উইলসে হয়ে গেল একাডেমিক, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী ২০২৪
আজ রোববার রাজধানী ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত উইলস্ লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজে অনুষ্ঠিত হলো প্রতিষ্ঠানটির ‘বার্ষিক পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান ২০২৪’। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে কৃতি শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
অনুষ্ঠানে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান ও এই প্রতিষ্ঠানের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামানিক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডহক কমিটির অভিভাবক সদস্য মো. মোয়াজ্জেম হোসেন।
আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আবুল বাশার, সনোলজিস্ট ও চিকিৎসাবিজ্ঞানী ডা. সুলতানা শামিমা চৌধুরী রিতা। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান, আমন্ত্রিত অতিথি, বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকেরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথি আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম তাঁর বক্তব্যের শুরুতে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ভাষাশহীদদের মহান আত্মত্যাগ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের রক্তঝরা মার্চের উত্তাল দিনগুলোর স্মৃতিচারণা করেন। এ সময় তিনি ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক ৭ মার্চ এবং স্বাধীনতার মহান স্থপতি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি আশা করেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অন্তরে লালন করে একদিন এ দেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে উঠবে।
শিক্ষার্থীদের পুঁথিগত বিদ্যার পাশাপাশি খেলাধুলায় মনোযোগী হয়ে ভবিষ্যতে সেরা ক্রীড়াবিদ হওয়ার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। বর্তমান সরকারের যুগোপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা সর্বস্তরে বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষক, অভিভাবক তথা সংশ্লিষ্ট সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। প্রতিষ্ঠানের ভালো ফল অর্জনে শিক্ষকদের ফলপ্রসূ পাঠদানে আরও অধিক যত্নবান হওয়া এবং শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় আরও বেশি মনোযোগী হওয়ার অনুরোধ জানান। তিনি অতীতের সব ভুল–বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের এক হয়ে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে কাজ করার আহ্বান জানান। বাহাউদ্দিন নাছিম আরও বলেন, শিক্ষকেরা হলেন সমাজের দর্পণ। শিক্ষাদানের পাশাপাশি নিজেদের চরিত্র গঠনে তাঁদের আরও সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি। কারণ, শিক্ষকদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সরাসরি শিক্ষার্থীদের ওপর প্রভাব বিস্তার করে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামানিক তাঁর বক্তৃতায় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান উন্নয়নে সবাইকে এক হয়ে কাজ করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে পাবলিক পরীক্ষার ভালো ফলাফল অর্জনে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিরলস পরিশ্রম করার আহ্বান জানান তিনি।
আফতাব হোসেন প্রামানিক পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানান এবং ভবিষ্যতে এ ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। তিনি শত ব্যস্ততার ভেতর অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার জন্য প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি ও আমন্ত্রিত অতিথিদের বিশেষ ধন্যবাদ জানান। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে ‘সুস্থ দেহে সুস্থ মন’ বাণীকে অন্তরে লালন করে এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পাশাপাশি ক্রীড়া, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আ ন ম সামসুল আলম তাঁর শুভেচ্ছা বক্তব্যে উইলসের অতীত ঐতিহ্য, শিক্ষার্থীদের খেলাধুলাসহ বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় ধারাবাহিক ঈর্ষণীয় সাফল্যের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে ভবিষ্যতেও ভালো ফলাফলের এ ধারা অব্যাহত থাকবে এবং একদিন এ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে বিভিন্ন শাখার কৃতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। একাডেমিক ক্ষেত্রে ২৩৯ জন, ক্রীড়ায় ১৩৩ জন, সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে ১৭৮ জন, কো-কারিকুলার ক্ষেত্রে ২ জনসহ মোট ৫৫২ শিক্ষার্থীর মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। পরে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।