করোনা জয় করে বাসায় ফিরলেন সুজেয় শ্যাম
টানা ১১ দিন চিকিৎসাসেবা নেওয়ার পর করোনামুক্ত হয়ে বাসায় ফিরেছেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সুরকার ও সংগীত পরিচালক সুজেয় শ্যাম। হাসপাতালে ভর্তির পর দুবার করোনা পরীক্ষায় ফলাফল নেগেটিভ হওয়ার পর চিকিৎসকেরা তাঁকে বাসায় ফেরার অনুমতি দেন বলে জানালেন তাঁর মেয়ে লিজা শ্যাম।
লিজা জানান, গত ৩০ মে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল থেকে তাঁর বাবার স্বাস্থ্য পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। এর আগে, ২৬ মে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কারণে এই শিল্পীকে শ্যামলীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২৭ মে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে। সেখানে করোনা টেস্টের নমুনা সংগ্রহ করার পর বাসায় ফিরে যান এই শিল্পী। ৩০ মে ফলাফল পজিটিভ জানার পর কুর্মিটোলা হাসপাতালে আবার ভর্তি করানো হয় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই সংগীতশিল্পীকে। চিকিৎসা শেষে ৯ জুন বিকেলে তিনি কলাবাগানের বাসায় ফিরেছেন।
লিজা শ্যাম বলেন, 'আমার বাবার শারীরিক অবস্থা এখন ভালো। আপাতত কোনো ধরনের সমস্যা নেই। চিকিৎসকের নির্দেশনা মেনেই তিনি চলছেন।'
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী হিসেবে দেশ স্বাধীনের ৪৫ বছর পর মুক্তিযোদ্ধার সনদ পান সুজেয় শ্যাম। তার আগ পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কোনো ভাতা পেতেন না বরেণ্য এই সুরকার ও সংগীত পরিচালক। দুই বছর ধরে তা পাচ্ছেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শেষ গান এবং পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের পর প্রথম গানের সুর করেন সুজেয় শ্যাম। 'বিজয় নিশান উড়ছে ওই' গানের সুর ও সংগীত পরিচালনা করেন তিনি। গানটির প্রধান কণ্ঠশিল্পী ছিলেন অজিত রায়। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত সুজেয় শ্যামের অন্য গানগুলোর মধ্যে আছে 'রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি', 'রক্ত চাই রক্ত চাই', 'আহা ধন্য আমার জন্মভূমি', 'আয়রে চাষি মজুর কুলি', 'মুক্তির একই পথ সংগ্রাম' ও 'শোন রে তোরা শোন'।
২০০৯ সালে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের ৫০টি গান এই প্রজন্মের শিল্পীদের দিয়ে নতুন সংগীতায়োজনে গাইয়েছেন সুজেয় শ্যাম, তাঁকে সহযোগিতা করেন পার্থ বড়ুয়া। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ২০১৪ সালের স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে শুদ্ধ সুরে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়, এটিরও সংগীতায়োজন করেন সুজেয় শ্যাম।
হাছন রাজাকে নিয়ে নির্মিত হাছন রাজা চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনা করে পান প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। চলচ্চিত্রকার চাষী নজরুল ইসলামের বিশেষ অনুরোধে এই চলচ্চিত্রের একটি গানেও কণ্ঠ দেন তিনি। পরবর্তী সময়ে জয়যাত্রা ও অবুঝ বউ চলচ্চিত্রের গানের সংগীত পরিচালনা করে যথাক্রমে ২০০৪ ও ২০১০ সালে একই পুরস্কার লাভ করেন তিনি।