হিরো: দ্য সুপারস্টার শাকিব খানের প্রযোজনায় প্রথম ছবি বলে কথা! হলের ভেতর যা একটু গুঞ্জন, একটু কানাঘুষা, তা ওই ঢালিউডের খান সাহেবকে ঘিরেই। নড়েচড়ে বসি। শুরু হয় হিরো: দ্য সুপারস্টার! ছবির গল্প একটু একটু করে পাখা মেলতে থাকে, একই সঙ্গে শুরু হয় এক ভূতের উৎপাত। কোন সে ভূত? থাক, সে প্রসঙ্গে পরে আসছি।
একে একে খুন হচ্ছে ভিলেন জাফর জোয়ার্দারের (মিশা সওদাগর) কাছের লোকজন। সিআইডির অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে খুনির নাম হীরা (শাকিব খান)। ততক্ষণে আমাদের জানা হয়ে গেছে, নায়ক হীরা তখন প্রিয়ার (অপু বিশ্বাস) সঙ্গে মিষ্টি প্রেমে ব্যস্ত। একে তো পেশায় সফটওয়্যার প্রকৌশলী, তার ওপর ‘সফট’ হৃদয়ের মানুষ! হীরা কী করে একজন দুর্ধর্ষ খুনি হতে পারে?
ওদিকে নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত জাফর জোয়ার্দার। সিআইডি তাকে কথা দিয়েছে, জাফরের গায়ে একটা আঁচড় পড়ার আগেই হাতকড়া পড়বে খুনির হাতে। দর্শক যখন কাহিনির গতিপথ ধরতে পেরে একটু থিতু হয়েছেন, তখনই গল্পের মোচড়!
ছবি নির্মাণের ঘোষণা দিয়েই শাকিব খান কথা দিয়েছিলেন, বাজেটের ক্ষেত্রে কার্পণ্য করবেন না। বোঝা গেল, শুধু বাজেট নয়, নিজেকে উজাড় করে দিতেও তিনি কার্পণ্য করেননি। দুর্দান্ত নাচেই প্রমাণ করলেন, নিজের প্রযোজনায় তিনি এক অন্য শাকিব। ‘অন্য অপু’ও মুগ্ধ করেছেন। বদলে যাওয়া অপুর সঙ্গে তাঁর পোশাক দারুণ মানিয়েছে! ঝলমলে উপস্থিতির কারণে দর্শকের হাততালি পেলেন ববিও। তবে তাঁর অভিনয় নিয়ে মন্তব্য করা কঠিন। গানের দৃশ্যগুলোয় লোকেশন বেশ ভালো; হল থেকে বের হওয়ার পরও গুনগুন করার মতো কোনো সুর অবশ্য পাওয়া গেল না। ছবির ভিলেনকে একঝাঁক ঝাঁ-চকচকে গাড়ি দিয়ে ঘিরে ফেলা—বাংলা ছবিতে এসব নতুনত্বের জন্য শাকিব প্রশংসা পেতে পারেন। কিছু কিছু জায়গায় ছবির অসামঞ্জস্য এড়িয়ে যাওয়া যায়। সমস্যা শুধু একটাই, সেই ভূত!
তেলেগু নায়ক ও রেবেল ছবি দুটো যাঁদের দেখা আছে, ছবির শুরু থেকেই তাঁদের একটু অস্বস্তি হবে নিশ্চিত। এই দুটো ছবির গল্প মিলেমিশে তৈরি—হিরো: দ্য সুপারস্টার। পর্দার বাইরেও যিনি সুপারস্টার, সেই শাকিব খান পুরো সময়জুড়ে দর্শক ধরে রাখলেন ঠিক; শুধু এই নকলের ভূত যদি না থাকত, ইশ্, কী দারুণ বিনোদন হতে পারত ছবিটা!