হল খুলে পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে ঢাবি উপাচার্যকে ছাত্রদলের স্মারকলিপি

আবাসিক হল বন্ধ রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্তকে ‘চরম হঠকারী, অবিবেচনাপ্রসূত ও একপক্ষীয়’ বলে আখ্যা দিয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। পরীক্ষা নেওয়ার আগে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আবাসিক হল খুলে দেওয়ার দাবিতে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিয়েছে।

আজ বুধবার দুপুরে উপাচার্য কার্যালয়ে গিয়ে ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পক্ষ থেকে উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানের হাতে স্মারকলিপি তুলে দেওয়া হয়।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ফজলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম ও সদস্যসচিব আমানউল্লাহ আমান এই স্মারকলিপি উপাচার্যের হাতে তুলে দেন।

স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, সেশনজট মোকাবিলা ও ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষার কথা বিবেচনা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলে ২৬ ডিসেম্বর থেকে স্নাতক শেষ বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের পরীক্ষাগুলো নেওয়ার সিদ্ধান্তকে ছাত্রদল সাধুবাদ জানায়। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী এবং ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল সব ছাত্রসংগঠনের মতামত ও অনুরোধ উপেক্ষা করে, পরীক্ষার্থীদের আবাসনের কোনো ব্যবস্থা না করে, আবাসিক হলগুলো বন্ধ রেখে পরীক্ষা নেওয়ার এই সিদ্ধান্তকে চরম হঠকারী, অবিবেচনাপ্রসূত ও একপক্ষীয় বলে মনে করে ছাত্রদল।

স্মারকলিপিতে ছাত্রদল আরও বলেছে, জুন থেকে করোনার প্রকোপ কিছুটা কমার পর দেশের সব হাটবাজার, অফিস-আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সবকিছু খুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান দিনের পর দিন বন্ধ করে রাখা হয়েছে। ছাত্রদল দীর্ঘদিন ধরেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্যাম্পাস খুলে দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আসছে।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে সহমত পোষণ করে প্রশাসনের প্রতি ছাত্রদল বিনীত অনুরোধ করছে, যাঁদের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর চূড়ান্ত পরীক্ষা আছে, নিদেনপক্ষে তাঁদের আবাসনের সুব্যবস্থা নিশ্চিত করা হোক। এ লক্ষ্যে জাতীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে হলগুলো খুলে দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছে ছাত্রদল।

ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্মারকলিপিতে স্নাতক শেষ বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের পরীক্ষার ব্যাপারে একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানানোয় উপাচার্য আমাদের প্রশংসা করেছেন। তবে হল খোলার দাবির ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে উপাচার্য আশঙ্কা জানিয়েছেন, হল খুললে নিয়ন্ত্রণ রাখা যাবে না। উপাচার্যের বক্তব্য হলো, পরীক্ষার্থীদের জন্য হল খোলা হলেও তার পাশাপাশি নানা সমস্যায় থাকা শিক্ষার্থীরা হলে উঠতে চাইবেন।’

ছাত্রদল ছাড়াও হল খোলার দাবিতে আজ উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিয়েছেন ‘সাধারণ শিক্ষার্থীরা’। স্মারকলিপি দেওয়ার আগে সকালে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে মানববন্ধন করেন তাঁরা। সেখানে বিভিন্ন বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা বক্তব্য দেন। এই কর্মসূচিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আনিসুর রহমান খন্দকার, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন।

হল খোলার দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘মহামারি পরিস্থিতিতে এ ধরনের বিষয়ে জাতীয় সিদ্ধান্ত লাগে। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’