২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

'আই ওয়ার্ক ফর কেজিবি, বেবি'

বাসায় বসে দেখতে পারেন এ ছবিগুলো। ছবি: সংগৃহীত
বাসায় বসে দেখতে পারেন এ ছবিগুলো। ছবি: সংগৃহীত

যা ভাবছেন, তাই। শিরোনামের কথাগুলো এক স্পাই এজেন্টের। এমন ভাবাটাই স্বাভাবিক। কথাগুলো তো একটি গোয়েন্দা বা গুপ্তচর সংস্থার হয়ে কাজ করাকেই বোঝায়। কিন্তু দৃশ্যভেদে এই একটি বাক্যের নানান অর্থ হতে পারে। আর তা বোঝার জন্যই দেখতে হবে 'আন্না' ছবিটি।

আগেই বলে নিই, যতটা সহজ অ্যাকশন ছবি মনে করছেন, আন্না মোটেও তা নয়। ধুন্ধুমার মারপিট যেমন আছে, তেমনই আছে জিলাপির প্যাঁচ। সেই প্যাঁচ ছাড়াতে ছাড়াতে একসময় পুরো ছবিটিই হয়ে ওঠে একজন নারীর সংগ্রামের দৃশ্যপট। সেখানে একজন নারী স্পাই সব ছাপিয়ে লড়ছেন নিজের স্বাধীনতার জন্য, স্বাধীনভাবে বাঁচার জন্য। সেই সূত্রেই এসেছে প্রেম, এসেছে খুন। সব এড়িয়ে পাখির চোখ একটাই। আর তা হলো মুক্তি।

নাম ভূমিকায় দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন সাশা লাস। সব হারিয়ে ফেলা মানুষ, কারও মাথা বরাবর গুলি ছোড়া বা অন্যের স্বার্থের চক্করে পড়ে হাঁসফাঁস করা—সব চরিত্রেই তিনি সপ্রতিভ। খামতি খুব একটা চোখে পড়ে না। অন্য এজেন্টের চরিত্রে সাবলীল ছিলেন কিলিয়ান মারফি ও লুক ইভানস। তবে চরিত্রাভিনয়ে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিলেন হেলেন মিরেন। কখনো গুপ্তচরদের বজ্রকঠোর বস, কখনো লোভী কর্মকর্তা হয়ে উঠেছেন হেলেন। সবশেষে তিনি কী রইলেন? স্পাই নাকি সমব্যথী নারী? এটাই এই ছবির সবচেয়ে বড় ক্লাইম্যাক্স। শেষটায় কিছুটা ধোঁয়াশা আছে। আর সেই ধোঁয়াটে উপসংহারই হয়তো আপনাকে সবচেয়ে বড় চমক দেবে।

আন্না ছবিটির পরিচালনায় ছিলেন লুক ব্যাসন। চিত্রনাট্যও তাঁরই লেখা। গত বছর মুক্তি পাওয়া ছবিটি দেখতে সময় লাগবে প্রায় দুই ঘণ্টা।
প্রায় একই সময় খরচ করে দেখতে পারেন আরেকটি ভিন্নধর্মী স্পাই মুভি। নাম স্পাইডার ইন দ্য ওয়েব। ইসরায়েল, বেলজিয়াম ও যুক্তরাজ্যের যৌথ প্রযোজনায় ছবিটি তৈরি। ২০১৯ সালের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম মুক্তি পায় ছবিটি।

ছবিটির মূল চরিত্র একজন ইসরায়েলি স্পাইয়ের। যাঁর কিনা বেজায় বয়স হয়েছে। জেমস বন্ডের মতো কথায় কথায় দৌড়ঝাঁপ বা হাত-পা চালানোর অবস্থা তাঁর নেই। এই চরিত্রে দারুণ মানিয়ে গেছেন অভিজ্ঞ অভিনেতা বেন কিংসলে। পুরো ছবিতেই অত্যন্ত সংযমী অভিনয় করেছেন বেন। ছবিতে পরিচয় গোপন করে দীর্ঘ গুপ্তচর জীবন কাটিয়েছেন তিনি। সবকিছু ভালোই চলছিল। হুট করেই গায়ে লেগে গেল বিশ্বাসভঙ্গের স্টিকার। এরপরই শুরু মূল গল্প।

ফাঁদে পড়া একজন গুপ্তচরের ভূমিকায় দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন বেন কিংসলে। এই ছবিতে চোখ ধাঁধানো মারপিট নেই। উঁচু ভবন থেকে লাফিয়ে পড়া, গাড়ি উল্টে যাওয়া বা গাড়িদৌড়ে এগিয়ে থাকার উত্তেজনা নেই। তবে চমক আছে।

বেন-এর প্রেমিকার চরিত্রে আছেন লাস্যময়ী মণিকা বেলুচ্চি। রুপালি পর্দায় নিয়মিত না এলেও অভিনয়ে শান যে এখনো আগের মতোই আছে, তা দেখিয়ে দিয়েছেন তিনি। ওদিকে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে আছেন ইপাই তাররান। ইসরায়েলের এই অভিনেতা আছেন বয়স্ক গুপ্তচর বেনকে দেখভালের দায়িত্বে। কিন্তু সেই সম্পর্কেও জটিলতা আছে। নিছক সিনিয়র-জুনিয়রের সম্পর্ক তা নয়। আর সম্পর্কের ভেতরের সেই পারিবারিক সূত্রই কখনো বয়সী গুপ্তচরের মাথায় বন্দুক ঠেকায়, আবার কখনো দুই হাতে আগলে রাখে।

গুপ্তচরবৃত্তিতে দক্ষ হলেও, মানুষ বেনের হিসাবে ভুল হয়। সেই ভুলের এক অংশে ধোঁকাও ছিল। হিসাব কি শেষতক মেলে?

এই প্রশ্নের উত্তর পেতে দেখে ফেলতে পারেন স্পাইডার ইন দ্য ওয়েব। সত্য ঘটনা অবলম্বনে তৈরি এক অন্য ধরনের থ্রিলার ছবির স্বাদ পাবেন এটুকু বলাই যায়।

কেজিবি হলো, মোসাদ হলো, এবার সিআইএ না এলে ঠিক জমছে না! ২০১২ সালে মুক্তি পাওয়া ছবি আরগো দেখতে পারেন। ইরান থেকে ৬ আমেরিকানকে লুকিয়ে স্বদেশে ফিরিয়ে নেওয়ার অভিযানে নামে এক সিআইএ এজেন্ট। টান টান উত্তেজনার এই ছবি আপনার মনে শেষ পর্যন্ত 'কী হয়', 'কী হয়' ভাব জিইয়ে রাখবে। সুপরিচিত অভিনেতা বেন অ্যাফ্লেক অভিনয়ের পাশাপাশি এই ছবিতে পরিচালনাও করেছেন এবং ক্যামেরার পেছনেও বেশ ভালোভাবেই উতরে গেছেন তিনি। অন্যান্য পুরস্কারের পাশাপাশি 'আরগো' তিনটি অস্কার ট্রফিও জিতে নিয়েছিল।
বাসায় বসে দেখেই ফেলুন তবে ছবিগুলো। হারিয়ে যান গুপ্তচরদের দুনিয়ায়!