বামবা নিয়ে অভিযোগ মাকসুদের, সভাপতি বললেন ভিত্তিহীন
বাংলাদেশের ব্যান্ডগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ মিউজিক্যাল ব্যান্ডস অ্যাসোসিয়েশন (বামবা) নিয়ে ফেসবুকে বেশ কয়েক দিন ধরে উত্তপ্ত মন্তব্য করছেন এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শিল্পী মাকসুদুল হক। বামবার বর্তমান কমিটিকে ‘অবৈধ ও বেআইনি’ অভিহিত করে নির্বাহী কমিটি থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
১৫ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় বামবার সাধারণ সভা। পরদিন ১৬ মার্চ নির্বাহী কমিটির বৈঠকে ইস্তফা দিয়েছেন মর্মে ফেসবুকে একটি দীর্ঘ পোস্ট লেখেন ‘মাকসুদ ও ঢাকা’ ব্যান্ডের দলনেতা মাকসুদুল হক। কিন্তু কেন? এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নৈতিক বিবেচনায় বেআইনি, অবৈধ ও নীতিলঙ্ঘনকারী কোনো কিছুর সঙ্গে যুক্ত থাকা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।’
বামবা নিয়ে হতাশ মাকসুদ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আজ অবধি প্রতিটি কাজ বাস্তবায়ন করতে গেলে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয় আমাদের, যেখানে অধিকাংশ সদস্য আর দশটা কনসার্ট বা ইভেন্টের মতোই কেবল পারফর্ম করতে আসে এবং পারফরম্যান্স শেষে চলে যায়।’ তাঁর দাবি, বামবা তার গঠনতন্ত্র কমই মেনে চলে। এ ছাড়া তিনি বর্তমান নির্বাহী কমিটির পদত্যাগও দাবি করেছেন।
মাকসুদের প্রস্তাবগুলোর মধ্যে ছিল, একটি অ্যাডহক নির্বাচন স্টিয়ারিং কমিটি করে পক্ষপাতহীন নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি। বামবার বাইরের একজন নির্বাচন কমিশনারের পদ সৃষ্টি, যিনি শুধু প্রয়োগযোগ্য নির্বাচনী আচার-আচরণ ও বিধিমালা প্রণয়নের দায়িত্ব পালন করবেন। প্রতিটি ইওজিএমের ক্ষেত্রে এই পদ কার্যকর করা। সদস্য ব্যান্ডগুলোকে নির্বাচনের আগে বকেয়া চাঁদার কমপক্ষে ৫০ শতাংশ পরিশোধ করা।
মাকসুদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বর্তমান সভাপতি সংগঠনটিকে কুক্ষিগত করে রেখেছেন। সংগঠনটি নিয়মিত সভা করে না, কোনো ই-মেইল নেই, ঠিকানা নেই, ফোন নম্বর নেই। সদস্যদের প্রতি তাদের কোনো সুবিচার নেই, আমাকে পর্যন্ত হুমকি দেওয়া হয়। ব্যান্ডসংগীত আমাদের কঠোর সাধনার জায়গা। সবার কথা ভেবেই আমরা এ সংগঠন করেছিলাম। শুধু নিজের দল নিয়েই বসে ছিলাম না। এখন এই সংগঠন নিয়ে কারও ভাবনা বা পরিকল্পনা নেই। কে কাকে কোণঠাসা করবে, লেজুড়বৃত্তি করবে, সেটা নিয়েই ব্যস্ত।’
মাকসুদের প্রতিক্রিয়ায় বামবার বর্তমান সভাপতি হামিন আহমেদ স্বাক্ষরিত একটি বিবৃতি দিয়েছে সংগঠনটি। সেখানে মাকসুদের বক্তব্যের নিন্দা করে সেগুলোকে মনগড়া, বিভ্রান্তিমূলক ও মানহানিকর বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এমনকি বর্তমান কার্যনির্বাহী পরিষদ সম্পর্কে অবৈধতার অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও অজ্ঞতা বলে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বিবৃতিতে জানানো হয়, এ বছর বামবার নির্বাচন নিয়ে ৯ মার্চের সভার কোনো সিদ্ধান্তে মাকসুদ দ্বিমত পোষণ করেননি।
বামবার কাছে এর সদস্যদের প্রত্যাশা নিয়ে কথা বলেন ব্যান্ডদল নেমেসিসের ভোকাল মো. জোহাদ রেজা চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘অনেক বেশি শো পাব, সেই আশা নিয়ে আমরা বামবায় যুক্ত হইনি। আমরা একসঙ্গে এগিয়ে যেতে চেয়েছি, দেশের ব্যান্ডসংগীতকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চেয়েছি। এ কাজে আমাদের তরুণদের আরও সক্রিয় হওয়া দরকার। আমরা এখন বড়দের পাশাপাশি দায়িত্ব নিতে পারি, ব্যান্ডসংগীতের জন্য ভূমিকা রাখতে পারি।’
১৯৮৭ সালে বন্যার্তদের সাহায্যের উদ্দেশ্যে কনসার্টের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করে বামবা। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন তৎকালীন ফিডব্যাক ব্যান্ডের ভোকাল মাকসুদুল হক। প্রথম যাত্রায় ১৪টি ব্যান্ড দল সদস্য ছিল।