ফেসবুকের বন্ধুতালিকায় ফিরছে অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়া সরকারের প্রস্তাবিত আইনের প্রতিবাদে দেশটিতে ফেসবুকের নিউজফিড থেকে সব ধরনের সংবাদ সরিয়ে ফেলার পাশাপাশি নতুন করে শেয়ার করার সুযোগ বন্ধ রেখেছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। এরপর সেখানে সংবাদমাধ্যমের ফেসবুক পেজগুলো খালি হয়ে যায়। তবে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন এবার বলছেন, কঠোর অবস্থান থেকে সরে ফেসবুক এখন আলোচনার টেবিলে আসছে। মরিসনের দাবির প্রতিফলন ফেসবুকে অবশ্য এখনো দেখা যায়নি।
অস্ট্রেলিয়া সরকারের প্রস্তাবিত আইনের মূল বিষয় হলো, গুগল ও ফেসবুকের মতো প্ল্যাটফর্মে সংবাদ শেয়ার করার জন্য গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তি থাকতে হবে। মূলত ডিজিটাল যুগে গণমাধ্যমের আয় কমে যাওয়ায় এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে দেশটি।
গত সোমবার থেকে দেশজুড়ে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম শুরু করে অস্ট্রেলিয়া। ঠিক এর আগে সংবাদমাধ্যমগুলোর ফেসবুক পেজ বন্ধ করতে গিয়ে ভুলক্রমে কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং স্বাস্থ্যসেবাদাতাদের পেজ বন্ধ করে দেয় ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। এরপর ফেসবুকের এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী সাইমন মিলনারকে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়। আজ শনিবার মরিসন বলেছেন, তিনি মিলনারের ক্ষমা প্রার্থনাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে যোগ করেছেন, জনগণের তথ্যপ্রাপ্তির উৎস বন্ধে ফেসবুকের অবস্থান অমার্জনীয়।
মরিসন যোগ করেছেন, ভারত, কানাডা ও যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রপ্রধানেরা অস্ট্রেলিয়ার প্রস্তাবিত আইনে ফেসবুকের প্রতিক্রিয়া নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।
এদিকে কানাডার ঐতিহ্যমন্ত্রী স্টিভেন গিলবো গত বৃহস্পতিবার বলেছেন, তাঁর দেশ আসন্ন মাসগুলোতে অস্ট্রেলিয়ার পথ অনুসরণ করবে।
মরিসনের সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার বিরোধী দলের নেতা অ্যান্থনি আলবানিজ। তিনি বলেছেন, সাংবাদিকতা টিকিয়ে রাখতে হলে গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোকে অর্থ পরিশোধের ব্যাপারটা মেনে নিতে হবে ফেসবুককে। সংবাদের ওপর ফেসবুকের নিষেধাজ্ঞা বরং প্রতিষ্ঠানটির সুনাম ক্ষুণ্ন করবে বলেও জানান তিনি।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের পক্ষ থেকে আজ শনিবার বলা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ফেসবুকের মতবিরোধ তাদের দুই পক্ষের ব্যক্তিগত ব্যাপার বলে মনে করছে তারা।
গুগল শুরুতে অস্ট্রেলিয়ার প্রস্তাবিত আইনের প্রতিবাদে দেশটি থেকে ব্যবসা গুটিয়ে চলে যাওয়ার কথা বললেও বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এরই মধ্যে বৈশ্বিকভাবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ায় ফেসবুকে সংবাদ শেয়ার করার সুযোগ বন্ধ করে দিলে অস্ট্রেলীয় সংবাদ পোর্টালগুলোতে আগের চেয়ে ১৩ শতাংশ কম মানুষ প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান চার্টবিট।