শিক্ষা প্রকল্পে সময় যায়, টাকাও যায়, শেষ হয় না কাজ
বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, ভবন নির্মাণ, সরঞ্জাম কেনার মতো সাধারণ কাজে বছরের পর বছর লাগিয়ে দিচ্ছেন কর্মকর্তারা। প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ছে বারবার।
ঢাকার আশপাশে ১০টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল ২০১৭ সালের জুলাইয়ে। তিন বছরে কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু সাড়ে ছয় বছর পর দেখা যাচ্ছে, একটি বিদ্যালয়েরও ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়নি।
প্রকল্পটির মেয়াদ বেড়েছে তিন দফা। ব্যয়ও বেড়েছে। শুরুতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৬৭৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। তা বাড়িয়ে করা হয়েছে প্রায় ৭৫০ কোটি টাকা। ব্যয় আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।
শুধু বিদ্যালয় নির্মাণ নয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মূল সংস্থা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) অধীনে চলতে থাকা ৯টি প্রকল্পের বেশির ভাগেরই একই অবস্থা—সময় বেড়েছে, ব্যয় বেড়েছে। এসব প্রকল্পে মোট ব্যয় এখন প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে চারটি প্রকল্পের পুরোপুরি তথ্য পাওয়া গেছে। তাতে দেখা যায়, ওই চার প্রকল্পের শুরুতে ব্যয় ছিল প্রায় ৭ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা। যা বেড়ে হয়েছে ১২ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা। অর্থাৎ শুধু চারটি প্রকল্পেই ব্যয় বেড়েছে ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি।
প্রকল্পগুলো অবশ্যই নির্ধারিত সময়ে শেষ করা উচিত। কারণ, প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি পেলে অর্থ বেশি লাগে, আবার সময় বেশি হলে কাঙ্ক্ষিত উদ্দেশ্য সাধিত হয় না।অধ্যাপক মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
শিক্ষার প্রকল্পগুলো নতুন বিদ্যালয় নির্মাণ, পুরোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভবন নির্মাণ, বিজ্ঞানশিক্ষার মানোন্নয়ন, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ইত্যাদির জন্য। শিক্ষা নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিরা বলছেন, একটি বিদ্যালয় যথাসময়ে না হওয়া মানে শিশুদের সুযোগবঞ্চিত হওয়া। একজন শিক্ষকের প্রশিক্ষণ না হওয়া মানে শিক্ষার্থীদের আরও ভালো শিক্ষা পাওয়ার সুযোগ হারানো। তাঁরা আরও বলছেন, শিক্ষার প্রকল্পগুলো ভালো কোনো উদাহরণ তৈরি করছে না। বরং সেগুলো যেন অন্যদের গাফিলতি, অনিয়ম ও দুর্নীতির পাঠ দিচ্ছে।
মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদের দাবি, তাঁরা তাগিদ দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, যেসব প্রকল্প পিছিয়ে আছে, সেগুলোর কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য সময়ে সময়ে তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। একান্ত প্রয়োজন না হলে সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয় না।
কিন্তু শিক্ষাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, তাগিদে যে কাজ হয় না, সেটা বছরের পর বছর ধরে দেখা যাচ্ছে। এখন জবাবদিহি নিশ্চিতের সময়।
যেসব প্রকল্প পিছিয়ে আছে, সেগুলোর কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য সময়ে সময়ে তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। একান্ত প্রয়োজন না হলে সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয় না।মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ
একটি বিদ্যালয়ও হলো না
১০টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপনের কথা ছিল কেরানীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড ও চিটাগাং রোড, ঢাকার নবীনগর, ধামরাই, হেমায়েতপুর, পূর্বাচল, বাড্ডার সাঁতারকুল, আশুলিয়া এবং জোয়ার সাহারায়।
মাউশি সূত্রে জানা গেছে, গত জানুয়ারি পর্যন্ত প্রকল্পের মোট অগ্রগতি প্রায় ২৯ শতাংশ। গত মাসে অনুষ্ঠিত এক প্রকল্প পর্যালোচনা সভায় জানানো হয়, চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে ছয়টি বিদ্যালয়ের ভূমি উন্নয়নের কাজ শেষ হবে। মার্চের মধ্যে পাঁচটি বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের কাজের চুক্তি সইয়ের আশা আছে। তিন দফা সময় বাড়ানোর পর প্রকল্পটির মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত। ফলে দেখা যাচ্ছে, সময় বেশি হাতে নেই। আবারও মেয়াদ বাড়াতে হবে।
