পাঁচ মাসে এসএসসি পরীক্ষা ২০২৪-এর প্রস্তুতি: এখন থেকেই শুরু করো
২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য
প্রিয় শিক্ষার্থী তোমরা যারা এখন দশম শ্রেণিতে পড়ছ, তোমরাই আগামী ২০২৪ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে। পরীক্ষাটি যে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে হবে, তা তোমরা এরই মধ্যে জেনে গেছ।
আজ থেকে আর সময় পাবে মাত্র পাঁচ মাস। মনে রেখো, তোমাদের পরীক্ষাটি পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে হবে। তাই এখন থেকেই তোমাকে পুরোদমে প্রস্তুতি নিতে হবে। এসএসসি ২০২৪ পরীক্ষায় তোমরা কীভাবে ভালো ফলাফল করবে, তা নিয়ে কয়েকটি পরামর্শ দেওয়া হলো।
পড়ার পরিকল্পনা
ভালো প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য প্রয়োজন তোমার পড়ার সঠিক পরিকল্পনা। আর সেই পরিকল্পনাটা কী হবে? তা তোমাকেই ঠিক করে নিতে হবে আর ধীরে ধীরে তা তোমাকেই বাস্তবায়ন করতে হবে।
একটা বোর্ড তৈরি করো
তোমার সব প্রয়োজনীয় যা কিছু থাকবে, তা পড়ার টেবিলের সামনের বোর্ডে লাগিয়ে রাখবে। যেমন তোমার তৈরি করা পড়ার রুটিন, স্কুলের পরীক্ষার রুটিন, গণিতের সূত্রগুলো, ভূগোলের মানচিত্র, খুঁটিনাটি সমস্যার সমাধান, প্রয়োজনীয় নোট ইত্যাদি। বোর্ডে সেসব দরকারি তথ্যগুলো তোমার চোখের সামনে থাকলে খুব সহজেই চোখে পড়বে, আর তা আয়ত্তে এসে যাবে।
চাই পড়ার রুটিন
একজন ছাত্রের প্রতিদিনের পড়ার একটা রুটিন থাকতে হবে। তুমি বিজ্ঞান, মানবিক বা ব্যবসায় শিক্ষা যে বিভাগেই পড়ো না কেন, তুমি নিজেই এটা তৈরি করে নেবে। কোন বিষয়টা আগে পড়বে, কোনটা পরে পড়বে, কোন বিষয়টা কত সময় ধরে পড়বে—তোমার চাহিদামতো তা ঠিক করে নাও।
সাইড নোট রাখো
প্রতিদিন পড়ার সময় তুমি যে বিষয়ে যে যে সমস্যার মুখোমুখি হবে, তা নোটখাতায় লিখে রাখবে। পরে সেই সমস্যাগুলো স্কুলশিক্ষক বা গৃহশিক্ষক বা বড়দের সহায়তা নিয়ে সমাধান করে নিয়ে লিখে রাখবে। এতে তোমার প্রস্তুতি অনেক সহজ হয়ে যাবে।
অনুশীলন করো প্রতিদিন
গণিত বিষয়টি অনেকের কাছেই কঠিন লাগে। এই কঠিন ভীতি দূর করতে হবে তোমাকে আর তা দূর করার একমাত্র মন্ত্র হলো অনুশীলন, অনুশীলন আর অনুশীলন। তাই প্রতিদিন গণিত অনুশীলন করলে তা ধীরে ধীরে সহজ হয়ে যাবে। পড়ার রুটিনে অবশ্যই প্রতিদিন একবার গণিত অনুশীলনের জন্য সময় নির্ধারণ করে নেবে।
হাতের লেখা ঠিক করো
তোমার হাতের লেখা কেমন? তুমি নিজেই তা জানো। যদি ভালো হয় তাহলে তো চমৎকার! আর যদি মোটামুটি বা খারাপ হয় তবে আজ থেকেই হাতের লেখা ভালো করার চেষ্টা করো। হাতের লেখা ভালো করার অর্থ লেখা সুন্দর, লেখা পরিষ্কার, কাটাকাটি না করা, লেখার অক্ষর একই সমান হওয়া—এসব। সে জন্য আজ থেকেই দাগটানা খাতায় লেখার অভ্যাস করো।
কঠিন বিষয়গুলো কী করবে
তুমি যে বিভাগেরই পরীক্ষার্থী হও না কেন, দুই–তিনটা বিষয় কারও না কারও কাছে একটু কঠিন লাগে। এই কঠিন লাগা বিষয় নিয়ে কী করবে? ওই সব বিষয় কী পড়বে? নাকি বাদ দিয়ে রাখবে। নাকি চেষ্টা করে সমস্যা থেকে বের হবে? আমার মতে, চেষ্টা করে এই সমস্যার সমাধান করা উচিত। প্রয়োজনে শ্রেণিশিক্ষক, বাবা-মা, অনলাইনের রিসোর্স কিংবা বন্ধুদের সহায়তা নিতে পারো।
প্রতিদিনের পড়া প্রতিদিন
প্রতিদিনের পড়া তুমি যদি শেষ করো বা করার চেষ্টা করো, দেখবে পরীক্ষার আগে তোমার কোনো পড়াই বাদ নেই। সব বিষয়ের সব পড়া একসঙ্গে তোমার আয়ত্তে এসে গেছে। তোমার তেমন বেগ পেতে হচ্ছে না।
পড়ো এবং লেখো
প্রতিটি বিষয় মনোযোগ দিয়ে পড়বে। পড়ার পর কোনো কোনো প্রশ্ন লিখবে। প্রয়োজনে কোনো কোনো প্রশ্নের উত্তর নিজেই লিখবে। এতে তোমার হাতের লেখা চালু থাকবে। সমস্যাও ধরা পড়বে। তা সহজেই পরে সংশোধন করে নিতে পারবে।
লেখক: সুমন কুমার পাণ্ডে,অধ্যক্ষ
সরকারি রূপনগর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা