বিটিএস ছাড়তেও চেয়েছিলাম: আরএম

আরএমছবি: ইউনিসেফ
১০ পেরিয়ে আজ ১১ বছরে পা দিয়েছে আলোচিত ব্যান্ড বিটিএস। এ উপলক্ষে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বিটিএসের দলনেতা আরএমের বক্তব্যের অংশবিশেষের ভাষান্তর করা হলো—

আমি কিম নামজুন, বিটিএসের দলনেতা। অনেকে আমাকে আরএম নামে চেনেন। ২০১৭ সালের নভেম্বরে ইউনিসেফের সঙ্গে ‘লাভ মাইসেলফ’ ক্যাম্পেইনে যুক্ত হয়েছে বিটিএস। আমরা বিশ্বাস করি, নিজের প্রতি ভালোবাসাই সত্যিকারের ভালোবাসা। বিটিএসের অনুসারীরাও এই ক্যাম্পেইনের অংশ। শুরুতে আমি নিজেকে নিয়ে একটু বলতে চাই।
দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলের নিকটবর্তী শহর ইলসানে আমার জন্ম। জায়গাটি জলাধার, পাহাড়ঘেরা। সেখানে প্রতিবছর ফুলের উৎসব হতো। সাধারণ পরিবারের সন্তান হিসেবে আমার শৈশব আনন্দেই কেটেছে। তখন আমি অবাক চোখে তারাভরা আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। নিজেকে একজন সুপারহিরো হিসেবে কল্পনা করতাম, যেই সুপারহিরো পৃথিবীকে রক্ষা করবে।

বিটিএস
ছবি: এএফপি

এর মধ্যেই লোকে আমাকে নিয়ে কী ভাববে, সেই চিন্তা আমার মাথায় ঢুকে গেল। অন্যদের চোখে নিজেকে দেখতাম। রাতে আকাশের তারা দেখা বন্ধ করে দিলাম, এমনকি স্বপ্ন দেখাও বন্ধ করলাম। অন্যদের তৈরি করা ছাঁচের আদলে নিজেকে তৈরির চেষ্টা করলাম। ফলে আমার কণ্ঠস্বর খেই হারাতে থাকল, আমি শুধুই অন্যের কথা শুনতে শুরু করলাম। তখন কেউই আমাকে নাম ধরে ডাকেনি, আমিও ডাকিনি। এভাবেই আমি ও আমরা নিজেদের নাম হারিয়ে ফেলি।

বিটিএস
ছবি: উইভার্স

তবে সংগীতের প্রতি আমার মোহ ছিল, গান করতে ভালো লাগত। জীবনের সেই কঠিন সময়ে শুনতে পেয়েছিলাম, ‘জেগে ওঠো, নিজের কথা শোনো।’ কঠিন সময় পেরিয়ে আজকের পর্যায়ে আসতে দীর্ঘদিন লেগেছে। এমনকি বিটিএসে যোগ দেওয়ার সময়ও বিপত্তির মুখে পড়তে হয়েছে আমাকে। বেশির ভাগ মানুষই বলেছিল, আমরা ব্যর্থ হব। কখনো কখনো আমি বিটিএস ছাড়তেও চেয়েছিলাম, তবে ছাড়িনি।
আমি জানতাম, আমি ও আমরা হোঁচট খাব এবং পড়ে যাব। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়েই আমরা দিনে দিনে নিজেদের শিল্পী হিসেবে পরিণত করেছি। কিন্তু এখনো নিজেকে একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে বিবেচনা করি। যদি কিছু করে থাকি, সেটা বিটিএসের সদস্যদের জন্য এবং বিটিএস আর্মিদের জন্য।

অধিকাংশ মানুষের মতো আমিও জীবনে অনেক ভুল করেছি। অনেক ভুল ও দোষ নিয়েই নিজেকে ভালোবাসি। আমরা নিজেকে ভালোবাসতে শিখেছি। এখন আপনাদের বলছি, নিজের কথা বলুন।
আপনার নাম কী? কোন কাজটি আপনার হৃদয়কে আলোড়িত করে? আপনার গল্প বলুন। আপনি কে, কোথা থেকে এসেছেন, আপনার গায়ের রং, লৈঙ্গিক পরিচয় কী—সেটা কোনো বিষয় নয়; নিজের কথা বলুন।