প্রকল্পটিতে ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে দুর্নীতি ‘ছক কষার’ অভিযোগ উঠেছিল। তখন প্রকল্প পরিচালককে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাঁকে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করে রাখা হয়েছে। অবশ্য পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি বলা হয়েছে। এই প্রকল্পের বর্তমান পরিচালক শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা মীর জাহিদা নাজনীন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, চলতি অর্থবছরেই বিদ্যালয় নির্মাণের কাজ শুরু হবে বলে তিনি আশা করছেন। একই সঙ্গে মেয়াদ বৃদ্ধির প্রক্রিয়াও আছে।
১০টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপনের কথা ছিল কেরানীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড ও চিটাগাং রোড, ঢাকার নবীনগর, ধামরাই, হেমায়েতপুর, পূর্বাচল, বাড্ডার সাঁতারকুল, আশুলিয়া এবং জোয়ার সাহারায়।
ভবন হয়েছে, লিফট নেই
জেলা সদরের বড় কলেজে ভবন নির্মাণ করার প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল ২০১০ সালে। কথা ছিল ৭০টি বড় কলেজে ভবন নির্মাণে সময় লাগবে তিন বছর। শুরুতে ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় এক হাজার কোটি টাকা। পরে ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয় ১ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা। এই প্রকল্পের নতুন মেয়াদ শেষ হবে আগামী জুনে।
মাউশি সূত্র জানিয়েছে, ৭০টি কলেজে ২০৮টি ভবন নির্মাণের লক্ষ্য ছিল। এর মধ্যে দীর্ঘ ১৪ বছরে ১৯৪টি ভবনের কাজ শেষ হয়েছে। যেসব কলেজে ভবনের কাজ শেষ হয়েছে, তার একটি ঢাকা কলেজে। সেখানে ১০ তলা একটি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু ভবনটির ওপরের তলাগুলো ব্যবহৃত হয় না।
ঢাকা কলেজে ১৩ ফেব্রুয়ারি গিয়ে নতুন ভবনের সিঁড়ি বেয়ে আট ও নয়তলায় উঠে দেখা গেল, বিভিন্ন কক্ষে ধুলার স্তর। কক্ষগুলোতে বিভাগের নামফলক রয়েছে। তবে তাতে কার্যক্রম নেই। শিক্ষকেরা জানান, ভবন ২০২২ সালে বুঝিয়ে দেওয়া হলেও লিফট বসানো হয়নি। ফলে ওপরের তলাগুলোর ব্যবহার নেই। লিফটের যন্ত্রপাতি এনে ভবনের নিচতলায় ফেলে রাখা হয়েছে।
বড় কলেজের ভবন নির্মাণের কাজটি হচ্ছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে। অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, কিছু সমস্যার কারণে লিফট আনতে একটু সময় লেগেছে। এখন দ্রুতই লিফট বসানো হবে।
কোনো কোনো জেলায় কলেজের ভবনের কাজ এখনো শেষ হয়নি। এর মধ্যে আছে রাজশাহী কলেজ ও ময়মনসিংহে অবস্থিত আনন্দমোহন কলেজ। প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী কলেজের ১০ তলা ভবনের দ্বিতীয় তলার ছাদ পর্যন্ত নির্মাণ করে ঠিকাদার চলে গেছেন। পরে নতুন করে দরপত্র ডেকে একটি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়া হয়। নতুন দরপত্র অনুযায়ী, আগামী ৩০ জুনের
মধ্যে ভবনের বাকি আটতলাসহ অন্যান্য কাজ শেষ করতে হবে।
রাজশাহী শিক্ষা প্রকৌশল উপসহকারী প্রকৌশলী (বোয়ালিয়া) মো. আবদুস সামাদ মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, ৮ ফেব্রুয়ারি কার্যাদেশ পেয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
ঢাকা কলেজে ১৩ ফেব্রুয়ারি গিয়ে নতুন ভবনের সিঁড়ি বেয়ে আট ও নয়তলায় উঠে দেখা গেল, বিভিন্ন কক্ষে ধুলার স্তর। কক্ষগুলোতে বিভাগের নামফলক রয়েছে। তবে তাতে কার্যক্রম নেই।
সরকারি আনন্দ মোহন কলেজের নির্মাণাধীন ১০ তলা ভবনের ৪ তলা পর্যন্ত নির্মাণ দৃশ্যমান হওয়ার পর দুই বছরের বেশি সময় ধরে কাজ বন্ধ ছিল। ১৩ ফেব্রুয়ারি সরেজমিনে দেখা যায়, চারতলার ছাদে শ্রমিকেরা কাজ করছেন।
কলেজটিতে শিক্ষার্থী ৩০ হাজারের মতো। সে তুলনায় শ্রেণি কম। কলেজের অধ্যক্ষ মো. আমান উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, আগামী জুনে ভবনের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা।
অবশ্য শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্র বলছে, জুনের মধ্যে রাজশাহী কলেজ ও আনন্দমোহন কলেজের নতুন ভবনের কাজ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ, অর্থ ছাড়েরও সমস্যা রয়েছে। তবে প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক মুহম্মদ নাসির উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, এখন কাজগুলো শেষ পর্যায়ে।
এখন প্রশ্ন উঠেছে, মাল্টিমিডিয়া ব্যবহার করে ক্লাস পরিচালনার জন্য শিক্ষক-কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়াই যেখানে ছিল মুখ্য, সেখানে এই প্রকল্পের অধীনে শ্রেণিকক্ষে মাল্টিমিডিয়া স্থাপন না হওয়ায় সেই প্রশিক্ষণ কতটা কাজে লেগেছে?
৮ বছরে ৯ শতাংশ
তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির (আইসিটি) মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার প্রচলন (পর্যায়-২, প্রথম সংশোধিত) নামের প্রকল্পটি নেওয়া হয় ২০১৬ সালে। নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা প্রকল্পটি আট বছরে বাস্তবায়িত হয়েছে মাত্র ৯ শতাংশ। এর মোট ব্যয় ১ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা। মেয়াদ ছিল চার বছর। সময় বেড়েছে তিন দফা।
মাউশি জানিয়েছে, এই প্রকল্পে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের ৩১ হাজার ৩৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ করা এবং পৌনে ছয় লাখ শিক্ষক-কর্মকর্তাকে প্রযুক্তিনির্ভর ক্লাস পরিচালনার প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা ছিল। কর্মকর্তারা বলছেন, এখন পর্যন্ত প্রায় দেড় লাখ শিক্ষক-কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। দেশের ২০ জায়গায় প্রশিক্ষণ হয়েছে।
অবশ্য পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের তদন্তে বেরিয়ে আসে যে প্রকল্পের তৎকালীন পরিচালক (পিডি) মো. আবদুস সবুর খান উপস্থিত না হয়েও ভিন্ন ভিন্ন স্বাক্ষরে সাড়ে তিন মাসে প্রায় ১৭ লাখ টাকা সম্মানী নিয়েছেন। প্রশিক্ষণ-সংশ্লিষ্ট আরও অনেকেই এভাবে সম্মানীর নামে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ওই ঘটনায় কারও এখন পর্যন্ত শাস্তি হয়নি। তবে অভিযুক্ত প্রকল্প পরিচালককে সরিয়ে দেওয়া হয়।
এখন প্রশ্ন উঠেছে, মাল্টিমিডিয়া ব্যবহার করে ক্লাস পরিচালনার জন্য শিক্ষক-কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়াই যেখানে ছিল মুখ্য, সেখানে এই প্রকল্পের অধীনে শ্রেণিকক্ষে মাল্টিমিডিয়া স্থাপন না হওয়ায় সেই প্রশিক্ষণ কতটা কাজে লেগেছে?
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ২০২৩ সালে প্রকল্পটি বাদ দেওয়ার কথা উঠেছিল। পরে অবশ্য মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। সম্প্রতি অধ্যাপক সাহেদুল কবিরকে নতুন প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, প্রকল্পের কাজ এখন প্রায় নতুন করে শুরু করতে হচ্ছে।
শুরু হয়, শেষ হয় না
মাধ্যমিক শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে ২০১৪ সাল থেকে চলছে মাধ্যমিক শিক্ষাস্তর উন্নয়ন কর্মসূচি (সেসিপ)। কর্মসূচিটি গত ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে শুধু জনবল রাজস্ব খাতে স্থানান্তর নিয়ে জটিলতার কারণে।
তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে নির্বাচিত বেসরকারি কলেজগুলোর উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পটি চলছে ২০১২ সাল থেকে। এর আওতায় সারা দেশে ১ হাজার ৬১০টি কলেজে ভবন নির্মাণের কথা। সেই প্রকল্প এখনো চলছে।
সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়ন শীর্ষক একটি প্রকল্প ২০১৭ সালে শুরু হয়। মাউশি সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি ১৭ শতাংশের মতো। সরকারি কলেজে বিজ্ঞানশিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণের একটি প্রকল্প ২০১৮ সালে শুরু হয়। অগ্রগতি মাত্র ৩২ শতাংশ।
প্রকল্পগুলো অবশ্যই নির্ধারিত সময়ে শেষ করা উচিত। কারণ, প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি পেলে অর্থ বেশি লাগে, আবার সময় বেশি হলে কাঙ্ক্ষিত উদ্দেশ্য সাধিত হয় না।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আবু ইউসুফ
এ ছাড়া ন্যাশনাল একাডেমি ফর অটিজম ও নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅ্যাবিলিটিজ এবং ৯টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প নামে আরও দুটি প্রকল্প চলছে।
সব মিলিয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিভুক্ত (এডিপি) মাউশির ৯টি প্রকল্পে আড়াই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। নথিপত্রে দেখা যায়, এর মধ্যে গত জানুয়ারি পর্যন্ত ছাড় হয়েছে প্রায় ৫১ শতাংশ টাকা। ব্যয় হয়েছে প্রায় ১৪ শতাংশ।
ভবন নির্মাণ, প্রশিক্ষণ, সরঞ্জাম কেনার মতো সাধারণ কাজে কেন বছরের পর বছর লাগে, সেই প্রশ্ন উঠেছে। যথাসময়ে প্রকল্প শেষ না হলে উপকরণের দাম বেড়ে যায়। তখন ব্যয়ও বাড়াতে হয়।
শিক্ষার বাজেট নিয়ে গবেষণা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আবু ইউসুফ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, প্রকল্পগুলো অবশ্যই নির্ধারিত সময়ে শেষ করা উচিত। কারণ, প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি পেলে অর্থ বেশি লাগে, আবার সময় বেশি হলে কাঙ্ক্ষিত উদ্দেশ্য সাধিত হয় না।
[প্রতিবেদনে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন প্রতিনিধি, ময়মনসিংহ ও রাজশাহী]