মেয়ের 'সারপ্রাইজ', কাঁদলেন বাঁধন
স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর মেয়েকে নিয়ে একাই থাকেন অভিনয়শিল্পী ও মডেল মা আজমেরী বাঁধন। ছোট্ট সায়রার কাছে এখন বাঁধনই তার মা ও বাবা। তাই তো বাবা দিবসে মেয়ে সায়রা মা বাঁধনকে বাবা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছে। নিজ হাতে কেক বানিয়ে, কফি তৈরি করে, একটি চকলেট বার ও সঙ্গে চিঠি নিয়ে মায়ের কাছে হাজির। বাবা দিবসে মেয়ের কাছ থেকে এমন সারপ্রাইজ পেয়ে ভীষণ খুশি মা বাঁধন। এই খুশি তাঁকে কাঁদিয়েছেও।
বাঁধন বললেন, ‘আমিও মাঝেমধ্যে সায়রাকে সারপ্রাইজ দেওয়ার চেষ্টা করি। একইভাবে সেও আমাকে দেয়। কিন্তু বাবা দিবসের ব্যাপারটা সত্যিই আমাকে অনেক বেশি অবাক করেছে। আমি খুবই আবেগপ্রবণ হয়েছি। আমি কেঁদেছি।’
বাঁধনের মেয়ে সায়রার বয়স এখন আট বছরের কাছাকাছি। সায়রার মায়ের সঙ্গে তার বাবার বিচ্ছেদের পর তিন বছর ধরে মায়ের কাছেই থাকে সায়রা। ২০১৭ সালের ২ আগস্টের পর এই করোনার মধ্যে রোজায় একবার মায়ের উপস্থিতিতে মেয়ে ও বাবার দেখা হয়।
বাঁধন বললেন, ‘দুজন মানুষের বিচ্ছেদ হতেই পারে। তাই বলে তাঁদের ইগোস্টিক ব্যাপারের কারণে সন্তানের মনোজগতে কোনো সমস্যা যেন না হয়। মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি মা হিসেবে আমার যেমন দায়িত্ব, সন্তানের বাবারও দায়িত্ব। এটা আমার সন্তানের ক্ষেত্রে মোটেও হচ্ছে না। তারপরও আমি চেষ্টা করছি, সন্তান যেন তার বাবার প্রতি কোনো ভুল ধারণা পোষণ না করে।’
প্রথম আলোকে বাঁধন বলেন, ‘আদালত থেকেই কিন্তু সপ্তাহে দুদিন বাবাকে তাঁর মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে বলা হয়েছে। মেয়ের মনোজগতে যাতে কোনো নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে, তাই এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়। আমিও চাই মেয়েটা যেহেতু ছোট; দুদিন নয়, চাইলে সব সময়ই আসুক। অথচ ২০১৭ সালের ২ আগস্টের পর এই করোনায় সায়রার বাবা দেখা করেছে!’
‘সায়রার ক্লাসে ২৬ জন পড়ে। ২৫ জনই বাবার আদর, ভালোবাসা পায়। অথচ আমার বাচ্চার সঙ্গে ওর বাবা নেই, এটা যে কীভাবে মেনটেইন করছি আমি জানি আর আমার স্রষ্টা জানেন। সবার কাছে দোয়া চাই, আমি এই যুদ্ধটা যেন চালিয়ে যেতে পারি,’ বলেন বাঁধন।
কথায় কথায় বাঁধন বলেন, ‘আমাদের ছাড়াছাড়ির পর আদালত থেকে বলে দেওয়া হয়, আমার বাসায় এসে আমারই উপস্থিতিতে মেয়ের সঙ্গে যেন দেখা করে বাবা। কিন্তু সে আমার বাসায় আসবে না। আমি তাকে এ–ও বলেছি, বাইরেও দেখা করা যেতে পারে। কিন্তু তা–ও করে না। সন্তানের কোনো খরচও দেয় না।’
বাঁধন আরও বলেন, ‘আমি কিন্তু ওর মতো করে ভাবি না। হয়তো একটা মানুষকে বিয়ে করে ফেললাম, সে আমার স্বামী হবে, কিন্তু সে তো আমার সন্তানের বাবা হতে পারবে না। সে হয়তো সন্তানের ভালো বন্ধু হতে পারে। আমি খুবই প্র্যাকটিক্যাল। আমিও যদি বলি, আরেকজনের মেয়েকে কখনোই আমার মেয়ের মতো ভালোবাসতে পারব না। তাহলে আমিই–বা কেন প্রত্যাশা করব, আমার মেয়েকে আরেকজন পুরুষ তার সন্তান মনে করবে।’