২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

আয়ারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদনের পদ্ধতি, খরচ, বৃত্তিসহ সুযোগ-সুবিধা কেমন

কাঙ্ক্ষিত ক্যারিয়ারের পাশাপাশি উন্নত জীবনধারণের কারণে ইউরোপের আয়ারল্যান্ডের প্রতি শিক্ষার্থীদের একটা আকর্ষণ আছে। বৈচিত্র্যপূর্ণ কোর্সে বিশ্বমানের পাঠদানের অভিজ্ঞতা নিতে দেশটি স্বাগত জানায় হাজারো বিদেশি শিক্ষার্থীকে। চলুন, আয়ারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদনপ্রক্রিয়া, পড়াশোনা ও জীবনধারণের আর্থিক ব্যবস্থাপনার নিয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

আয়ারল্যান্ড কেন উচ্চশিক্ষার অন্যতম গন্তব্য

ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই সদস্য রাষ্ট্রের ক্রাইম ইনডেক্স ৪৬ দশমিক ৮। অন্যদিকে ১ দশমিক ৩০৩ গ্লোবাল পিস ইনডেক্স নিয়ে শীর্ষ শান্তিপূর্ণ দেশগুলোর তালিকায় দেশটি দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।

এসব সূচকের পাশাপাশি ওয়ার্ল্ড কিউএস র‍্যাঙ্কিংয়েও আছে দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। তার মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে ট্রিনিটি কলেজ ডাবলিন, যার র‍্যাংক ৮১। ইউনিভার্সিটি কলেজ ডাবলিন রয়েছে ১৭১-এ, গালওয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ২৮৯-এ ও ইউনিভার্সিটি কলেজ কর্ক-এর অবস্থান ২৯২-এ। স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান লিমেরিক বিশ্ববিদ্যালয় ও ডাবলিন সিটি ইউনিভার্সিটি রয়েছে যথাক্রমে ৪২৬ ও ৪৩৬-এ।

আইরিশ শিক্ষার প্রসিদ্ধির কারণে এটি অভাবনীয় সাড়া ফেলেছে বৈশ্বিক কর্মক্ষেত্রে। অনেক বহুজাতিক কোম্পানি আয়ারল্যান্ডে তাদের ইউরোপীয় সদর দপ্তর স্থাপনের মাধ্যমে উদ্ভাবন ও উদ্যোগের পরিবেশ গড়ে তুলেছে। এর ফলে শিক্ষার্থীরা ইন্টার্নশিপ, কো-অপারেশন প্রোগ্রাম ও নেটওয়ার্কিং ইভেন্টগুলোর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোয় কাজের সুযোগ পেতে পারেন।

ফাইল ছবি

সবচেয়ে সুবিধাজনক বিষয়টি হচ্ছে দেশটির ইংরেজি ভাষাভাষী যোগাযোগব্যবস্থা। শুধু এই একটি ভাষায় দক্ষতা নিয়েই আয়ারল্যান্ডে পড়াশোনা, বৃত্তি ও চাকরির সুবিধা পাওয়া যায়। এই সুবিধার প্রভাব শ্রেণিকক্ষের বাইরেও বিস্তৃত। যেমন আবাসনের ক্ষেত্রে আইরিশ পরিবারগুলোর সঙ্গে শেয়ার করে থাকলে ভাড়া অনেকটাই বাঁচানো যায়। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক ভাষা হওয়ায় ইংরেজিকে পুঁজি করে আয়ারল্যান্ড থেকেই বৈশ্বিক নেটওয়ার্কগুলোয় প্রবেশাধিকার লাভ করা যায়। এতে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি ভ্রমণের সুযোগও সৃষ্টি হয়, যা ক্যারিয়ারকে সমৃদ্ধ করার এক অভাবনীয় প্রয়াস।

আয়ারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষায় যে যোগ্যতা দরকার

  • আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামগুলোর জন্য উচ্চমাধ্যমিক সনদ পরীক্ষায় সাধারণত কমপক্ষে ৭৫ শতাংশ নম্বর থাকা প্রয়োজন। স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের ক্ষেত্রে সাধারণ শর্ত হচ্ছে, একই বিষয়ে ন্যূনতম ৬০ শতাংশ বা তার বেশি স্কোরের স্নাতক ডিগ্রি। মাস্টার্স ও পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্যও একই বা প্রাসঙ্গিক বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি প্রয়োজন। পিএইচডির জন্য প্রকাশনা ও এমবিএর ক্ষেত্রে পেশাগত অভিজ্ঞতা দেখাতে হবে।

  • ইংরেজি ভাষায় দক্ষতার জন্য আইইএলটিএস, টোয়েফেল বা পিটিইয়ের মতো ভাষা যাচাই পরীক্ষার স্কোরগুলো দেখা হয়।

সেরা কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ও চাহিদাসম্পন্ন কোর্স

আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য আয়ারল্যান্ডের প্রথম সারির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো হলো—

  • আমেরিকান কলেজ ডাবলিন

  • ইউনিভার্সিটি কলেজ ডাবলিন

  • ট্রিনিটি কলেজ ডাবলিন

  • ডাবলিন সিটি ইউনিভার্সিটি

  • লিমেরিক বিশ্ববিদ্যালয়

  • ইউনিভার্সিটি কলেজ কর্ক

  • মায়নুথ বিশ্ববিদ্যালয়

  • কুইন্স ইউনিভার্সিটি বেলফাস্ট

  • আয়ারল্যান্ডের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, গালওয়ে

  • গালওয়ে বিশ্ববিদ্যালয়

  • ইউনিভার্সিটি কলেজ ডাবলিন আয়ারল্যান্ড

  • ইউনিভার্সিটি কলেজ ডাবলিন

এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোর্সের মধ্যে রয়েছে

  • বিজনেস অ্যানালিটিকস

  • ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স

  • ডেটা সায়েন্স

  • মেডিসিন সায়েন্স

  • বিজনেস ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন

  • কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি

  • মেডিসিন অ্যান্ড হেলথ সায়েন্স

  • হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট

আরও পড়ুন

আবেদনের উপায়—

আইরিশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্নাতকে ভর্তি কার্যক্রম সাধারণত সেপ্টেম্বরে শুরু হয়। কিছু বিশ্ববিদ্যালয় জানুয়ারি সেশনের জন্যও ভর্তি নিয়ে থাকে। স্নাতকোত্তর ডিগ্রির ভর্তির কার্যক্রম আগস্টের শেষে বা সেপ্টেম্বরে শুরু হয়ে মে মাসে শেষ হয়।

আবেদনের জন্য প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে নিজস্ব ওয়েবসাইট, যেখানে অ্যাকাউন্ট খোলার মাধ্যমে ভর্তিপ্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া যায়। অনলাইন আবেদনের সময় পোর্টালে আপলোড করার জন্য যাবতীয় নথির স্ক্যান কপি তৈরি রাখতে হয়। প্রতিটি শিক্ষার্থীর নিজস্ব অ্যাকাউন্টে আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানানো হয়।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের চেকলিস্ট—

  • সম্পূর্ণ পূরণ করা আবেদন ফরম

  • পূর্বের সব একাডেমিক ডকুমেন্টস ও মার্কশিট

  • পাসপোর্ট সাইজের ছবি

  • পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি

  • আইইএলটিএসের সার্টিফিকেট

  • আবেদন ফি পরিশোধের রশিদ

  • লেটার অব রিকমেন্ডেশন

    স্নাতকোত্তরের ক্ষেত্রে—

  • প্রকাশনা

  • ব্যক্তিগত প্রবন্ধ বা লেখার নমুনা

  • রেফারেন্স লেটার

  • এর বাইরে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে নির্দিষ্ট প্রোগ্রামের ওপর নির্ভর করে আরও নথির প্রয়োজন হতে পারে।

আরও পড়ুন

আবেদন ফি ও ভর্তির স্বীকৃতিপত্র

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন ফি বিভিন্ন ধরনের। সাধারণত ৪৫ থেকে ৯০ ইউরো পর্যন্ত হয়ে থাকে ফি। আবেদনসহ সব কাগজপত্র যাচাই করে শিক্ষার্থীকে ভর্তির অফার লেটার পাঠানো হয়, যা পরবর্তী সময়ে ভিসার জন্য কাজে লাগে।

