভিযোগকে গুরুত্বসহকারে নেয়নি পুলিশ। আমাদের ইউনিয়নে অন্তত তিন লাখ পেশাদার রয়েছেন। আমরা তাঁদের জন্য লড়ে যাব।’
ভারতে চলচ্চিত্রের পেশাদারদের সংগঠনের বিভিন্ন সূত্রের দাবি, অনেক বিদেশি ভারতে পর্যটক ভিসা নিয়ে কাজ করেন। কিন্তু পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয় না। তবে এ বিষয়ে মুম্বাই পুলিশের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।