অ্যাম্ফিথিয়েটারে শত তরুণের কণ্ঠে দেশের গান
অ্যাম্ফিথিয়েটারে দর্শকের আসন যেন প্রমোদভ্রমণের আনন্দ দেয়। নাচ, গান, নাটক দেখতে বসলে হয়তো চোখ চলে যাবে হাতির ঝিলের ওপর থেকে ভেসে যাওয়া নৌকার দিকে। বাংলাদেশ ডিজিটাল হয়েছে। রাজধানীর ঝিলের জলে নৌকাগুলোতে লেগেছে লাল–নীল–সবুজ এলইডি বাতি। আর বাংলাদেশের বুকজুড়ে আনন্দ অনাবিল। জাতির জনকের জন্মশতবর্ষের আনন্দের শুভক্ষণের অপেক্ষায় সবাই।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হাতির ঝিলে ছিল বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপনের ক্ষণগণনার আরেকটি আয়োজন। অ্যাম্ফিথিয়েটার মঞ্চে শতাধিক তরুণ শিল্পীর কণ্ঠে গান ও নৃত্যশিল্পীদের কোরিওগ্রাফিতে উদ্দীপ্ত হন হাজারো অতিথি–দর্শক। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের আয়োজনে ‘সময় এখন আমাদের, সময় এখন বাংলাদেশের’ শিরোনামে একটি আনন্দ উদ্যাপনের আয়োজন করেছিল গানবাংলা চ্যানেল। সেখানে ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে’ গানটি গেয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও সুরের ধারার শিল্পীরা। তাঁর সঙ্গে যন্ত্রসংগীতে সংগত করেন তাপস অ্যান্ড ফ্রেন্ডস। সুজিত মোস্তফা গেয়ে শোনান ‘ও আমার দেশের মাটি’ গানটি।
আনন্দ আয়োজন বলে এখানে কোরিওগ্রাফি ছিল অনেকগুলো। উদ্দীপনাজাগানো বেশ কয়েকটি নতুন দেশের গানের সঙ্গে নাচ করেছেন আধুনিক নাচের ঝাঁক ঝাঁক শিল্পী। তাঁদের মধ্যে ছিলেন সিনেমার তারকা বিদ্যা সিনহা মিম, নুসরাত ফারিয়া, তমা মির্জা। ‘এগিয়ে চলো আবারো জয় বাংলা বলে’, ‘ও পৃথিবী এবার এসে বাংলাদেশ নাও চিনে’ গানগুলোর সঙ্গে চোখধাঁধানো এসব কোরিওগ্রাফিতে ছিল চমকজাগানো আলোর খেলা। ফাঁকে ফাঁকে বড় পর্দায় দেখানো হয় বাংলাদেশের অভ্যুদয় নিয়ে তথ্যচিত্র।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, বাঙালি জাতি সৌভাগ্যবান যে বঙ্গবন্ধুর মতো একজন মানুষ এই ভূখণ্ডে জন্মেছিলেন। তিনি আমাদের স্বাধীনতা ও একটি ভূখণ্ড দিয়ে গেছেন। যে কাজটি তিনি শেষ করে যেতে পারেননি, সোনার বাংলাদেশ গড়ার তাঁর সেই স্বপ্নপূরণে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন তাঁর সুযোগ্য কন্যা। আমরা সবাই যদি এক হয়ে দেশ গঠনে কাজ করি, তাহলে শহীদদের রক্তের ঋণ কিছুটা হলেও শোধ হবে। এ কাজে মনোযোগ ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করে যেতে হবে তরুণদের। জাতির পিতা যেন হারিয়ে না যান, সেই দায়িত্ব তরুণসমাজের।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে শতাধিক শিল্পী মিলে গেয়েছেন পাঁচ গানের একটি মেডলি। গানগুলো ছিল ‘শোনো একটি মুজিবরের’, ‘ধনধান্য পুষ্পভরা’, ‘তাকদুম তাকদুম’, ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ ও ‘আমরা করব জয়’। গানগুলো তৈরি হয়েছে পাঁচজন সংগীত পরিচালকের তত্ত্বাবধানে। এতে ভারত থেকে যুক্ত হয়েছেন আনন্দম শিবমনি। এ আয়োজনের সংগীত পরিচালক ছিলেন গানবাংলার ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৌশিক হোসেন তাপস। দুই ঘণ্টার অনুষ্ঠানটি দেশের ৪৯১টি উপজেলায় এলইডি পর্দায় দেখানো হয়। পাশাপাশি এটি সম্প্রচার করে বিটিভি ও গানবাংলা। অনুষ্ঠানে গান করেন তরুণ শিল্পীদের প্রায় সবাই। একক কণ্ঠে গান শোনান সামিনা চৌধুরী, হৃদয় খান, আরিফিন রুমী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মনোয়ার আহমেদ। উপস্থিত ছিলেন গানবাংলার চেয়ারপারসন ফারজানা মুন্নী, তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ প্রমুখ।