বাংলা - সপ্তম শ্রেণি

সপ্তম শ্রেণির পড়াশোনা

অধ্যায় ৩

সম্পূর্ণ মনের ভাব প্রকাশ করার সময় আমরা বাক্য ব্যবহার করি। বাক্যগুলো শব্দ দিয়ে গঠিত হয়। তাই শব্দকে বলা হয় বাক্যের একক। অর্থ না থাকলে শব্দ তার গ্রহণযোগ্যতা হারায়। বাংলা ভাষার রয়েছে বিশাল শব্দভান্ডার।

শব্দের শ্রেণি

বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত শব্দগুলোকে ৮ শ্রেণিতে ভাগ করা যায়।

১। বিশেষ্য

যেসব শব্দ দিয়ে কোনো কিছুর নাম বোঝায়, সেগুলোকে বিশেষ্য বলে। কোনো ব্যক্তি, প্রাণী, স্থান, বস্তু, ধারণা, গুণ ইত্যাদির নাম প্রকাশক শব্দই হলো বিশেষ্য। যেমন: নজরুল, বাঘ, ঢাকা, ইট, ভজন, সততা, হিমালয়, গরু, মাটি, জনতা।

২। সর্বনাম

বাক্যে বিশেষ্যের বদলে যেসব শব্দ বসে, সেগুলোকে সর্বনাম বলে। যেমন: ‘আরিশা সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। তার বাবা একজন শিক্ষক।’ এখানে দ্বিতীয় বাক্যের ‘তার’ একটি সর্বনাম পদ।

৩। বিশেষণ

যেসব শব্দ দিয়ে বিশেষ্য ও সর্বনামের গুণ, দোষ, সংখ্যা, মাত্রা, অবস্থা, পরিমাণ ইত্যাদি বোঝায়, তাকে বিশেষণ বলে। যেমন: নীল আকাশ, সুন্দর দৃশ্য, তাজা মাছ, পঞ্চাশ টাকা, হাজার বছর।

৪। ক্রিয়া

বাক্যে কর্তা কী করে বা কর্তার কী ঘটে, তা যেসব শব্দ দিয়ে নির্দেশ করা হয়, সেগুলোকে ক্রিয়া বলে। যেমন তমাল পড়ছে, বৃষ্টি হয়েছিল, পাখি ডাকছে, সূর্য উঠেছে, আমরা খেলছি।

ভাব প্রকাশের দিক থেকে ক্রিয়া দুই প্রকার:

ক) সমাপিকা ক্রিয়া

যে ক্রিয়া দ্বারা বাক্যের ভাব সম্পূর্ণ হয়, তাকে সমাপিকা ক্রিয়া বলে। যেমন: সে পড়ছে। এখানে ‘পড়ছে’ ক্রিয়া পদটি দ্বারা বাক্যের ভাব সম্পূর্ণ হয়েছে। তাই এটি সমাপিকা ক্রিয়া।

খ) অসমাপিকা ক্রিয়া

যে ক্রিয়া দ্বারা বাক্যের ভাব সম্পূর্ণ হয় না, তাকে অসমাপিকা ক্রিয়া বলে। যেমন: সে পড়লে ভালো করবে। এখানে ‘পড়লে’ ক্রিয়া পদটি দ্বারা বাক্যের ভাব সম্পূর্ণ হয়নি, তাই এটি অসমাপিকা ক্রিয়া।

আরও পড়ুন

৫। ক্রিয়া–বিশেষণ

যেসব শব্দ ক্রিয়ার অবস্থা, মাত্রা, প্রকৃতি ইত্যাদি নির্দেশ করে, সেসব শব্দকে ক্রিয়া–বিশেষণ বলে। যেমন ছেলেটি দ্রুত দৌড়ায়, লোকটি আস্তে কথা বলে, শান্ত সকালে গান করে, মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে, আগামীকাল স্কুলে যাব।

৬। অনুসর্গ

যেসব শব্দ কোনো শব্দের পরে বসে শব্দটিকে বাক্যের অর্থ প্রকাশে সাহায্য করে, সেসব শব্দকে অনুসর্গ বলে। যেমন: দুঃখ বিনা সুখ লাভ হয় না, সুমনের কাছে বইটি আছে, তুমি ছাড়া কথাটি কেউ জানে না।

৭। যোজক

যেসব শব্দ একাধিক শব্দ বা বাক্যের অংশকে যুক্ত করে, সেগুলোকে যোজক বলে। যেমন: আমি ঢাকা যাব এবং তোমার সাথে দেখা করব, শরীর ভালো হলে এসো নতুবা বিশ্রাম নাও, সুমনকে আসতে বললাম কিন্তু এল না।

৮। আবেগ

যেসব শব্দ দিয়ে মনের বিশেষ ভাব প্রকাশ করা হয়, সেগুলোকে আবেগ শব্দ বলে। যেমন: বাহ্​! চমৎকার লিখেছ। উফ্​! আর পারি না। আরে! তুমি দেখে বসে আছ। ওহে! কোথায় যাও? ধুর পাগল! এমন কথা কীভাবে বলি?

জাহেদ হোসেন, সিনিয়র শিক্ষক, বিয়াম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা

[পরবর্তী দিনের লেখা]

আরও পড়ুন