অধ্যায় ৬
এসো জেনে নিই কবিতা কী
কবিতা সাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যাঁরা কবিতা লেখেন, তাঁদের বলে কবি। অনেকগুলো কবিতা নিয়ে যে বই হয়, তার নাম কাব্য। কবিতার ভাষাকে পদ্য-ভাষা বলা হয়।
কবিতার নির্দিষ্ট কোনো সংজ্ঞা নেই। কিছু বৈশিষ্ট্য দেখে কবিতাকে চিনে নিতে হয়। কবিতার বাক্যগুলো সাধারণত নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের হয়ে থাকে। কবিতার ভাষাকে সুন্দর করার জন্য ছন্দ ও মিলের ব্যবহার করা হয়। ছন্দ হলো নির্দিষ্ট বিরতি দিয়ে থেমে থেমে বলা। আর মিল হলো একই রকম উচ্চারণের শব্দ। গদ্য রচনায় যেমন অনুচ্ছেদ থাকে, তেমনি কবিতায়ও ছোট ছোটে অংশ থাকে, যাকে বলে স্তবক।
কবিতায় সাধারণত পরপর দুই লাইনের শেষে মিল-শব্দ থাকে। এর বাইরেও কবিরা নানাভাবে মিল তৈরি করেন। যেমন ‘মাঝি’ কবিতায় একই রকম মিল একাধিক লাইনের শেষে আছে। যেমন পারে-ধারে-সারে, ফেলে-জেলে-ছেলে ইত্যাদি।
কবিতায় শব্দ-রূপের পরিবর্তন হয়। ‘ময়নামতীর চর’ কবিতায় কিছু শব্দের রূপের পরিবর্তন দেখানো হয়েছে। অন্য কবিতায়ও এ রকম পরিবর্তিত শব্দ দেখা যাবে। তা ছাড়া পদ্যের সঙ্গে গদ্যের ভাষার পার্থক্য আছে। যেকোনো কবিতাকে গদ্যে রূপান্তর করলে বিষয়টি বোঝা যায়।
তাল রেখে পড়ার ব্যাপারটি কবিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। তালের ভিত্তিতে কবিতায় নানা রকম ছন্দ তৈরি হয়। ‘নোলক’ কবিতার মতো অন্যান্য কবিতাও তালে তালে পড়া যায়।
প্রিয় শিক্ষার্থী, তোমরা এবার নিজের কল্পনা ও অনুভূতি দিয়ে কবিতা লেখার চেষ্টা করো। নিজের জীবন ও চারপাশের যেকোনো ব্যক্তি, বিষয় বা ঘটনা নিয়ে কবিতা লিখতে পারো। লেখার সময় কবিতায় তাল বা শব্দের মিল হতেই হবে এমন নয়। তবে চেষ্টা করো, যেন মিল করা যায়। এটা দীর্ঘ বা ছোট যেকোনো আকারের হতে পারে। তবে চেষ্টা করবে লেখাটি যেন অন্তত চার লাইনের হয়। লেখা শেষ হলে নিচের কাজগুলো করবে:
লেখা শেষ হলে ছোট দলে নিজেদের লেখা কবিতা সবাইকে পড়ে শোনাবে বা দেখাবে এবং অন্যদের প্রস্তুত করা লেখা সম্পর্কে নিজের মতামত দেবে। এভাবে প্রত্যেকেই নিজেদের লেখার ওপর অন্যদের মতামত নেবে এবং মতামত গ্রহণ শেষে চাইলে লেখাটি পরিমার্জন করতে পারবে। দলে আলোচনা শেষে প্রতিটি দল থেকে কয়েকজন করে নিজেদের প্রস্তুত করা কবিতা পড়ে শোনাবে। চেষ্টা করবে যেন নিজের লেখা কবিতা নিজে আবৃত্তি করতে পারো।
উপস্থাপনার পর অন্য শিক্ষার্থীরা সংক্ষেপে তাদের মতামত প্রদান করতে পারবে।
প্রত্যেকে নিজের লেখা কবিতা চূড়ান্ত করে ক্লাসের দেয়ালে টাঙাবে, যেন সবাই পড়তে পারে।
জাহেদ হোসেন, সিনিয়র শিক্ষক, বিয়াম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা