ভূপেন হাজারিকাকে অসম্মান করে বিপদে জুবিন গার্গ
ভারতের প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী প্রয়াত ভূপেন হাজারিকাকে এবার ভারতের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ‘ভারতরত্ন’ দেওয়া হচ্ছে। ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় নয়াদিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে তা জানানো হয়। এদিকে ভূপের হাজারিকাকে অসম্মান করে মন্তব্য করেছেন ভারতের এ সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী আসামের জুবিন গার্গ। সম্প্রতি তিনি অসমিয়া ভাষায় একটি গান গেয়েছেন। গানটির প্রথম লাইন ‘পলিটিকস ন করিব বন্ধু’। গানটি গাওয়ার আগে প্রয়াত ভূপেন হাজারিকাকে নিয়ে তিনি আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। তাঁর মন্তব্য শুনে খেপেছেন আসাম কিষান মোর্চার ভাইস প্রেসিডেন্ট সত্যরঞ্জন বোরাহ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তিনি একটি পোস্ট দিয়েছেন। তাতে জুবিন গার্গের আচরণের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এরপর জুবিন গার্গের বিরুদ্ধে হুজাই জেলার লঙ্কা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি আইনেও তাঁর বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা হয়েছে।
সত্যরঞ্জন বোরাহ লিখেছেন, ‘জুবিন গার্গের এমন আচরণ মেনে নেওয়া যায় না। আসামের সুস্থ ও স্বাভাবিক সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রে এই ধরনের আচরণ মোটেই বাঞ্ছনীয় নয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় স্তরে জুবিন যথেষ্ট জনপ্রিয়। আসামের তরুণ প্রজন্মের কাছে তিনি একজন আদর্শ। তাঁর প্রচুর ভক্ত। এ ক্ষেত্রে জুবিনের এসব আপত্তিকর মন্তব্য তরুণ প্রজন্মের মধ্যে নেতিবাচক বার্তা ছড়াবে।’
পাশাপাশি সত্যরঞ্জন বোরাহ আরও লিখেছেন, ‘আসামের গর্ব প্রয়াত ভূপেন হাজারিকাকে যে ধরনের শব্দ ব্যবহার করে জুবিন গার্গ আক্রমণ করেছেন, তা শুধু অসাংবিধানিক নয়, অসামাজিকও বটে।’
বছর দুয়েক আগে আসামের বিধানসভা নির্বাচনের সময় বিজেপির হয়ে গান গেয়েছিলেন জুবিন গার্গ। গানে গানে সবার কাছে বিজেপির জন্য ভোট চেয়েছিলেন। এ ছাড়া বিজেপি নির্বাচনী প্রচারণায় বলিউডের জনপ্রিয় এই সংগীতশিল্পীর কণ্ঠও ব্যবহার করেছে। নির্বাচনে বিজেপি জয়ী হয়। কিন্তু এবার বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের কাছে তাঁর সেই ভোট ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করেছেন জুবিন গার্গ। এর আগে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালকে একটি চিঠি দিয়েছেন তিনি। তাতে তিনি লিখেছেন, ‘আসামের জাতি আজ বিপন্ন।’ সেই চিঠি হাতে নিয়ে ৮ জানুয়ারি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি ছবি তিনি পোস্ট করেছেন। এ ছাড়া বিষয়টি নিয়ে তিনি ফেসবুক লাইভে এসেছেন।
জানা গেছে, ভারতের লোকসভায় বিজেপির আনা নাগরিকত্ব বিল পাস হওয়ায় তিনি এই প্রতিক্রিয়া জানান। তবে তিনি মনে করেছেন, লোকসভায় বিল পাস হলেও আসামের মুখ্যমন্ত্রী তাতে আপত্তি জানাতে পারতেন। কিন্তু তিনি এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেননি।