বাতাসে জেনিফার ও ব্রাড পিটের প্রেম
করোনার দিনেও হলিউডের বাতাস বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে প্রেমের সুবাস। মার্কিন মিডিয়ায় চলছে সেই প্রেমের চর্চা। কারণ, প্রেমিক ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন হলিউড’ ছবিতে অভিনয় করা সদ্য অস্কারজয়ী ব্রাড পিট। আর প্রেমিকা ‘ফ্রেন্ডস’খ্যাত জেনিফার অ্যানিস্টোন।
পুরোনো সব ভুলে আবার নতুন করে একসঙ্গে ঘর বাঁধতে চান জেনিফার অ্যানিস্টোন ও ব্রাড পিট। ওকে! ম্যাগাজিন শিরোনাম করেছে, ‘জেন আর ব্রাড ভবিষ্যৎ দেখছেন।’ এখানেই বলা হয়েছে, ‘এই জুটি শিগগির তাঁদের প্রেমের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন। তাঁরা দুজন দুজনের খেয়াল রাখছেন। এমনকি “আই ডু” বলে ঘর বাঁধার কথাও ভাবছেন তাঁরা।’
জেনিফার অ্যানিস্টোনের মুখপাত্র নিশ্চিত করেছে, তাঁরা দুজনে দুজনকে সময় দিচ্ছেন।
অবশ্য ভক্তরা ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি ২৬তম স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড অ্যাওয়ার্ডের (এসএজি) তারাঝলমলে রাতেই টের পেয়েছিলেন। কেননা, প্রেম এড়ায়নি ক্যামেরার চোখ। লালগালিচায় পিট আর অ্যানিস্টোনের দুষ্টু মিষ্টি রসায়ন ধরা পড়েছে ক্লিক ক্লিকে।
এসএজির রাতে সেরা সহ–অভিনেতার পুরস্কারটি শোভা পেয়েছে ব্রাড পিটের হাতে। জয়ীর বক্তব্যে তিনি সামনে বসা অ্যানিস্টোনের সঙ্গে পুরোনো সম্পর্ক নিয়ে মজা করতে ছাড়েননি। বলেছেন, ‘সত্যি বলতে কি, আমার জন্য এই চরিত্র কঠিন ছিল। কারণ, আমি এমন এক পুরুষ, যে মাতাল হয়ে শার্ট খোলে। কিন্তু স্ত্রীর সঙ্গে কখনো খারাপ আচরণ করেনি।’
ব্রাড পিটের বক্তব্য শুনে সবাই হেসেছে, হাততালি দিয়েছে। ক্যামেরা খুঁজে খুঁজে সাবেক স্ত্রী জেনিফার অ্যানিস্টোনের প্রতিক্রিয়া দেখেছে। সেই রাতে অ্যানিস্টোনের হাতেও উঠেছে পুরস্কার। ‘দ্য মর্নিং শো’–এর জন্য তিনি ড্রামা সিরিজ বিভাগে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতেছেন।
তাঁদের দুজনের দেখা হয়েছিল ২৬ বছর আগে, জনপ্রিয় সিটকম শো ‘ফ্রেন্ডস’–এর সেটে। সেখান থেকে বন্ধু হয়েছিলেন তাঁরা। এভাবে পেরিয়ে গেল ৪ বছর। তখন পিট অস্কারজয়ী অভিনেত্রী গিনেথ প্যালট্রোর প্রেমে মজেছিলেন। অবশ্য এর আগেও পিট সহকর্মী রবিন গিভেন্স ও জিল স্কোলেনের সঙ্গে চুটিয়ে প্রেম করেছিলেন।
১৯৯৮ সালে পিট ও অয়ানিস্টোন দুজনের ম্যানেজার ঘোষণা দিলেন, প্রেম করছেন এই জুটি। ২ বছর প্রেমের পর ২০০০ সালে জেনিফার অ্যানিস্টোন আর ব্রাড পিটের বিয়ে, হলিউডের ওয়েডিং অ্যালবামের আইকনিক রাজকীয় বিয়েগুলোর একটি। তারপর সুখে শান্তিতে তাঁরা বসবাস করতে থাকলেন। এভাবে কাটল পাঁচ বছর। কিন্তু তারপর বিচ্ছেদ। ২০০৫ সালের জানুয়ারিতে তাঁরা ঘোষণা দেন, বিচ্ছেদ চাইছেন তাঁরা। তারপরের নাম অ্যাঞ্জেলিনা জোলি।
২০০৫ সালে মিস্টার অ্যান্ড মিসেস স্মিথের সেট থেকে তাঁদের প্রেম। এক ফটোসাংবাদিক পিট, জোলি আর জোলির দত্তক নেওয়া সন্তান ম্যাডক্সকে কেনিয়ার সমুদ্রতীরে ক্যামেরাবন্দী করে ফেলেন। তার কিছুদিন পর জোলি জানান, তিনি পিটের সন্তানের মা হতে যাচ্ছেন। ২০০৬ সালের ২৭ মে পিট জানান, তিনি কন্যাসন্তানের বাবা হয়েছেন, নাম শিলোহ। এই শিলোহ এখন করোনার দিনগুলোতে মা নয়, বাবার কাছে যেতে চাচ্ছে।
দীর্ঘ ৭ বছর এক ছাদের নিচে থাকার পর ২০১২ সালে বাগদান হয় এই জুটির। ২০১৪ সালে ছয় সন্তানের জোরাজুরিতে বিয়ে করলেন এই জুটি। আর ২০১৬ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর বিচ্ছেদের আবেদন করেন জোলি। ২০১৯ সালের এপ্রিলে অফিশিয়ালি আলাদা হন তাঁরা। সব চুকেবুকে গেলে সিঙ্গেল ব্রাড পিট বলেছিলেন, জোলি নয়, অ্যানিস্টোনের সঙ্গেই বেশি সুখে ছিলেন তিনি।
জোলি বিচ্ছেদ প্রক্রিয়ার সময় তাঁর আইনজীবীকে বলেছিলেন, পিট নাকি তাঁর সন্তানদের গায়ে হাত তুলেছিলেন। জোলির এই বিবৃতি মিডিয়ায় ঝড় তুললে পিটের বর্ম হয়ে এগিয়ে এসেছিলেন জেনিফার অ্যানিস্টোন। রীতিমতো সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন, পিট বাচ্চার গায়ে হাত তোলার মতো মানুষ নন। পিট যখন বিচ্ছেদের পর সন্তান হারানোর দুঃখে কাতর, তখনো পিটকে কাঁধ দিয়েছেন অ্যানিস্টোন। আর সব ভুলে আরও একবার তাঁরা নিজেদের সুযোগ দেবেন। পুরোনো সব কথা মুছে নতুন করে নিজেদের গল্প লিখতে চান এই জুটি। নতুন রাস্তা ধরে আরও কিছুটা পথ হাঁটতে চান তাঁরা।