আয়ারল্যান্ডের স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদনপদ্ধতি

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আয়ারল্যান্ডে পড়তে যাওয়ার জন্য যে ভিসার আবেদন করতে হয়, সেটি হচ্ছে দীর্ঘকালীন ভিসা টাইপ ডি। এ ভিসায় দেশটিতে ৯০ দিনের বেশি থাকার অনুমতি মেলে। ভিসার অনলাইন আবেদনের যেতে হবে লিংকে। এ পোর্টালে আবেদনপ্রক্রিয়া চলাকালে প্রার্থীর যাবতীয় তথ্য ৩০ দিনের জন্য সংরক্ষিত থাকে। আবেদন সফলভাবে শেষ করে ফরমটি প্রিন্ট ও স্বাক্ষর করে প্রয়োজনীয় নথিগুলোর সঙ্গে দূতাবাসে জমা দিতে হবে।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

  • ২টি পাসপোর্ট সাইজের ছবি

  • আয়ারল্যান্ডে পৌঁছানোর তারিখের পর থেকে কমপক্ষে ১২ মাসের মেয়াদ থাকা পাসপোর্ট

  • আগের পাসপোর্ট (যদি থাকে)

  • স্টেটমেন্ট অব পারপাস (এসওপি)

  • আইরিশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া ভর্তির অফার লেটার

  • টিউশন ফি প্রদানের প্রমাণ (৬ হাজার ইউরো)। অভিবাসনের সময় টিউশন ফির ন্যূনতম পরিমাণটি দেখাতে হয়। তবে কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সম্পূর্ণ ফি দিতে হতে পারে।

  • পূর্ববর্তী শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র

  • ইংরেজি ভাষাদক্ষতার সনদ

  • চাকরির অভিজ্ঞতার প্রমাণ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)

  • ব্যক্তিগত তহবিল: কমপক্ষে ১০ হাজার ইউরোর ব্যক্তিগত ব্যাংক স্টেটমেন্ট

  • অন্য কেউ স্পনসর করলে তাঁর বা তাঁদের সই করা চিঠি ও জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি

  • সম্পূর্ণ পূরণ করা ফাইন্যান্সিয়াল সামারি ফর্ম (https://www.irishimmigration.ie/wp-content/uploads/2023/05/IRL-study-visa-financial-summary.docx)

  • ব্যক্তিগত চিকিৎসা বিমা: দুর্ঘটনা ও রোগ-ব্যাধির ক্ষেত্রে চিকিৎসার জন্য সর্বনিম্ন ২৫ হাজার ইউরো করে

  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ

  • সব নথি অবশ্যই আসল হতে হবে। কোনো নথি যদি বাংলা ভাষায় থাকে, তাহলে সেটিকে অবশ্যই ইংরেজিতে পূর্ণ অনুবাদ করে সরবরাহ করতে হবে।

আরও পড়ুন

অ্যাপয়েন্টমেন্ট ও আবেদনপত্র জমা—

আবেদনপত্র জমা দেওয়ার জন্য আগে ভিসা আবেদন কেন্দ্রের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে। অ্যাপয়েন্টমেন্টের তারিখসহ একটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিশ্চিতকরণ ই-মেইল দেওয়া হবে। সে তারিখ অনুযায়ী দূতাবাসে উপস্থিত হয়ে আঙুলের ছাপ, ছবি তোলাসহ বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান সম্পন্ন করতে হবে।

দূতাবাসের ঠিকানা: সি-১৭, মালচা মার্গ, চাণক্যপুরি, নিউ দিল্লি, দিল্লি-১১০০২১, ভারত
প্রত্যেক আবেদনকারীর জন্য ভিসা ফ্যাসিলিটেশন সার্ভিস চার্জ ৩ হাজার ৫১৮ রুপি। ভিসা ফি সিঙ্গেল ন্ট্রির জন্য ৫ হাজার ৩০০ রুপি এবং মাল্টিপল এন্ট্রির ক্ষেত্রে ৯ হাজার রুপি।

ভিসা প্রক্রিয়াকরণের সময়

স্টাডি ভিসা হাতে পেতে সময় লাগে ৩০ কার্যদিবস থেকে ২ ক্যালেন্ডার মাস। তবে অনাকাঙ্ক্ষিত কারণে আরও সময় লাগতে পারে। তাই অপ্রত্যাশিত বিলম্ব এড়াতে ভ্রমণের তারিখের ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ আগে আবেদন করা উচিত। ভিসা চূড়ান্ত হলে তা প্রয়োজনীয় নথির আসল কপিগুলোসহ কুরিয়ারের মাধ্যমে ফেরত দেওয়া হয়।

পড়াশোনা ও জীবনযাত্রার খরচ

ইউরোপের দেশটির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো মূলত তিন ধরনের। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (আইওটি)। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় অধ্যয়ন ফির পরিমাণ ১৪ থেকে ২১ হাজার ইউরো। প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলোয় খরচ হতে পারে ১২ থেকে ১৪ হাজার ইউরো। আইওটিতে পড়ার ক্ষেত্রে বাজেট রাখতে হবে ১০ থেকে সাড়ে ১২ হাজার ইউরো। এখানে স্নাতকের জন্য ব্যয় হতে পারে বার্ষিক ৯ হাজার ৮৫০ থেকে ২৫ হাজার ৫০০ ইউরো। স্নাতকোত্তর ও ডক্টরাল ডিগ্রির জন্য বার্ষিক খরচ ৯ হাজার ৫০০ থেকে ৩৪ হাজার ৫০০ ইউরো।

এগুলোর মধ্যে অধ্যয়নের সবচেয়ে ব্যয়বহুল বিষয় হচ্ছে মেডিসিন অ্যান্ড হেলথ সায়েন্স।

জীবনযাত্রা বাবদ আয়ারল্যান্ডের অধিকাংশ শহরে প্রতি মাসে গড়ে ৫৫০ থেকে ১ হাজার ইউরো পর্যন্ত বাজেট রাখতে হয়। ডাবলিন ও ক্যাটের মতো বড় শহরগুলোয় থাকার জন্য সম্ভাব্য মাসিক বাজেট ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ ইউরো। কর্কে প্রতি মাসে খরচ হতে পারে ৮৬০ থেকে ১ হাজার ৪০০ ইউরো। অন্যদিকে গালওয়ের মতো ছোট শহরগুলোয় জীবনযাত্রার গড় খরচ প্রতি মাসে ৮০০ থেকে ১ হাজার ১০০ ইউরো।

আয়ারল্যান্ডের সেরা কয়েকটি স্কলারশিপ

অধ্যয়ন ও জীবনযাত্রার ব্যয়ভার সামলাতে আয়ারল্যান্ডে রয়েছে পর্যাপ্ত স্কলারশিপের ব্যবস্থা। তার মধ্যে আইরিশ গভর্নমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন স্কলারশিপ ব্যাচেলর, মাস্টার্স বা পিএইচডি প্রতি স্তরে ১০ হাজার ইউরো পর্যন্ত খরচ বহন করে। হায়ার স্টাডিজ অথরিটি ইন্টারন্যাশনাল স্কলারশিপ টিউশন ফির পাশাপাশি ১০ হাজার ইউরো করে উপবৃত্তি দিয়ে থাকে।

জনপ্রিয় স্পনসর ইরাসমাস মুন্ডাস মাস্টার্সের জন্য সম্পূর্ণ টিউশন ও মাসিক ভাতা প্রদান করে। গো ওভারসিজ ফুল টিউশন স্কলারশিপেও পুরো টিউশন ফির কভারেজ পাওয়া যায়। এন্টারপ্রাইজ আয়ারল্যান্ডস এডুকেশন আয়ারল্যান্ড স্কলারশিপের পরিমাণ তিন থেকে পাঁচ হাজার ইউরো।
বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত স্পনসরশিপের মধ্যে রয়েছে—

  • ইউনিভার্সিটি কলেজ ডাবলিনের গ্লোবাল এক্সিলেন্স স্কলারশিপ: সর্বোচ্চ ১০ হাজার ইউরো

  • লিমেরিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন স্কলারশিপ: ৩ হাজার ইউরো

  • ডাবলিন সিটি ইউনিভার্সিটির ইন্টারন্যাশনাল স্কলারশিপ: ২ থেকে ৭ হাজার ইউরো

  • গালওয়ের আয়ারল্যান্ডস ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট স্কলারশিপ: সর্বোচ্চ ৫ হাজার ইউরো

