নিজেকে নির্দোষ দাবি অনু মালিকের, খেপেছেন সোনা
বলিউডের জনপ্রিয় সুরকার, সংগীত পরিচালক ও সংগীতশিল্পী অনু মালিক দাবি করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার যেসব অভিযোগ উঠেছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তাঁর সম্মান ক্ষুণ্ন করার জন্য, তাঁর কাজকে কলঙ্কিত করার জন্য এবং তাঁর আয়-রোজগার বন্ধ করার জন্য কিছু মানুষ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তা করছে। ১৪ নভেম্বর টুইটারে লেখা সেই বিবৃতিতে আরও লিখেছেন, তিনি দুই কন্যা সন্তানের বাবা। তিনি এ ধরনের অপরাধ করতে পারেন না। তবে এ সময়ে অনু মালিকের পাশে যাঁরা দাঁড়িয়েছেন, তাঁদের ধন্যবাদ জানান তিনি।
নিজেকে পুরোপুরি নির্দোষ দাবি করে অনু মালিক লিখেছেন, ‘আমি জানি না আর কত অপবাদ বা নোংরামি আমাকে বা আমার পরিবারকে সহ্য করতে হবে। আমার দুই মেয়ের ওপর প্রবল মানসিক চাপ পড়ছে।’
তাঁর এই পোস্ট দেখে খেপেছেন বলিউডের আরেক সংগীতশিল্পী সোনা মহাপাত্র। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘টিভি চ্যানেলের এ ধরনের অনুষ্ঠানে আসার কোনো অধিকার আপনার নেই। আপনি কোনো রোল মডেল নন। আপনি সরে দাঁড়ান। আর অবশ্যই কোনো যৌন-নেশামুক্তি কেন্দ্রে যান। কোনো মানসিক চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসা নিন।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘আপনি বলছেন অভিযোগগুলো সত্যি নয়! একাধিক মহিলা একই অভিযোগ করেছেন। আপনার জন্য তাঁদের মানসিক অবস্থা কী হয়েছে ভাবতে পারছেন? এত বছর ধরে তাঁদের কথা একবারও ভেবেছেন? তাঁরা এবং তাঁদের পরিবারের মানুষজন যখন আপনাকে টিভিতে দেখেন, তখন তাঁদের মানসিক অবস্থা কেমন হয়, ভেবে দেখেছেন?’
‘পিঙ্কভিলা’ গত বছর ২১ অক্টোবর জানিয়েছে, যৌন হেনস্তার অভিযোগ ওঠার পর অনু মালিককে ‘ইন্ডিয়ান আইডল ১০’ প্রতিযোগিতার বিচারকের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয় অনুষ্ঠানটির আয়োজক সনি এন্টারটেইনমেন্ট টেলিভিশন চ্যানেল কর্তৃপক্ষ। তখন জানানো হয়, অনু মালিকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ প্রতিযোগিতার কোনো কাজের সঙ্গে তিনি সম্পৃক্ত থাকতে পারবেন না। আর অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে সনি এন্টারটেইনমেন্ট টেলিভিশন চ্যানেলে শুরু হয়েছে গান নিয়ে রিয়েলিটি শো ‘ইন্ডিয়ান আইডল ১১’। এই প্রতিযোগিতায় আবার বিচারক হয়েছেন অনু মালিক। সঙ্গে আছেন বিশাল দাদলানি ও নেহা কাক্কর। উপস্থাপনা করছেন আদিত্য নারায়ণ। বিচারক হিসেবে অনু মালিক আবার নিয়োগ পাওয়ায় খেপেছেন সোনা মহাপাত্র।
‘হ্যাশট্যাগ মি টু’ আন্দোলন শুরু হওয়ার পর জনপ্রিয় এই সুরকার, সংগীত পরিচালক ও সংগীতশিল্পীর বিরুদ্ধে প্রথম যৌন হেনস্তার অভিযোগ তোলেন সোনা মহাপাত্র ও শ্বেতা পণ্ডিত। তাঁরা দুজনই সংগীতশিল্পী। অনু মালিকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ করে সোনা মহাপাত্র বলেছেন, ‘লোকটি বিকৃত মানসিকতার।’ আর শ্বেতা পণ্ডিত বলেছেন, ‘২০০১ সালে আমার বয়স ছিল ১৫। স্টুডিওতে গান কণ্ঠে তোলার সময় অনু মালিক আমাকে কিস করার জন্য চাপ দেন।’
এরপর অনু মালিকের বিরুদ্ধে নতুন করে যৌন হেনস্তার অভিযোগ সামনে এনেছেন বলিউডের আরেক সংগীতশিল্পী নেহা ভাসিন। ১৫ বছর আগের একটি ঘটনা সামনে এনে টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘তখন খুব স্ট্রাগল করছিলাম। আমার বয়স ছিল ২১। এক স্টুডিওতে আমার গানের একটি সিডি তাঁকে দিতে গিয়েছিলাম, আমার গান শুনে যদি তিনি একটু সুযোগ দেন। তখন অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। আমার সামনে সোফায় শুয়ে তিনি যে ধরনের কথা বলছিলেন, তাতে আমি অস্বস্তি বোধ করেছিলাম। তিনি আমার চোখ নিয়ে আপত্তিকর নানা মন্তব্য করেন। তখন তাঁর সামনে থেকে রীতিমতো আমাকে পালাতে হয়েছিল।’