আইনি ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি এনসিটিবির

নতুন শিক্ষাক্রমের নিয়মে পরীক্ষা দিচ্ছে শিক্ষার্থীরাফাইল ছবি

বদলে যাওয়া নিয়মে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির ষাণ্মাসিক (অর্ধবার্ষিক) মূল্যায়নের প্রথম দিন গতকাল বুধবার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের প্রতি জরুরি বার্তা দিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। এতে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানপ্রধানের মাধ্যমে মূল্যায়ন কার্যক্রমের নির্দেশনাগুলো কোনো অপ্রাসঙ্গিক কমিউনিটি বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ারের বিষয়টি প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নৈপুণ্য অ্যাপের ইউজার আইডির মাধ্যমে এই মূল্যায়ন নির্দেশনা ডাউনলোড ও বিতরণ কার্যক্রম ট্র্যাকিং করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা আছে। এ জন্য মূল্যায়ন নির্দেশনাগুলো বিতরণের মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে আরও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

নতুন নিয়মে গতকাল থেকে সারা দেশেই মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে শুরু হয়েছে ষাণ্মাসিক মূল্যায়ন বা প্রচলিত অর্থে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) অধীন সারা দেশের এক কোটির মতো শিক্ষার্থী এই মূল্যায়ন কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে।

এবার কেন্দ্রীয়ভাবে এনসিটিবির তৈরি করা শিক্ষার্থী নির্দেশিকা বা প্রশ্নের ভিত্তিতে হচ্ছে মূল্যায়নের কার্যক্রম। নতুন নিয়ম হওয়ায় এবার এনসিটিবি থেকে মূল্যায়নে শিক্ষার্থী নির্দেশিকা বা প্রশ্ন তৈরি করে তা পরীক্ষার আগের দিন প্রতিষ্ঠানপ্রধানের কাছে অনলাইনে পাঠানো হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানপ্রধানেরা প্রশ্নপত্র ডাউনলোডের পর ফটোকপি করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সরবরাহের ব্যবস্থা করছেন।

আরও পড়ুন

অভিযোগ উঠেছে, পরীক্ষার আগের দিন গত মঙ্গলবার রাতে ও গতকাল সকালে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মূল্যায়ন কার্যক্রমের শিক্ষার্থী নির্দেশিকা বা প্রশ্নপত্র ছড়িয়ে পড়ে। সঙ্গে উত্তর তৈরি করেও ছড়ানো হয়। পর দেখা যায়, গতকাল অনুষ্ঠিত মূল্যায়ন কার্যক্রমের শিক্ষার্থী নির্দেশিকার সঙ্গে ফাঁস হওয়া নির্দেশিকার মিল রয়েছে।

এ অবস্থায় এনসিটিবির চেয়ারম্যান (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের কাছে জরুরি বার্তা পাঠান। এতে বলা হয়, মূল্যায়ন নির্দেশিকা প্রতিটি বিষয়ের মূল্যায়নের আগে নৈপুণ্য অ্যাপের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের নিজস্ব আইডিতে পাঠানো হচ্ছে। যদিও এই মূল্যায়ন নির্দেশিকাগুলো কোনো শিক্ষার্থী আগে থেকে জেনে গেলেও সামগ্রিক মূল্যায়ন কার্যক্রমে কোনো ধরনের বিঘ্ন সৃষ্টি হবে না। তারপরও পরীক্ষার হলে প্রবেশের আগে তা কিছু প্রতিষ্ঠানপ্রধান বিভিন্ন মহলের সঙ্গে শেয়ার করায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে কিছু অসাধু ব্যক্তি ও সংস্থা এই মূল্যায়ন নির্দেশিকার বিভিন্ন অসত্য, ভুল, অপ্রাসঙ্গিক ও বিভ্রান্তিকর সমাধান করছে, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। বিভ্রান্তিকর সমাধানগুলো শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবকদের ব্যাপকভাবে বিভ্রান্ত করছে। এতে মূল্যায়ন কার্যক্রমে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে।

জরুরি বার্তায় আরও বলা হয়, প্রতিষ্ঠানপ্রধান বা প্রধান শিক্ষকের নিজস্ব আইডিতে পাঠানো নির্দেশিকাগুলো বাইরের যে কারও সঙ্গে শেয়ার করা শিক্ষকতার নৈতিকতাবিরোধী কার্যক্রম ও চরম অশিক্ষকসুলভ আচরণ।