লালগালিচায় সাদাকালো প্রিয়াঙ্কা
১৩ সেপ্টেম্বর। হলিউড ও বলিউড তারকা প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার জন্য বছরের আরেকটি বিশেষ দিন। কারণ, গতকাল শুক্রবার কানাডার টরন্টো চলচ্চিত্র উৎসবে তাঁর ‘দ্য স্কাই ইজ পিংক’ ছবির ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হলো। প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ছাড়াও প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন ছবির আরেকজন অভিনেতা ফারহান আখতার, পরিচালক সোনালি বোস আর যাঁর জীবনকে ঘিরে ছবির গল্প, সেই আয়শা চৌধুরীর মা অদিতি চৌধুরী। ছবিতে অদিতি চৌধুরীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া।
প্রিয়াঙ্কা এবার টরন্টো চলচ্চিত্র উৎসবের লালগালিচা মাতিয়েছেন সাদা আর কালোয় মেশানো গাউন পরে। লালগালিচায় প্রিয়াঙ্কা চোপড়া একটা পোশাক পরবেন আর তার কোনো বিশেষত্ব থাকবে না, তা–ই কি হয়! সারা গায়ে ঢেউখেলানো অসংখ্য ঝালর গাউনটিকে বিশেষ করেছে। আর চুলগুলোকে খোলা রেখে দিয়েছেন অপার স্বাধীনতা। এই সাদামাটা সাজেই তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ।
ফারহান আখতারের পরনে ছিল হালকা গোলাপি শার্ট, গাঢ় নীল রঙের স্যুট ও টাই। সোনালি বোস পরেছেন দেশি পোশাক, গোলাপি শাড়ি। তবে এই অনুষ্ঠানে ফারহান আখতার তাঁর প্রেমিকা শিবানী দাণ্ডেকরকে আনতে ভোলেননি। পর্দায় আয়শা চৌধুরীর বাবা ফারহান আখতার বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আয়শার সত্যিকারের বাবা-মা যে পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে গিয়েছেন, সেটা সত্যিই সাহসের। এই বাবা–মা অন্যদের শক্তির উদাহরণ।’
ছবির প্রদর্শনী শেষে এই ছবির মূল অভিনয়শিল্পী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া এএফপিকে বলেছেন, ‘এক দিকে এই ছবির শুটিং চলছিল, আরেক দিকে ছিল আমার বিয়ের তোড়জোড়। ছবিতে অদিতি চৌধুরী তাঁর মেয়েকে হারাচ্ছিলেন। তাই আমার জন্য পরিস্থিতিটা তখন একটু জটিল ছিল।’
সেই জটিল পরিস্থিতি সামলে সব ঠিকভাবে উতরে যাওয়ার কৃতিত্ব ভাগ করে নেন ওই সময়ের প্রেমিক আর বর্তমান জীবনসঙ্গী নিক জোনাসের সঙ্গে। বললেন, ‘নিক আমাকে তখন মানসিকভাবে অনেক শক্তি জুগিয়েছে।’ এর আগে প্রিয়াঙ্কা জানিয়েছেন, যখন এই ছবির শেষ দৃশ্যের শুটিং চলছে, তার দুই দিন পর প্রিয়াঙ্কা আর নিকের বিয়ে। সেই দৃশ্য দেখে নিক নাকি একটা শিশুর মতো ফুঁপিয়ে কেঁদেছেন।
‘দ্য স্কাই ইজ পিংক’ ছবির পুরো দলের জন্য সুখবর হলো, ছবিটি টরন্টো চলচ্চিত্র উৎসবে দর্শক পছন্দ করেছে। জানিয়েছে, এটা নাকি মোটেই বলিউড ধাঁচের না। কিন্তু এ মন্তব্য ভালো লাগেনি প্রিয়াঙ্কার। এএফপিকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, মানুষ যে কেন এমন বলে! বলিউডে সব ধরনের ছবি হয়।
ছবিটি দিল্লির মেয়ে আয়শা চৌধুরীর ওপর, যিনি পালমোনারি ফাইব্রোসিস রোগে আক্রান্ত হন মাত্র ১৩ বছর বয়সে। ফুসফুসের দুরারোগ্য এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি তিন থেকে পাঁচ বছর বাঁচেন। কিন্তু আয়শা চৌধুরী এই রোগের সঙ্গে লড়াই করেছেন ছয় বছর। এই সময়ে তিনি হাল ছেড়ে দেওয়া অসংখ্য মানুষকে বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। ২০১৫ সালের ২৩ জানুয়ারি তাঁর আত্মজীবনীমূলক বই ‘মাই লিটল এপিফ্যানিজ’ প্রকাশিত হয়। আর তার পরদিন মারা যান আয়শা চৌধুরী। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৮।
ছবিটি শেষ হয় সত্যিকারের আয়শা চৌধুরীর ছবি আর ভিডিও দেখিয়ে। আগামী ১৯ অক্টোবর সব দর্শক বড় পর্দায় দেখতে পারবে আয়শা চৌধুরী আর তাঁর পরিবারের সংগ্রাম।