প্রশ্ন :
আমরা কবে স্বাধীনতা দিবস পালন করে থাকি? কতবার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে এই দিবস শুরু করা হয়। আমরা কীভাবে আমাদের স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন করি?
উত্তর: আমরা ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস পালন করে থাকি। এ দিনটি আমরা জাতীয়ভাবে উদ্যাপন করে থাকি।
এই দিনের শুরু হয় ভোরে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে। এরপর জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দেওয়া শুরু হয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবী সংগঠন জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশু-কিশোরদের সমাবেশ হয়। জাতীয়ভাবে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরা তাদের নিজস্ব ইউনিফর্ম পরিধান করে কুচকাওয়াজ ও শারীরিক কসরত প্রদর্শনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে সালাম জানায়। প্রধানমন্ত্রী তাদের সালাম গ্রহণ করেন।
এদিকে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতা বাণী প্রদান করে থাকেন। রেডিও-টেলিভিশন বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করে। বিভিন্ন স্থানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা ও দোয়ার আয়োজন করে যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে আমরা দিবসটি উদ্যাপন করি।
প্রশ্ন :
মুক্তিযুদ্ধে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের অবদান সম্পর্কে লেখো।
উত্তর: আমাদের মুক্তিযুদ্ধে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের যথেষ্ট অবদান রয়েছে। এ যুদ্ধে দলমত-নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। ক্ষুদ্র নৃ–গোষ্ঠীর মানুষও এ যুদ্ধে অবদান রাখেন। নারীরা মুক্তিযোদ্ধাদের খাবার, আশ্রয় এবং তথ্য দিয়ে সাহায্য করেন। অনেক নারী প্রশিক্ষণ নিয়ে যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। সংস্কৃতিকর্মীরা তাঁদের কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রাণিত করেন। এ ছাড়া প্রবাসী বাঙালিরা ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করেন।
প্রশ্ন :
ভারত শরণার্থীদের কীভাবে সাহায্য করেছিল? মুক্তিযুদ্ধে ভারত আমাদের কীভাবে সাহায্য করেছিল?
উত্তর: মুক্তিযুদ্ধে ভারত আমাদের বিভিন্নভাবে সাহায্য করেছিল। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে এ দেশ থেকে বহু মানুষ শরণার্থী হিসেবে ভারতে আশ্রয় নেয়। ভারত সরকার আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশিদের খাবার, থাকা, বস্ত্র ও চিকিত্সাসেবা দিয়ে সাহায্য করেন।
মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতার জন্য ভারত মিত্রবাহিনী গঠন করে। ‘অপারেশন জ্যাকপট’ নামক আক্রমণে মিত্রবাহিনী বাংলাদেশের পক্ষে যুদ্ধ করে। লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার নেতৃত্বে মিত্রবাহিনী ১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে মিলে যৌথবাহিনী গঠন করেন।
১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর হঠাৎ পাকিস্তান বিমানবাহিনী ভারতের কয়েকটি বিমানঘাঁটিতে বোমা হামলা চালায়। এর ফলে যৌথবাহিনী একযোগে স্থল, নৌ ও আকাশপথে আক্রমণ করে। যৌথবাহিনীর তীব্র আক্রমণে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়।
এর ফলে আমরা মাত্র ৯ মাসের যুদ্ধে বিজয় অর্জন করি। মুক্তিযুদ্ধে ভারত আমাদের নানাভাবে সাহায্য করেছিল।
রাবেয়া সুলতানা, শিক্ষক, বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুল, ঢাকা