সুরের ধারার পৌষ উৎসবের আজ সমাপনী
পুতুলনাচ ও বায়োস্কোপে শিশু-কিশোর আর তাদের মায়েদের ভিড়। শিশুদের সঙ্গে তাঁরাও উদ্বেলিত। ছোটবেলায় দেখা বায়োস্কোপের স্মৃতি আওড়াচ্ছিলেন কেউ কেউ। আছে নাগরদোলা থেকে শুরু করে চরকি, সার্কাস। গ্রামীণ মেলার আদলে লোকজ নানা পণ্য—মুড়ি, মুড়কি, পিঠা, নকশি কাপড়, বাদ্যযন্ত্র আর খেলনার পসরা সাজানো। মূল মঞ্চে দলীয় কণ্ঠে চলছিল রবীন্দ্রসংগীত। এ হচ্ছে পৌষ উৎসব-১৪২৬।
সব মিলে যেন বেজে ওঠে সেই সুর—‘পৌষ তোদের ডাক দিয়েছে, আয়রে চলে আয় আয় আয়’। কারণ, পৌষের আবাহনেই সাজানো হয়েছে মেলাটি। শহুরে জীবনে গ্রামীণ আমেজ তুলে ধরা মেলাটির আয়োজক সংগীত সংগঠন সুরের ধারা। গতকাল রোববার থেকে রাজধানীর লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটি স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে শুরু হয় দুই দিনব্যাপী পৌষ উৎসব। লোকজ নাচ-গান, আবৃত্তি, রবীন্দ্র ও নজরুলসংগীতসহ নাটকে বহুমাত্রিক সাংস্কৃতিক পরিবেশনয় সাজানো হয়েছে এ উৎসব।
সম্মেলক সংগীতের সুরে প্রথম দিনের অনুষ্ঠানের সূচনা জয়। সুরের ধারার শিল্পীরা গেয়ে শোনান ‘মাটি তোদের ডাক দিয়েছে আয়রে চলে, আয় আয় আয়’। এরপর শুরু হয় উৎসবের উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা। প্রদীপ প্রজ্বালনের মাধ্যমে উৎসব উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সুরের ধারার অধ্যক্ষ ও প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা বলেন, ‘পৌষে পাকা ধানে বাঙালির গোলা ভরে ওঠে। নতুন চাল দিয়ে পিঠা-পায়েস বানিয়ে সবাই মিলে উৎসব করে খাওয়াদাওয়া করা হয়। বাঙালি সমাজের উৎসবের সেই আবহকে সৃষ্টি করতেই আমাদের এই পৌষ মেলার আয়োজন। যাতে এই এলাকা ও আশপাশের মানুষ সবাই মিলিত হয়ে শীতের এই আমেজ উদ্যাপন করতে পারেন। মানুষে মানুষে সম্পর্ক আরও গভীর হয়, সুন্দর হয়। পারস্পরিক মিলন আনন্দে তাদের জীবন ভরে ওঠে, প্রকৃতি ও সমাজ সমৃদ্ধ হয়। এই মেলায় আমরা বাংলার নিজস্ব ঐতিহ্যকে তুলে ধরেছি।’
উৎসবের এ দুই দিন নানান আচার–অনুষ্ঠানের পাশাপাশি, পিঠাপুলি, সাংস্কৃতিক আয়োজন থাকছে। আজ সোমবার বিকেল ৪টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত চলবে উৎসব। সন্ধ্যায় সেখানে উদ্যাপিত হবে রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার জন্মদিন। পাঁচ বছর ধরে এ আয়োজন করে আসছে সুরের ধারা।