  • মায়নুথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার্স স্কলারশিপ: ২ হাজার ইউরো

  • ডাবলিন ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির সেন্টিনারি স্কলারশিপ প্রোগ্রাম: ১০ হাজার ইউরো

আয়ারল্যান্ডে অধ্যয়নে আর্থিক ব্যবস্থাপনা

পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করতে হলে ওয়ার্ক পারমিটের প্রয়োজন হবে। সাধারণত ইমিগ্রেশন স্ট্যাম্প-২ অধিকারী ছাত্রছাত্রীদের এই পারমিটের আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত এই ইমিগ্রেশন স্ট্যাম্প-২ নথি বৈধ থাকে, ততক্ষণ বৈধ থাকে ওয়ার্ক পারমিট। এর জন্য শিক্ষার্থীদের একটি ব্যক্তিগত পাবলিক সার্ভিস নম্বর (পিপিএস নম্বর) পেতে হয়। আর এই নম্বর পাওয়া যায় কোনো একটি কাজে নিয়োগ পাওয়ার মাধ্যমে। একজন নিয়োগকর্তা শুধু একটি পিপিএস নম্বর সরবরাহ করতে পারেন।

এই পারমিটে প্রতি সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়। তবে শীত ও গ্রীষ্মের ছুটিতে ফুলটাইম কাজ করার সুযোগ পাওয়া যায়। আয়ারল্যান্ডের খণ্ডকালীন চাকরিগুলোর সর্বনিম্ন বেতন প্রতি মাসে ৭৩৩ ইউরো বা প্রায় ৯৩ হাজার ১৯০ টাকা।

আরও পড়ুন

পড়াশোনা শেষে চাকরির উপায় ও স্থায়ী হওয়ার সুযোগ

  • ডিগ্রি লাভের পর আয়ারল্যান্ডে ফুলটাইম চাকরি পাওয়ার জন্যও প্রয়োজন হবে ওয়ার্ক পারমিটের

  • আয়ারল্যান্ডে ফ্রেশ গ্র্যাজুয়েটদের ওয়ার্ক পারমিটের নেওয়ার মূলত দুটি উপায় থাকে। জেনারেল এমপ্লয়মেন্ট পারমিট ও ক্রিটিক্যাল স্কিলম এমপ্লয়মেন্ট পারমিট।

  • দুটি পারমিটেই প্রাথমিকভাবে সর্বোচ্চ দুই বছর কাজ করার অনুমতি মেলে। উভয় ক্ষেত্রেই প্রক্রিয়াকরণের জন্য সময় লাগে ২৮ দিন এবং অনুমতি লাভের পর প্রতি সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টা কাজ করা যায়।

  • তবে প্রথম পারমিটটি অতিরিক্ত তিন বছরের জন্য নবায়নযোগ্য থাকে। এরপর আর নবায়ন করা যায় না। কিন্তু ক্রিটিক্যাল স্কিলস এমপ্লয়মেন্টে দুই বছর অন্তর নবায়নের সুযোগ রয়েছে।

এসব পারমিটের যেকোনোটির জন্য কাজের প্রথম দিনের অন্তত ১২ সপ্তাহ বা ৩ মাস আগে থেকে আবেদন করা যেতে পারে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য সদস্যরাষ্ট্রের তুলনায় আয়ারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষার খরচ কিছুটা বেশি।

এমতাবস্থায় স্কলারশিপ ও খণ্ডকালীন চাকরির সুযোগগুলো মেধাবী শিক্ষার্থীদের অধ্যয়নকে সহজতর করে তোলে। ইংরেজি ভাষাপ্রধান দেশ হওয়ায় চাকরির ক্ষেত্রে ভিন্ন কোনো ভাষা শেখার বিড়ম্বনা নেই। এ ছাড়া উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বহুজাতিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কারণে পর্যাপ্ততা রয়েছে কর্মসংস্থানে। তাই সর্বসাকুল্যে উন্নত ক্যারিয়ার গঠনের জন্য একটি উৎকৃষ্ট সিদ্ধান্ত হতে পারে আয়ারল্যান্ডে পড়তে যাওয়া।

আরও পড়ুন