নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে যা করতে হবে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে সংশ্লিষ্টদের করণীয় বিষয়ক একগুচ্ছ নির্দেশনা পাঠিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। এতে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শ্রেণিশিক্ষক, প্রতিষ্ঠানপ্রধান, উপজেলা বা থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও আঞ্চলিক পর্যায়ের কর্মকর্তাদের করণীয় কী হবে, সেসব বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার মাউশির ওয়েবসাইটেও এই নির্দেশনাপত্রটি প্রকাশ করা হয়েছে। গত জানুয়ারি থেকে প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম শুরু হয়েছে। আগামী বছর দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে তা শুরু হবে। এরপর ২০২৫ সালে চতুর্থ, পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে চালু হবে। উচ্চমাধ্যমিকে একাদশ শ্রেণিতে ২০২৬ সালে এবং দ্বাদশ শ্রেণিতে ২০২৭ সালে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে।
নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের বড় অংশ হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিকভাবে (শিখনকালীন)। তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পুরোটাই মূল্যায়ন হবে সারা বছর ধরে চলা বিভিন্ন ধরনের শিখন কার্যক্রমের ভিত্তিতে। চতুর্থ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঁচটি বিষয়ে কিছু অংশের মূল্যায়ন হবে শিখনকালীন। বাকি অংশের মূল্যায়ন হবে সামষ্টিকভাবে, মানে পরীক্ষার ভিত্তিতে।
নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরুর পাঁচ মাস পর বিস্তারিত করণীয় উল্লেখ করে এই নির্দেশনাপত্র দিল মাউশি। নির্দেশনাপত্রে শিক্ষার্থীদের ১২টি নির্দেশনা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নিয়মিত বিদ্যালয়ে যাওয়া, শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করা, সরকারের দেওয়া শিখনসামগ্রী যথাসময়ে সংগ্রহ করা ইত্যাদি। নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে অভিভাবকদের আট দফা নির্দেশনা মানতে বলা হয়েছে।
শ্রেণি শিক্ষকদের পালন করতে হবে ১২ দফা নির্দেশনা। এর মধ্যে রয়েছে গতানুগতিক শিক্ষককেন্দ্রিক পদ্ধতির বদলে শিক্ষার্থীদের সহায়তাকারীর ভূমিকা পালন করা, ‘হোম ভিজিট’ ও উঠান বৈঠক করা এবং বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করা।
অপরদিকে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) দেওয়া সময়সূচি বা গাইডলাইন অনুযায়ী প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকদের মাধ্যমে শ্রেণি কার্যক্রম নিশ্চিত করা করাসহ ১৪ ধরনের নির্দেশ মানতে হবে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের।
উপজেলা বা থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের পাঠ্যপুস্তক, শিক্ষক সহায়িকা ও শিক্ষা উপকরণ যথাসময়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা নেওয়া, শিক্ষকেরা পাঠ-সংশ্লিষ্ট উপকরণ ও এনসিটিবির দেওয়া সময়সূচি বা গাইড লাইন অনুযায়ী শিখন কার্যক্রম পরিচালনা করছেন কি না, তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা এবং প্রয়োজনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনার কাজ করতে হবে।
গাইড বা নোট বই ও কোচিং বিষয়ে নীতিমালা-বহির্ভূত কার্যক্রম বন্ধের জন্য উপজেলা বা থানা পর্যায়ে মাসিক সমন্বয় সভায় উপস্থাপনের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে হবে উপজেলা বা থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের। এভাবে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও আঞ্চলিক পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কী কী করতে হবে, তা বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে মাউশির নির্দেশনাপত্রে।