সপ্তম শ্রেণির নতুন বই - ডিজিটাল প্রযুক্তি | স্বত্বাধিকারীর অধিকার সংরক্ষণ
সপ্তম শ্রেণির পড়াশোনা
ট্রেডমার্ক
ট্রেডমার্ক হলো কোনো স্বতন্ত্র প্রতীক বা লোগো বা নাম বা স্লোগান, যেটি দিয়ে একটি বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদকে একই ধরনের অন্য কোনো বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ থেকে পার্থক্য করা যায়।
ট্রেডমার্ক নিবন্ধনের নিয়ম:
একটি প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি কোনো বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদকে বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করার সময় তাঁদের সেই সম্পদের জন্য নির্দিষ্ট ট্রেডমার্ক নিবন্ধন করেন। ফলে অন্য কেউ চাইলেই ইচ্ছেমতো তাঁর সেই বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ নকল করে বাজারজাত করতে পারেন না। ফলে স্বত্বাধিকারীর অধিকার সংরক্ষিত হয় এবং অন্য কেউ তাঁর বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের অপব্যবহার করতে গেলে তিনি আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন।
বাংলাদেশ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (WTO) একটি সদস্যদেশ। তাই এ সংস্থার করে দেওয়া নিয়ম অনুসরণ করে বাংলাদেশে ট্রেডমার্ক নিবন্ধনের সুযোগ আছে। ট্রেডমার্ক নিবন্ধনের জন্য ৫টি ধাপ অনুসরণ করতে হয়। এগুলো হচ্ছে—
১. গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট থেকে ট্রেডমার্ক নিবন্ধনের আবেদন ফরম সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট ফি জমা দিয়ে সেটি প্রথমে পূরণ করতে হয়। এই ফরমে বিস্তারিত জানাতে হয় কেন এই বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের স্বত্বাধিকারী হিসেবে ট্রেডমার্ক নিবন্ধন করতে চাচ্ছি আমরা।
২. অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা আবেদনটি যাচাই-বাছাই করবেন যে সম্পদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, সেটি আসলেই একটি বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ কি না, সম্পদটি ট্রেডমার্ক পাওয়ার যোগ্য কি না, একই রকম অন্য বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের সঙ্গে এই ট্রেডমার্ক হুবহু মিলে যাচ্ছে কি না ইত্যাদি।
৩. অধিদপ্তর আবেদনটি গ্রহণযোগ্য হিসেবে পেলে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেবে এবং অন্য কোনো একই ধরনের বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের ট্রেডমার্ক ধারণকারী কোনো স্বত্বাধিকারীর এই নতুন ট্রেডমার্কের ব্যাপারে আপত্তি আছে কি না, সেটি জানতে দৃষ্টি আকর্ষণ করবে।
৪. অন্য কোনো বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের স্বত্বাধিকারী যদি নিজের ট্রেডমার্কের সঙ্গে নতুন ট্রেডমার্কের মিল খুঁজে পান, তাহলে তিনি নিজের আপত্তি জানাতে পারেন। এ জন্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট থেকে আবেদন ফরম পূরণ করে তাঁকে জমা দিতে হয়। এ সময় তিনি যুক্তি প্রদান করেন, কেন নতুন ট্রেডমার্কটি গ্রহণযোগ্য হবে না। আবার যিনি ট্রেডমার্কের জন্য আবেদন করেছেন, তিনি নিজের ট্রেডমার্কের পক্ষে যুক্তি প্রদান করেন। এরপর অধিদপ্তর দুই পক্ষের সব যুক্তি বিবেচনা করে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেন।
৫. সবশেষে যদি অধিদপ্তর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় যে আবেদনকারীকে এই ট্রেডমার্ক প্রদান করা হবে, তাহলে ট্রেডমার্কের নিবন্ধন সম্পন্ন হয়। নিবন্ধিত হওয়ার প্রমাণপত্র হিসেবে একটি ট্রেডমার্ক সনদ ওই স্বত্বাধিকারীর নামে প্রদান করা হয়।
প্রকাশ কুমার দাস, সহকারী অধ্যাপক, মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা