দেশের মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের (সরকারীকরণ) দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে চলা শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। আজ বুধবার তাঁরা নবম দিনের মতো এই কর্মসূচি পালন করছেন।
এই কর্মসূচির কারণে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তা দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। আর উত্তর পাশ দিয়ে বিক্ষিপ্তভাবে শুধু রিকশা বা ছোট যানবাহন চলছে। বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
শিক্ষকেরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তার একদিকে হাইকোর্টের সামনের কদম ফোয়ারা পর্যন্ত এবং অন্যদিকে পল্টন মোড়ের আগে তোপখানা রোডের সামনের সড়কে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে অবস্থান নিয়ে আছেন।
বেলা সোয়া দুইটার দিকে পল্টন মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, অসংখ্য শিক্ষক সড়কে অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি পালন করছেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তা দিয়ে বড় যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এর প্রভাব পড়ছে আশপাশের সড়কে।
আন্দোলনকারী শিক্ষকেরা বলছেন, মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের ঘোষণা না নিয়ে তাঁরা বাড়ি যাবেন না।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির ডাকে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ১১ জুলাই থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকেরা। প্রথমে কিছুসংখ্যক শিক্ষক এ কর্মসূচি শুরু করলেও গত রোববার থেকে বিদ্যালয়ের ক্লাস বন্ধ রেখে বিপুলসংখ্যক শিক্ষক এই কর্মসূচি শুরু করেছেন।
এদিকে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি আজ বেলা সাড়ে তিনটায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আন্দোলনরত শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের।
এর আগে গত সোমবার আন্দোলনকারী শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠকে করেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। এ বিষয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষকেরা বলছেন, এ আলোচনা শুরু হওয়াটা তাঁদের আন্দোলনের একটি অগ্রগতি। এখন আলোচনাও চালিয়ে যাবেন, পাশাপাশি আন্দোলনও চালিয়ে যাবেন।
তখন আন্দোলনকারী শিক্ষকদের একটি সূত্র জানিয়েছিল, শিগগির শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সঙ্গে একটি আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
বর্তমানে সারা দেশে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে ২০ হাজারের বেশি। এর মধ্যে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৬৮৪টি, বাকিগুলো বেসরকারি। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মাধ্যমিকে মোট শিক্ষার্থী ১ কোটি ১ লাখ ৯০ হাজার ২২। মোট শিক্ষক আছেন পৌনে তিন লাখের মতো।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অধিকাংশই এমপিওভুক্ত। এর মানে হলো এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকার থেকে বেতনের মূল অংশসহ কিছু ভাতা পান। দীর্ঘদিন ধরে এসব প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবি জানিয়ে আসছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা।