শহিদ বুদ্ধিজীবী - বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়, অধ্যায় ১ | পঞ্চম শ্রেণি

পঞ্চম শ্রেণির পড়াশোনা

রায়ের বাজার বধ্যভূমি। এখানে আলবদর বাহিনীর সহযোগিতায় বাংলাদেশের বিশিষ্ট অধ্যাপক, সাহিত্যিক, শিল্পী, চিকিৎসক, সাংবাদিক, মুক্তিযোদ্ধাদের নৃশংসভাবে হত্যা করে ফেলে যায় হানাদার বাহিনী।ছবি: মুক্তিযুদ্ধের আলোকচিত্র বই থেকে সংগৃহীত

অধ্যায় ১

সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও

প্রশ্ন: গেরিলা বাহিনীর অ্যাকশন গ্রুপ ও ইন্টেলিজেন্স গ্রুপের কাজ কী ছিল?

উত্তর: গেরিলা বাহিনীর ‘অ্যাকশন গ্রুপ’ অস্ত্র বহন করত এবং সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিত। ‘ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ’ শত্রুপক্ষের গতিবিধি সম্পর্কে খবরাখবর সংগ্রহ করত।

প্রশ্ন: ‘শহিদ বুদ্ধিজীবী’ দিবস কবে? কেন এটি পালন করা হয়?

উত্তর: শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস হলো ১৪ ডিসেম্বর। ১০ ডিসেম্বর থেকে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে নিহত শিক্ষক, শিল্পী, সাংবাদিক, চিকিত্সক ও কবি-সাহিত্যিকদের স্মরণে দিনটি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করা হয়।

প্রশ্ন: ‘অপারেশন জ্যাকপট’ নামক আক্রমণে কোন কোন বাহিনী অংশ নেয়?

উত্তর: ‘অপারেশন জ্যাকপট’ নামক আক্রমণে ভারতের মিত্রবাহিনী ও বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনী মিলে যুদ্ধ করে।

প্রশ্ন: অপারেশন সার্চলাইট কী?

উত্তর: ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার নির্দেশে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী রাজারবাগ পুলিশ লাইনস, ইপিআর সদর দপ্তর পিলখানা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল, শিক্ষকদের বাসভবনসহ ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে একযোগে আক্রমণ করে। এই আক্রমণের নাম ছিল অপারেশন সার্চলাইট।

প্রশ্ন: যৌথবাহিনী কবে গঠিত হয় এবং এর নেতৃত্বে কে ছিলেন?

উত্তর: ১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনী মিলে গঠন করা হয় যৌথবাহিনী। যৌথবাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন মিত্রবাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা।

প্রশ্ন: পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের দলিল কোথায় স্বাক্ষর হয় এবং কারা এ দলিলে স্বাক্ষর করেন?

উত্তর: ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে যৌথবাহিনীর পক্ষে লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা এবং পাকিস্তানের পক্ষে লেফটেন্যান্ট জেনারেল নিয়াজি আত্মসমর্পণ দলিলে স্বাক্ষর করেন।

যোগ্যতাভিত্তিক প্রশ্ন

প্রশ্ন: শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস বলতে কী বোঝো? কোন তারিখে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়? শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের ৪টি কারণ লেখো। 

উত্তর: মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করার গোপন পরিকল্পনা নেয় পাকিস্তানি বাহিনী। সেই পরিকল্পনা অনুসারে ১০ থেকে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের নৃশংসভাবে হত্যা করে। বুদ্ধিজীবী হত্যার চূড়ান্ত দিনটিকে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করা হয়। 

প্রতিবছর ১৪ ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে ‘শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ পালন করা হয়। 

শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের ৪টি কারণ—

১. শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া

২. তাঁদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করা 

৩. মুক্তিযুদ্ধে তাঁদের অবদানের কথা নতুন প্রজন্মকে জানানো 

৪. বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে দেশপ্রেম জাগানো।

প্রশ্ন: অপারেশন সার্চলাইট কী? কার নির্দেশে এ আক্রমণ করা হয়? পাকিস্তানি বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ সম্পর্কে ৪টি বাক্য লেখো।

উত্তর: ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি বাহিনী ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে একযোগে আক্রমণ করে অসংখ্য নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। এই আক্রমণের নাম দেওয়া হয়েছিল অপারেশন সার্চলাইট।

প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার নির্দেশে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এ আক্রমণ চালায় ২৫ মার্চ রাতে। 

পাকিস্তানি বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ সম্পর্কে নিচে দেওয়া হলো—

পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ২৫ মার্চ রাতে রাজারবাগ পুলিশ লাইনস, ইপিআর সদর দপ্তর পিলখানা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ও শিক্ষকদের বাসভবনসহ ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে একযোগে আক্রমণ করে। সেই ভয়াল রাতে হানাদার বাহিনী দেশের অন্য বড় বড় শহরেও আক্রমণ চালিয়ে ছাত্র-শিক্ষক, পুলিশ ও ইপিআর সদস্যসহ অসংখ্য নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। যা গণহত্যার শামিল।

রাবেয়া সুলতানা, শিক্ষক, বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুল, ঢাকা