মোবাইলে অশালীন মন্তব্য, বিব্রত প্রবীণ অভিনেত্রী

খালেদা আক্তার কল্পনা। ছবি: সংগৃহীত
খালেদা আক্তার কল্পনা। ছবি: সংগৃহীত

‘অদ্ভুত এক যন্ত্রণার মধ্যে পড়ে গেছি। রাত নাই দিন নাই ফোন দেয়। কী সব অশালীন কথাবার্তা বলে, যা মুখেই বলা যায় না। সেসব শব্দ শুনলেই মনে ঘৃণা জন্মে। লোকটি ফোনে যে নোংরামিটা করছে, সেটা খুবই অশালীন। করোনার এই সময়ে এত ভয় দেখাই, করোনা পরিস্থিতির কথা বলি, তা–ও লাভ হয় না। পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার কথা বললেও সে পাত্তা দেয় না। অসহ্য হয়ে গেছি। থানায় গিয়ে ডায়েরি করব, করোনার কারণে পারছি না। বাইরে গেলেই করোনার ভয়। সবাই নিষেধ করে থানায় গিয়ে মামলা করতে। এখন অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন এলেই ভয় লাগে’—কথাগুলো বলেন প্রবীণ চলচ্চিত্র অভিনেত্রী খালেদা আক্তার কল্পনা। দু–তিন দিন পরপর এখনো ফোন দিয়ে নাম–পরিচয়হীন একজন অসুস্থ, রুচিহীন কথাবার্তা বলেন এই অভিনেত্রীকে।

খালেদা আক্তার কল্পনা। ছবি: সংগৃহীত
খালেদা আক্তার কল্পনা। ছবি: সংগৃহীত

প্রবীণ এই অভিনেত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক বছর ধরে মুঠোফোনে বিরক্ত করে আসছেন একজন। নাম–পরিচয়হীন এই ব্যক্তি বেশ কটি মুঠোফোন নম্বর থেকে ফোন দিয়ে এই অভিনেত্রীকে অশালীন কথাবার্তা বলেন। নম্বর কালো তালিকায় দিলেও থেমে থাকেনি রাতবিরাতে ফোন দিয়ে বিরক্তির মাত্রা। এমনকি রোজার মাসেও ভোররাতে ফোন দিত। এই অভিনেত্রী তিন মাস ধরে থানায় ডায়েরি করার কথা ভাবলেও করোনার কারণে বাসা থেকে বের হচ্ছেন না। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আজ থেকে প্রায় এক বছর আগে প্রথম আমাকে ফোন দেয়। ফোন দিয়ে জিজ্ঞাসা করে, “আপনি কি খালেদা আক্তার কল্পনা।” তখন আমি বলি হ্যাঁ, আপনি কে? তারপর এমন একটা বাজে শব্দ উচ্চারণ করে, যা শুনে আমি সঙ্গে সঙ্গে ফোন কান থেকে নামিয়ে রাখি। তখনই আমি অস্বস্তিবোধ করি। ভুল করে বলেছে কি না, এটা জানার জন্য আবার ফোনটি কানে নিয়ে শুনতে থাকি কী বলছে। এমন সব অশ্লীল নোংরা কথা বলছে, যা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। আমি সঙ্গে সঙ্গে ব্লক লিস্টে ফেলে দিই। এরপর দেখি সে আরও অন্য নম্বর দিয়ে ফোন দেয়। অনেকবার বলেছি আমি অসুস্থ বয়স্ক মানুষ। আমাকে দয়া করে আর ফোন দেবেন না। কোনো লাভ হয় নাই। এরপরও ফোন দিয়ে নিয়মিত বিরক্ত করে।’ 

প্রায় তিন শ ছবির এই অভিনেত্রীকে দু–তিন দিন পরপর এখনো ফোন দিয়ে একইভাবে অশালীন কথা বলেন সেই ব্যক্তি। এই ব্যাপারে তিনি প্রাথমিকভাবে একজন পুলিশকে জানিয়েছেন। মামলা বা জিডি না করায় ঘটনা বেশি দূর এগোয়নি। ঘটনাগুলো কিছুটা শেয়ার করেছেন অভিনেতা ডি এ তায়েবের কাছে। এ বিষয়ে ডি এ তায়েব বলেন, ‘এটা খুবই ঘৃণিত কাজ। আপা (খালেদা আক্তার কল্পনা) যদি নিরাপত্তা চেয়ে অভিযোগ বা মামলা করেন, তাহলে আমরা তাকে খুঁজে বের করে অ্যারেস্ট করার চেষ্টা করব। আইনের আওতায় এনে তার বিচার করা হবে।’

শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর বলেন, ‘এ বিষয়ে কেউই আমাদের জানায় নাই। জানালে অবশ্যই আমরা শিল্পী সমিতি থেকে আইনগত ব্যবস্থা নেব। একজন প্রবীণ বয়স্ক শিল্পীকে আমরা সবাই সম্মানের চোখে দেখি। সেখানে এভাবে অশালীন কথাবার্তা বলাটা একদমই অন্যায়। আমরা খোঁজখবর নিয়ে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করব।’