শিখন অভিজ্ঞতা ১
যুক্তিতর্কে নিরপেক্ষতা যাচাই
প্রিয় শিক্ষার্থী, আজকের সেশনে আমরা একটি দলীয় বিতর্কে অংশ নেব। আমরা বুলেটিন তৈরি করার জন্য যে প্রতিবেদন বা প্রবন্ধ লিখব, সেখানে যথেষ্ট প্রমাণ ও যুক্তি উত্থাপনের প্রয়োজন হবে। তাই এই বিতর্ক বা যুক্তিতর্কের খেলা আমাদের যুক্তি দিয়ে চিন্তা করতে সাহায্য করবে।
আমরা কি আমাদের ডায়েরি বা জার্নালটি নিয়ে এসেছি? নিয়ে এসে থাকলে শিক্ষককে দেখাই।
নিরপেক্ষতা ও পক্ষপাতিত্ব কী?
যুক্তিতর্ক শুরু করার আগে ‘নিরপেক্ষতা’ নিয়ে কিছুটা আলোচনা করা যেতে পারে। যেকোনো তথ্য উপস্থাপনের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা সবচেয়ে বেশি জরুরি। নিরপেক্ষতা বলতে কোনো একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে কোনো পক্ষপাত দৃষ্টিভঙ্গি না রেখে, আবেগের ওপর নির্ভর না করে বস্তুনিষ্ঠভাবে
বিচার করা বা সিদ্ধান্ত নেওয়াকে বোঝায়। বিভিন্ন কারণে আমাদের মনের মধ্যে পক্ষপাতিত্ব কাজ করতে পারে।
ঘটনা–১
মনে করি, আমি আমার একজন দূরসম্পর্কের মামাকে খুব পছন্দ করি। কারণ, তিনি আমাকে সব সময় পড়াশোনা ও খেলাধুলা করতে উত্সাহ দিতেন, বিভিন্ন সময় উপহার দিতেন, মজার মজার গল্প শোনাতেন। আমি ভাবতাম, তিনি পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো মানুষদের একজন। সেই মামার ছেলে আবির একদিন আমাকে এসে বলল, তার বাবা তাকে পড়াশোনা নিয়ে অনেক চাপ দিচ্ছেন, অযথা অপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন কোচিংয়ে পাঠাচ্ছেন। আবিরের কথা আমার বিশ্বাস হলো না। এই বিশ্বাস না হওয়ার কারণ হচ্ছে আমার ‘পূর্ব অভিজ্ঞতা’। এই পূর্ব অভিজ্ঞতার কারণে ওই মামার প্রতি আমার পক্ষপাতিত্ব কাজ করছে।
ঘটনা–২
আমি ছোটবেলা থেকে একজন চলচ্চিত্র নির্মাতার কাজ অনেক পছন্দ করি। তাঁর তৈরি প্রায় সব চলচ্চিত্র আমি দেখেছি। একদিন জানতে পারলাম, ওই নির্মাতা আসলে নিজে কিছু তৈরি করেননি; বরং বিভিন্ন বিদেশি চলচ্চিত্রের গল্প অনুকরণ করে চলচ্চিত্র তৈরি করেছেন। আমি তথ্যটি কিছুতেই বিশ্বাস করলাম না। আমার এই বিশ্বাস না করাটার কারণ হচ্ছে আমার ‘আবেগ’। এ রকম নানা কারণে আমাদের মধ্যে আবেগগত পক্ষপাতিত্ব কাজ করে।
প্রকাশ কুমার দাস, সহকারী অধ্যাপক, মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা