আমি 'নাই' হয়ে গেছি: হায়দার হোসেন
>অনেক দিন পর গান শোনাতে আসছেন শিল্পী হায়দার হোসেন। আজ রাত সাড়ে ১০টায় প্রথম আলোর ফেসবুক পেজে 'ঘরে বসে শোনাব গান' অনুষ্ঠানে গাইবেন তিনি। সংগীতে হঠাৎ অনিয়মিত হয়ে পড়া, এখনকার জীবন—সবকিছু নিয়ে কথা হলো শিল্পীর সঙ্গে।
সংগীত থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লেন, কেন?
গানটা আমি শখে করি। আমার প্যাশন অন্য কিছু। তা ছাড়া গান লেখা, সুর করা, গাওয়ার পর যদি সেটাকে প্রোমোট আমাকেই করতে হয়, সেটা মেনে নেওয়া যায় না। আমি মনে করি, নিজের গান নিজে প্রোমোট করা শিল্পীর কাজ নয়। আমার গান আমার বাসায় পড়ে থাকে। 'ফাইস্যা গেছি'র সময় 'চ্যানেল ওয়ান' আমাকে প্রোমোট করেছিল। প্রোমোট করা মিডিয়ার কাজ, এটা আমরা পারি না। আমার পক্ষে মিডিয়ার কাছে গিয়ে বসে থাকা সম্ভব না। আর এখন গান করা একটা মুশকিলের ব্যাপার। এখন গান করলেই ভিডিও করতে হয়। এসব করতে চাইনি। মনে হয়েছে গান নিয়ে এত ঝামেলা কে করে!
আপনার লেখা ও সুর করা 'মন কি যে চায় বলো' এখনো বাঙালিকে রোমাঞ্চিত করে। আপনি কি গান লেখা ছেড়ে দিয়েছেন?
হ্যাঁ, গানটা গেয়েছিল আমার ব্যান্ড উইনিং। আমি এ দলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, দলের নামটাও আমার দেওয়া। গান লেখা ছাড়িনি, গত মার্চেও একটা নতুন গান লিখেছি। গান আমি করতেই থাকি। একটা-দুইটা করে গান করে যাচ্ছি, বাইরে বের হই কম। মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ কম করি। তবে সুর করতে আলস্য লাগে।
ওই গানটার পর অনেক দিন আপনাকে পাওয়া যায়নি। কোথায় ছিলেন?
পড়াশোনা ও চাকরির জন্য যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশে দীর্ঘ সময় কাটাতে হয়েছে।
'ফ্যাইস্যা গেছি' অ্যালবামটা থেকে রয়্যালটি পেয়েছিলেন?
ওটাকে পাওয়া বলে না, অবশ্য আশা করাও ঠিক না। আমাদের দেশে এগুলো এখনো স্ট্যাবলিস্ট হয়নি। সবকিছু এক রকম চলবে, আপনি একা একা দৌড়াবেন, তো হবে না।
প্রোমোশন নিয়ে আপনি মনে হচ্ছে বেশ হতাশ। দায়িত্বটা তৃতীয় পক্ষকে দিয়ে দিলেও তো পারেন। এখন সুযোগটা বেড়েছে, কী বলেন?
প্রোমোশনের দায়িত্ব অনেককেই দিয়েছিলাম, কিন্তু কারও কাজই মনের মতো হয় না। বলে একটা, করে একটা। আমাদের দেশে এ ব্যাপারগুলোয় পেশাদারি তৈরি হয়নি। একজনকে কিছু একটা দিলাম, 'নাই' হয়ে গেল, আরেকজনকে দিলাম, 'নাই' হয়ে গেল। দেখা যায় আমার গান দিয়ে অন্য কিছুর প্রোমোশন হচ্ছে, আমি 'নাই' হয়ে গেছি। আমি এগুলো পছন্দ করি না। মনে হয়, এর চেয়ে ভালো গান না করা, নিজের মতো থাকা। আমরা যারা গান করি, তারা কেবল গানটাই করি। মার্কেটিং করা আমাদের কাজ না। ভালো গান নিয়ে কেউ এগোয় না। যে লেখক, সে কিন্তু এগোবে না, এগোতে হবে অন্য একটি পক্ষকে। আমাদের সেই পক্ষের লোকের অভাব।
কীভাবে সময় কাটাচ্ছেন?
ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ততা আছে। বাইরে যাওয়ার তো উপায় নেই, আপাতত ফোনে ফোনে কাজ করছি। বাসায় থাকি, স্ত্রীর সঙ্গে গল্প করি।
আজ কি নতুন কোনো গান শোনাবেন?
পুরোনো গানই শোনাব। নতুন গান করার মতো মন সব সময় থাকে না। গিটার বা হারমোনিয়াম নিয়ে বসতে ইচ্ছে করে না। এটা অবশ্য বয়সের কারণেও হতে পারে।