শাকিবের প্রতি অভিমান থেকেই এমনটা করেছি
নায়িকা পপি এখনো খুলনায়। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর বাড়িতেই কেটেছে তাঁর আইসোলেশন পর্ব। এদিকে কদিন ধরে রটেছে গুজব, শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। সেসব নিয়ে খুলনা থেকে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বললেন পপি।
এখন কেমন আছেন?
অনেকটাই ভালো। শারীরিক দুর্বলতা আছে। কাল-পরশু আবার পরীক্ষা করাব।
ঢাকায় ফিরবেন কবে?
আগামী সপ্তাহে ফেরার পরিকল্পনা আছে। করোনার আগে খুলনায় এসে আটকে গেছি। যখন ফেরার কথা ভাবলাম, তখন তো করোনায় আক্রান্ত হলাম।
শোনা যাচ্ছে আপনি ও জায়েদ খান বিয়ে করেছেন?
বিয়েটা কে দিল? জায়েদ খানের সঙ্গেই–বা কেন! আমি জোর গলায় বলছি, এসব ফালতু, অবাস্তব, অকল্পনীয় কথা। আমি এখনো অবিবাহিত।
শোনা গিয়েছিল এর আগে আপনি নায়ক শাকিল খানকেও বিয়ে করেছিলেন।
আমি কখনোই এসব নিয়ে কিছু বলিনি। সে হয়তো আমাকে ভালোবাসত, এটা তার ব্যাপার ছিল। যতবারই আমি হিরোদের হেল্প করতে চেয়েছি, ততবারই এমন কথা রটেছে। সমসাময়িকদের মধ্যে আমি অবিবাহিত ছিলাম বলেই এমন কথা রটেছে।
একদিকে জায়েদ খানকে বর্জন করেছে ১৮ সংগঠন। অন্যদিকে নায়িকা নিপুণ বলেছেন, জায়েদ আলোচিত আপনারই কারণে। আপনার মত কী?
আমি কখনোই নায়কনির্ভর হিরোইন ছিলাম না। ফিল্মে আমার মামা-খালু ছিল না। নিজের যোগ্যতায় কাজ করেছি, তবে সিনিয়রদের সহযোগিতা পেয়েছি। রাজ্জাক, শাবানা, ববিতা, ফারুক, আলমগীর, হুমায়ুন ফরীদিসহ বিখ্যাত সব শিল্পী আমাকে পরামর্শ দিয়েছেন, সহযোগিতা করেছেন। তাঁদের কারণে আমারও নতুনদের সহযোগিতা করার মানসিকতা তৈরি হয়েছিল। শাকিল খান, শাকিব খান, ফারদীন, ইমন, নিরবসহ আরও অনেককে হেল্প করেছি। শাকিবের জন্য তো আমি আর আমার বাবা প্রযোজকের কাছে বন্ড সইও করেছি। জায়েদ খানের বিষয়টাও তেমন ছিল।
শুধুই কি সহযোগিতা?
শাবনূর ও অমিত হাসান আমার কমন ফ্রেন্ড। তাদের বন্ধু হিসেবে জায়েদের সঙ্গে আমার পরিচয়। তারাই জায়েদকে প্রোমোট করতে বলেছিল। তাদের কারণেই জায়েদের সঙ্গে ছবি করার পরিকল্পনা, স্টেজ শো করা। শিল্পী সমিতির নির্বাচনে আমাদের কারণেই রিয়াজ, ফেরদৌস, নিপুণ, পূর্ণিমাসহ সবাই জায়েদের পাশে ছিলাম। সত্যি বলতে, শাকিবের প্রতি চাপা অভিমান থেকেই আমরা এমনটা করেছি।
শাকিব খানের প্রতি অভিমান কেন?
জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর শাকিব আমাদের সবাইকে এড়িয়ে চলতে থাকে। এর মধ্যে মান্না ভাই মারা গেলে শাকিবের একচেটিয়া রাজত্ব গড়ে ওঠে। অপুকে নিয়েই শাকিব এগোতে থাকে। এসবের কারণে আমাদের মধ্যে অভিমান তৈরি হয়। সেই অভিমান থেকে জায়েদকে শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সাপোর্ট করি। কমিটি গঠনের পর তার মুখোশটা আমাদের সামনে খুলে যায়। আমাদের শিল্পীদের মধ্যে কখনোই দলাদলি, কোন্দল ছিল না। এক টেবিলে খেয়েছি, আড্ডা দিয়েছি, আনন্দ করেছি, একে অন্যের বিপদে পাশে ছিলাম। সবার সঙ্গে সবার বন্ধুত্ব ছিল। পর্দায় শত্রুতা চললেও পর্দার বাইরে আমরা শুধুই বন্ধু। কিন্তু জায়েদ নেতৃত্বে আসার পর আমাদের সবার সম্পর্কে ফাটল ধরায়।
তাহলে এখনকার উপলব্ধি কী?
অভিমান করাটাই আমাদের ভুল ছিল। আমি মনে করি, শাবনূর, রিয়াজ, ফেরদৌস, নিপুণের যে ভুল ছিল, আমারও সেই একই ভুল ছিল। ভুল আমরা সবাই করেছি। তবে এটাও ঠিক, চলচ্চিত্রে মুখোশধারীদেরও আমরা চিনতে পেরেছি।
শাকিবের সঙ্গে অভিমানের কথা এত দিন বলেননি কেন?
আমরা আমাদের ইগো নিয়ে থাকতাম। কিন্তু মনে মনে চাপা অভিমান কাজ করত। তবে আমাদের মধ্যে ব্যক্তিগত কোনো রেষারেষি ছিল না। শাকিব এড়িয়ে চললেও কোনো দিন ক্রাইম করেনি।
চলচ্চিত্রের সুন্দর পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে কী করা উচিত?
প্রকৃত শিল্পীদের সোচ্চার হতে হবে। ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তা না হলে চলচ্চিত্রের পরিবেশ বদলাবে না। সুযোগসন্ধানী কাউকে এখানে রাখা যাবে না। সবাইকে কাজ নিয়ে আলাপ করতে হবে। কাজের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। শিল্পীদের আবেগ নিয়ে রাজনীতি করা যাবে না।