প্রিয় পরীক্ষার্থী, শুভেচ্ছা নিয়ো। পরিবর্তিত সিলেবাসে বাংলা দ্বিতীয় পত্রে এবার তোমরা প্রথম পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। তাই বাংলা দ্বিতীয় পত্র এবার নতুন আঙ্গিকে সাজানো হয়েছে। ১০০ নম্বর বরাদ্দ রয়েছে এই বিষয়টির জন্য। রচনামূলক বা সৃজনশীল অংশে ৬০ নম্বর ও বহুনির্বাচনি অংশে ৪০ নম্বর। সৃজনশীল অংশের মধ্যে অনুচ্ছেদ লিখনে ৫ নম্বর, সারাংশ/সারমর্মে ১০ নম্বর, ভাবসম্প্র্রসারণে ১০ নম্বর, চিঠিপত্রে ৫ নম্বর, প্রতিবেদন তৈরিতে ১০ নম্বর ও রচনায় থাকবে ২০ নম্বর। ব্যাকরণ অংশে (ব্যাকরণ এবং নির্মিত অংশের বাকধারা, বাক্যসংকোচন ও প্রবাদ-প্রবচন) ৪০টি বহুনির্বাচনি প্রশ্ন থাকবে। প্রতিটি প্রশ্নের নম্বর ১। সবগুলো প্রশ্নের উত্তর করতে হবে। বাংলা দ্বিতীয় পত্রে ভালো করার সুযোগ রয়েছে, সেহেতু এ বিষয়টিতে গুরুত্ব দিতে হবে আগ্রহের সঙ্গে।
ভুল উত্তর দেওয়া ও অপ্রাসঙ্গিক উত্তর পরিহার করতে হবে। ভাবসম্প্র্রসারণ, সারাংশ ও রচনায় অপ্রাসঙ্গিক কিছু লিখলে সেটির মান কমে যেতে পারে। তুমি মনে করতে পারো, যত বেশি লেখা যাবে, তত বেশি নম্বর পাবে, আসলে তা ঠিক নয়। তাই এ বিষয়ে সচেতন থাকবে। মনে রাখবে, গঠনমূলক লেখা ছোট হলেও পুরো নম্বর পেতে সহায়ক হয়। এবার তোমাদের প্রতিবেদন বিষয়টি নতুন সংযোজন করা হয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক ও পত্রিকার দুটি প্রতিবেদন পড়লেই আশা করি তোমরা পেয়ে যাবে। প্রতিবেদন রচনার ক্ষেত্রে তোমরা যা শিখেছ, সেভাবেই উত্তর করবে। পত্রিকার প্রতিবেদনে তোমরা শিরোনাম ব্যবহার করে, প্রতিবেদকের নাম, স্থান, তারিখ উল্লেখ করে লিখলেই ভালো করবে। প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদনে অবশ্যই প্রতিষ্ঠানপ্রধান বরাবর বিষয় ও সূত্রসহ প্রতিবেদন পেশ করবে। রচনায় উপশিরোনাম দেবে।
বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর হলো বেশি নম্বর পাওয়ার সিঁড়ি। অনুশীলন হলো বহুনির্বাচনি শিক্ষার ভিত্তি। যত বেশি পড়বে, মনে তত বেশি ধারণ করবে। মনে রাখা দরকার, ব্যাকরণ বই থেকেই প্রশ্ন হবে। অহেতুক বাজারের বড় বড় ব্যাকরণ বই/গাইড পড়ার প্রয়োজন নেই। ব্যাকরণ চর্চা করবে যত
পারো ততবার। রচনামূলক অংশের বড় জায়গাজুড়ে আছে প্রবন্ধ-রচনা। প্রয়োজনীয় কোটেশন ও কবিতার লাইন
সংযোজন করবে। বোর্ডের রচনা বইটিকে অবশ্যই মূল ভিত্তি হিসেবে ধরে নিয়ে কিছু প্রাসঙ্গিক আলোচনা অন্য রচনার বই থেকে সংগ্রহ করবে।
ভাবসম্প্র্রসারণ পারলে তিন প্যারায় লিখতে হবে। প্যারার নাম উলেখ না করাই ভালো। মূল ভাব নিজের ভাষায় ব্যাখ্যা দেবে, সম্প্রসারিত ভাব ও মন্তব্য অংশ প্যারা করলে ভালো হবে। মনে রাখা দরকার, ভাবসম্প্রসারণে উপমা, উদাহরণ বা কোটেশন করবে না। সারাংশ বা সারমর্ম দুবার পড়বে। সহজ, সরল ও প্রাঞ্জল ভাষায় মূল উত্তরটুকু তিন বা চার বাক্যে লিখবে। এখানেও কোনো উদাহরণ, দৃষ্টান্ত, উপমা বা অপ্রাসঙ্গিক অথবা হুবহু প্রশ্ন থেকে উত্তর তুলে দেবে না। চিঠিপত্র পুরোনো ও আধুনিক—যেকোনো নিয়মেই লেখা যায়, তবে বোর্ডের রচনা বইটি অনুসরণ করবে। ব্যক্তিগত, আবেদনপত্র ও পত্রিকার প্রকশের পত্র—এই তিনটি নিয়ম অবশ্যই আত্মস্থ রাখবে।
অনুচ্ছেদ লিখনের ক্ষেত্রে অবশ্যই বাংলা প্রথম পত্র বইয়ের বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেবে। এই অংশ একটি নতুন
সংযোজন, অতএব উত্তরের ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক ভাষা ও গঠনমূলক বাক্য ব্যবহার করবে। অনুচ্ছেদে কোনোভাবেই প্যারা
করবে না। সাধু-চলিত ভাষা একই প্রশ্নের উত্তরে ব্যবহার করা যাবে না। যেকোনো বর্ণনামূলক রচনায় এ ব্যাপারটি অবশ্যই খেয়াল রাখবে।
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ, ঢাকা।